চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ জীবনযাপন করতে ধূমপানের অভ্যাস জীবন থেকে বাদ দেওয়া একান্তই জরুরি। ছবি: শাটারস্টক
ধূমপানের অভ্যাস সহজে ছাড়া যায় না। সেই কোন কাল থেকে ধূমপান করেন। এত বছর পেরিয়ে এসে আজও সেই অভ্যাস লালন-পালন করে যাচ্ছেন। পরিবার, বন্ধুবান্ধব, অফিসের সহকর্মী, এমনকি চিকিৎসকের বারণও ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে সুখটান দিয়ে চলেছেন। এ দিকে, ধূমপানের অভ্যাস শরীরের অন্দরে যতটুকু ক্ষতি করার, তা করে চলেছে। শ্বাসনালির প্রকৃতি খুবই নরম। শ্বাসনালির মধ্যে এমন অনেক কোষ থাকে, যেগুলি রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধশক্তি গড়ে তোলে। ঘন ঘন ধূমপান করার ফলে সেই কোষগুলি পুড়ে যায়। ফলে ওই স্থানের প্রদাহ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায় অনেকাংশে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে। অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে ক্যানসারের মতো মারণরোগ থাবা বসায় শরীরে, সে কথা কারও অজানা নয়। এ ছাড়াও হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়ার মতো সমস্যারও সৃষ্টি করে।
চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ জীবনযাপন করতে ধূমপানের অভ্যাস জীবন থেকে বাদ দেওয়া একান্তই জরুরি। তবে আজকে ধূমপান বন্ধ করে দিলে কাল থেকে সব ঠিক হয়ে যাবে না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ধূমপানের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের যোগাযোগ নিবিড়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা ধূমপান করেন, তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের হাল অধূমপায়ীদের তুলনায় খারাপ। আর যাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের হাল ভাল নয়, অর্থাৎ মানসিক চাপ, উদ্বেগে ভোগেন, তাঁরা চাইলেই সহজে ধূমপান ছেড়ে দিতে পারেন না। এই পরিস্থিতির অবনতি হতে হতে তাঁরা বাইপোলার ডিজ়অর্ডার, সিজোফ্রেনিয়া, অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিজ়অর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজ়অর্ডারের চিকিৎসকদের মতে, সুস্থ জীবনযাপন করতে ধূমপানের অভ্যাস জীবন থেকে বাদ দেওয়া একান্তই জরুরি।
১) চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি: এই থেরাপি ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে। প্যাচ, চুইংগাম, নাকের স্প্রে, ইনহেলার এবং লজেন্সের এর সাহায্য নিয়ে এই থেরাপি করা হয়। এই সবের ব্যবহারের ফলে তামাকজাত পদার্থ খাওয়ার ইচ্ছে কমে যায়। এই থেরাপি যথেষ্ট নিরাপদ। এটি শুধুমাত্র এক জনকে ধূমপান ছাড়তে সাহায্য করে না, বরং আসক্তি থেকে আসা বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগও কমায়।
জীবনধারায় বদল আনুন: ধূমপান ছাড়তে হলে সবার আগে জীবনধারায় বদল আনতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য যোগাসন ও শরীরচর্চায় মন দিতে হবে। ধূমপান ছাড়তে চাইলে ডায়েটে বেশি করে ফলমূল ও শাকসব্জি খেতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। বিশেষ করে যোগাসন, প্রাণায়ামের অনুশীলন বেশি করে করতে পারেন। নিয়মিত শরীরচর্চার অভ্যাস ধূমপান করা থেকে আপনাকে বিরত রাখবে।অনেকে অ্যালকোহল মিশ্রিত পানীয়, কোমল পানীয়, চা বা কফি খাওয়ার পরে যোগ্য সঙ্গত হিসাবে ধূমপান করে থাকেন। ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে চাইলে প্রথমে এই ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলুন।
ধৈর্য রাখুন: ধূমপানের অভ্যাস ছাড়তে চাইলে নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন। পরিবারের ও বন্ধুবান্ধবদের সাহায্য ছাড়া তা সম্ভব নয়। ধৈর্য হারালে চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy