অনিদ্রাকে জব্দ করুন সহজ উপায়। ছবি: ফ্রিপিক।
রাতে শুলেই হাজারো চিন্তা কিলবিল করে মাথায়। কাজের চাপ, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা। অতিরিক্ত উদ্বেগে ঘুম কমে যাওয়ার সমস্যা এখন ঘরে ঘরে।
দিনভর পরিশ্রমে শরীর পরিশ্রান্ত, কিন্তু ঘুম নেই দু’চোখে। যদিও বা হালকা তন্দ্রা এল কিছু ক্ষণের জন্য, পরমুহূর্তেই দেখবেন আপনার চোখের পাতা জোড়া ঝাঁপ খুলে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে। শত চেষ্টাতেও অবাধ্য চোখকে ঘুম পাড়ানো যাচ্ছে না।
কমবয়সিরা ঘুম ভেঙে গেলে মোবাইল-ল্যাপটপ খুলে বসে পড়েন। প্রৌঢ়-বৃদ্ধেরাও যে আজকাল সেই পন্থা অনুসরণ করছেন, সেটা বলাই বাহুল্য। মোবাইলের নীল আলোয় আরওই ঘুমের একেবারে দফারফা।
অনেকে আবার চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে ঘুমের ওষুধ ঘরে মজুত করে রাখেন। কিন্তু অনিদ্রা দূর করতে রোজ রোজ ওষুধ খেয়ে ফেলে শরীরের বারোটা বাজিয়ে দেন। তা হলে কী করণীয়? কী ভাবে শোয়া মাত্রই ঘুম আসবে?
ঘুমোব বললেই তো ঘুমোনো যায় না। একেই জীবনযাপনের ধরন বদলাচ্ছে, তার উপরে মানসিক চাপ, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা সবই চেপে বসছে মন ও মগজে। রাত বাড়লেই সিগারেটে সুখটান বা অ্যালকোহলে গলা ভেজানোর অভ্যাস তো রয়েছেই। এই সব কিছুকে বশে এনে ‘আয় ঘুম’ বললেই কিন্তু ঘুম আসবে না। তার জন্য মানতে হবে কিছু নিয়ম।
১. মনোবিদদের পরামর্শ, একটি ছোট্ট ব্যায়ামে ঘুম আসবে ঘুম তাড়াতাড়ি। হার্ভার্ডের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু ওয়েল এই উপায় বার করেছেন। একে বলা হয় ‘৪-৭-৮ ট্রিক’। এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের একটি বিশেষ ব্যায়াম। চার সেকেন্ড ধরে শ্বাস নিতে হবে, পরের সাত সেকেন্ড সেই শ্বাস ধরে রাখতে হবে এবং শেষ আট সেকেন্ড সেই ধরে রাখা শ্বাসই মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে বার করে দিতে হবে। এই গোটা প্রক্রিয়া করে যেতে হবে ৬০ সেকেন্ড ধরে। তা হলেই মনের চাপ অনেকটা কমে যাবে। মগজের স্নায়ুগুলিও বিশ্রাম পাবে। ঘুমও আসবে তাড়াতাড়ি।
২. ঘুমোনোর আগে মোটও চা, কফি বা ঠান্ডা পানীয়ে চুমুক দেবেন না। সিগারেট টেনে ঘুমোতে যাওয়াও খুব একটা ভাল অভ্যাস নয়। এতে ঘুমের ক্ষতি তো হয়ই,, শরীরেও তার ছাপ পড়ে।
৩. রাতের খাওয়া আর ঘুমের মধ্যে অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টার বিরতি থাকতে হবে। এই সময় হাঁটাহাঁটি করলে খাবার হজম হয় দ্রুত। পাকস্থলী শান্ত থাকে, অম্বলের বাড়বাড়ন্ত হয় না। ঘুমও আসে তাড়াতাড়ি।
৪. ঘুমোনোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল, ল্যাপটপ-সহ নিজের সব বৈদ্যুতিন গ্যাজেটকে দূরে সরিয়ে রাখুন। শুয়ে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করবেন না। এতে ঘুম তো আসবেই না, মোবাইলের আলোয় চোখেরও বারোটা বেজে যাবে।
৫. এক-আধ দিন ভাল ঘুম না-ই হতে পারে। সেটাই স্বাভাবিক। হয়তো অফিসে ঝামেলা হল, বাড়িতে মনোমালিন্য হল, পছন্দের ফুটবল ম্যাচ দেখতে গিয়ে রাত জাগতে হল বা অনুষ্ঠান বাড়িতে বেশি খেয়ে ফেললেন, তখন ঘুমের সমস্যা হতেই পারে। মনোবিদদের পরামর্শ, ঘুম কখন আসবে, তা না ভেবে বরং একটু মেডিটেশন বা ধ্যান করে নিন। কিছু ক্ষণ চোখ ও মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিলে অতিরিক্ত উদ্বেগ কমে যায়। আর রোজ যদি ঘড়ি ধরে একই সময়ে আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়ার অভ্যাস করতে পারেন, তা হলে আর ঘুমের ওষুধ খেতেই হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy