Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
A Guide to Viral Fevers

শহর জুড়ে জ্বরের দাপট, কী কী উপসর্গ দেখা দিচ্ছে? প্রতিরোধের উপায় বললেন চিকিৎসকেরা

ডেঙ্গি, ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি অ্যাডিনোভাইরাস, রেসপিরেটারি সিনসেশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি)-এর দাপট বেড়েছে। হালকা কোভিডের উপসর্গও দেখা দিচ্ছে, তবে তা অত মারাত্মক নয়।

Symptoms of viral fever and how to prevent it

জ্বরের সঙ্গেই সর্দি, শুকনো কাশিতে ভোগান্তি বাড়ছে। ছবি: ফ্রিপিক।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ১০:১০
Share: Save:

খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য ঘরে ঘরে ভাইরাল জ্বর। মরসুম বদলের সময়েই মূলত ভাইরাসের হানায় সর্দিকাশি আর জ্বরে ভোগান্তি বাড়ে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক আর দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতা যাঁদের, তাঁদের সমস্যাই বেশি। দিন কয়েক ওষুধ খেয়ে জ্বর কমলেও সপ্তাহখানেক ধরে হাত-পায়ের যন্ত্রণা, চোখের ভিতরে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছে অনেকের। শরীরও দুর্বল হয়ে পড়ছে।

এই বিষয়ে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বললেন, জ্বর ১০০-র আশপাশেই ঘোরাফেরা করছে। কারও ঘুরেফিরে জ্বর আসছে। আবার কারও তাপমাত্রা খুব একটা বাড়ছে না। কিন্তু সর্দি, নাক দিয়ে অনবরত জল পড়া, শুকনো কাশি ভোগাচ্ছে। চিকিৎসকের মতে, ডেঙ্গি, ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি অ্যাডিনোভাইরাস, রেসপিরেটারি সিনসেশিয়াল ভাইরাস (আরএসভি)-এর দাপট বেড়েছে। হালকা কোভিডের উপসর্গও দেখা দিচ্ছে, তবে তা অত মারাত্মক নয়।

কেন বাড়ছে ভাইরাসের দাপট?

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের মতে, এখন আবহাওয়ার কোনও ঠিকঠিকানাই নেই। আজ গরম, তো কাল ঝমঝম করে বৃষ্টি। কয়েক পশলা বৃষ্টির পরে আবারও প্যাচপেচে গরম ফিরে আসছে। এই বদল এত ঘন ঘন হচ্ছে যে, জীবাণুরাও পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে। দ্রুত বংশবিস্তার করছে। আরও বেশি সংক্রামক ও ছোঁয়াচে হয়ে উঠছে। সর্দিকাশির অ্যাডিনোভাইরাস, রাইনো ভাইরাস কিন্তু করোনার চেয়েও বেশি ছোঁয়াচে হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস তো রয়েছেই।

কী কী লক্ষণ দেখা দিচ্ছে?

জ্বর, সর্দিকাশি, নাক বন্ধ, গলাব্যথার লক্ষণ প্রথমেই দেখা দিচ্ছে। ক্রমাগত নাক দিয়ে জল পড়া, গলা শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা নিয়েই অনেকে আসছেন।

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, দ্রুত শ্বাস নেওয়া, শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় বুক ধড়ফড় করা, নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দিচ্ছে অনেকের। তেমন হলে ফেলে রাখা ঠিক হবে না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। গুরুতর ভাবে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হলে গলা ও ঘাড়ের চার দিকের গ্ল্যান্ড ফুলে যেতে পারে। সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিশেষ প্রয়োজন হয় না।

রাইনোভাইরাস নাক দিয়ে ঢোকে। এর সংক্রমণ হলে গলা ব্যথা, ঢোঁক গিলতে না পারা, শুকনো কাশি ভোগাতে পারে।

বেশ কিছু দিন কাশি থেকে যাচ্ছে অধিকাংশ রোগীর। কমবয়সিদের ক্ষেত্রে কাশি বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা কম হলেও বয়স্কদের ঝুঁকি বেশি। হাঁপানি, ডায়াবিটিস বা ফুসফুসের সমস্যা আগে থেকেই থাকলে বিশেষ সতর্ক হতে হবে। শ্বাসকষ্ট বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনহেলার নেওয়া যেতে পারে।

আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, যেমন মারাত্মক গায়ে-হাতে-পায়ে ব্যথা। জ্বর কমলেও শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে।

পেটের গোলমাল দেখা দিচ্ছে অনেকের। ঘন ঘন বমি, ডায়েরিয়া, খিদে কমে যাওয়া, মুখে অরুচি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর পরামর্শ, থুতু-লালার মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই সব ভাইরাস। তাই জ্বর হলে মাস্ক পরা খুব জরুরি। বারে বারে হাত ধুতে হবে। বিশেষ করে বাইরে থেকে এলে হাত ভাল করে ধুয়ে, স্যানিটাইজ় করে তবেই ঘরে ঢুকুন।

বেশি ভিড় বা জমায়েতে যাবেন না। বিয়েবাড়ি, সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলে চেষ্টা করুন মাস্ক পরার ও স্যানিটাইজ়ার সঙ্গে রাখার। সম্ভব হলে ভিড় এড়িয়ে চলবেন। জ্বর হলে প্যারাসিটামল আর বেশি করে জল খাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক। তবে জ্বর তিন দিনের বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। শিশুদের খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর দিতে হবে। রাস্তার খাবার ভুলেও খাওয়াবেন না। বাড়িতে কম তেলে রান্না করা খাবার খাওয়াতে হবে। আর নিজে থেকে কোনও ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট খাওয়াবেন না।

অন্য বিষয়গুলি:

Viral Flu Virus high fever
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy