আত্মবিশ্বাস বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে যেমন মুশকিল, তেমনই মনের জোর খোয়া গেলেও বিপদ। যে কোনও কাজ করতে গেলেই তখন ভয়, উদ্বেগ চেপে বসবে। নিজের প্রতি আস্থাও তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। আত্মপ্রত্যয় বাড়াতে গেলে দুইয়ের মধ্যে সমতা বজায় রাখতেই হবে। মনের জোর যে এক দিনেই বেড়ে যাবে, তা নয়। তবে যদি কিছু কৌশল মেনে চলেন, তা হলে নিজের প্রতি বিশ্বাস কখনওই টাল খাবে না।
কী কী সেই কৌশল?
ধরুন, চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন, অফিসের জরুরি মিটিং রয়েছে বা এমন কোনও কাজ আপনাকে করতে হবে যা আগে কখনও করেননি, তখন মনে ভয় বা উদ্বেগ চেপে বসলে সবচেয়ে আগে শরীরের ভঙ্গিমা ঠিক করুন। আপনার শরীরী ভাষাতেই ফুটে উঠবে আত্মবিশ্বাস। এমনটাই জানাচ্ছে মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর পরামর্শ, টানটান হয়ে বসুন অথবা সোজা হয়ে দাঁড়ান, চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। বুক যে দুরুদুরু করছে, তা প্রকাশ্যে আনলে চলবে না। মিনমিন করে নয়, দৃঢ় কণ্ঠে গুছিয়ে কথা বলতে হবে। দেখবেন, তা হলেই অনেকটা মনের জোর পাবেন।
আরও পড়ুন:
আত্মপ্রত্যাশা বাস্তবসম্মত হতে হবে। আপনি নিজেকে যে ভাবে মূল্যায়ন করছেন আর আপনার চারপাশের মানুষজন যে ভাবে আপনাকে দেখছে বা বিচার করছে, তা এক হবে না। দুইয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য হবে না ধরেই চলতে হবে। তাই প্রত্যাশা আকাশছোঁয়া রেখে এগোলে চলবে না। বরং যে কাজটা করছেন তা সঠিক ভাবে ও মনোযোগ দিয়ে করলেই নিজের প্রতি আস্থা বজায় থাকবে। এতে ব্যর্থ হলেও ভেঙে পড়বেন না।
সাফল্যের কথা ভাবতে হবে, চোখের সামনে দেখার চেষ্টাও করতে হবে— এটিও এক ধরনের কৌশল। এমনটাই জানালেন মনোবিদ। তাঁর কথায়, আপনি যে কাজ করছেন তাতে সফল হবেন বা লক্ষ্যপূরণের দিকে এগিয়ে যাবেন, এমন ভাবনা ভাবতে হবে। চোখের সামনে তেমন দৃশ্য দেখার চেষ্টাও করুন। এতে মস্তিষ্কও সে ভাবেই আপনার চিন্তাভাবনাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
নিজেকে সঠিক ভাবে উপস্থাপন করাও কিন্তু জরুরি। প্রতিটি জায়গার পরিবেশ-পরিসর, আদবকায়দা আলাদা। তাই সেই হিসেবে উপযুক্ত পোশাক না পরলে বিব্রত হতে পারেন। সব সময়েই যে খুব দামি পোশাক বা দামি প্রসাধনী ব্যবহার করতে হবে, তা নয়। কিন্তু পরিচ্ছন্ন থাকা ও রুচিশীল পোশাক পরলে আপনার নিজেরই খুব ভাল লাগবে। আপনাকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখাবে।
নিজের কাজ যখন সঠিক ভাবে হচ্ছে না, হতাশা আসছে, তখন চেষ্টা করুন অন্যকে সাহায্য করতে। সেবামূলক কোনও কাজ করুন, এতে নিজের প্রতি ইতিবাচক ভাবনা তৈরি হবে। নতুন কিছু শিখুন বা করার চেষ্টা করুন। নিজের জন্য রুটিন তৈরি করুন, সৃজনশীল কাজ করার চেষ্টা করুন। তা হলে পরিস্থিতি বিচারে নিত্যনতুন উপায়ে নিজের সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে চলার সাহস থাকবে মনে।