দৈনন্দিন জীবনের কয়েকটি কাজে মাঝেমাঝেই বুক ধড়ফড় করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
মানব শরীরের প্রতিটি হৃদ্স্পন্দন অত্যন্ত ছন্দবদ্ধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে হৃদ্স্পন্দনের হার স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৭২ বার হয়। তবে হৃদ্স্পন্দনের হার ব্যক্তি ভেদে প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০-ও হতে পারে।স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হৃদ্স্পন্দনের হার একাধিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে। প্রতি মিনিটে ১০০ টির বেশি হৃদ্স্পন্দন হলে সেই অবস্থাকে ‘ট্যাকিকার্ডিয়া’ বলা হয়। প্রতি মিনিটে ৬০-এর কম হৃদ্স্পন্দন পড়লে তাকে ‘ব্রাডিকার্ডিয়া’ বলা হয়। প্রতিটি হৃদ্স্পন্দন একে অপরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর তা পড়ে। তবে কখনও খুব দ্রুত হারে হৃদ্স্পন্দন হতে থাকে। যা সকলে বুক ধড়ফড় বলে চেনেন। তবে সবসময়ে এটি ভীতিজনক নয়। মূলত দৈনন্দিন জীবনের কয়েকটি কাজে মাঝেমাঝেই বুক ধড়ফড় করতে পারে। বেশ অনেক ক্ষণ ধরে এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সুরক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। তবে তার আগে এই দ্রুত হৃদ্স্পন্দনের কারণগুলি জানা থাকলে হয়তো গোড়াতেই সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে।
১) মানসিক উদ্বেগ: দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়তে পারে। অনেকেই সেই চাপ সামলাতে পারেন না। দ্রুত হৃদ্স্পন্দনের হার উদ্বেগ ও মানসিক চাপের অন্যতম লক্ষণ। কোনও বিষয়ে প্রচন্ড উদ্বিগ্ন থাকলে বুক ধড়ফড় করতে পারে।
২) শরীরচর্চা করার পর: অনেক ক্ষণ ধরে ব্যায়াম বা জিম করার পর হৃদ্স্পন্দন দ্রুত প্রবাহিত হয়। শরীরচর্চার পর পেশিগুলি আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। সেই জন্য এমন হয়। ব্যায়াম করার পর বুক ধড়ফড় করা ভয়েক কিছু নেই। স্বাভাবিক কারণেই এমন হয়।
৩) ঋতুস্রাবের সময়: মাসের বেশ কয়েকটি দিন এমনিতেই অস্বস্তিতে কাটে মেয়েদের। ঋতুস্রাবের সময় হরমোনের মাত্রার পরিবর্তনের কারণে বৃদ্ধি পেতে পারে হৃদ্স্পন্দনের হার। অন্তঃসত্ত্বা বা ঋতুবন্ধের সময়েও অনেকের মাঝেমাঝেই বুক ধড়ফড় করে। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
৪) ধূমপান থেকে বিরত থাকলে: শরীর সুস্থ রাখতে ধূমপান থেকে বিরত থাকা জরুরি। তবে হঠাৎ করে সিগারেট ছাড়লে মাথা ব্যথা, অনিদ্রার মতো বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে বুক ধড়ফড়ও করে। তবে ধূমপান ছাড়ার ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যা চলে যায়।
৫) শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে: হঠাৎকরেই শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে বুক ধড়ফড় করতে পারে। সংক্রমণ জনিত কারণে হঠাৎ জ্বর এলে বাড়তে পারে হৃদ্স্পন্দন। শরীরের তাপমাত্রা যদি ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেন হাইটের উপরে ওঠে তাহলে এমন অনুভূতি হতে পারে।
দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন অভ্যাসের কারণে হৃদ্স্পন্দনের হার বাড়তে পারে। সব সময় এটি গুরুতর হয়ে ওঠে না। এই ধড়ফড় মাত্র কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী হয়। এবং একবারই ঘটে। তবে এটি সমস্যাজনক হয়ে উঠতে পারে যদি এর সঙ্গে কয়েকটি উপসর্গ দেখা দেয়।
১) বুকে ব্যথা
২) নিশ্বাস নিতে কষ্ট
৩) মাথা ঘোরা
৪) অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
বুক ধড়ফড়ানির সঙ্গে যদি এই সমস্যাগুলি দেখা দেয় তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy