Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Cancer Treatment

জিনের গঠন বদলে যাবে, আটকে যাবে ক্যানসারও? মারণরোগ নিরাময়ে নয়া দিগন্তের হদিস গবেষকদের

বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার’-এ প্রকাশিত একটি বিজ্ঞানপত্রে খোঁজ দেওয়া হয়েছে এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতির, যা বদলে দিতে পারে ক্যানসার চিকিৎসার ভবিষ্যৎ।।

ক্যানসারে চিকিৎসা সম্ভব হবে কি?

ক্যানসারে চিকিৎসা সম্ভব হবে কি? প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২ ১৪:১৩
Share: Save:

আতঙ্কের নাম ক্যানসার। এক বার শরীরে বাসা বাঁধলে মুক্তি পাওয়া খুবই কঠিন। গবেষকেরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছেন, এর নিরাময় খুঁজে বার করার। কিন্তু অধিকাংশ ক্যানসারই অত্যন্ত জটিল। পাশাপাশি, ব্যক্তিভেদে তার রূপও ভিন্ন। তাই এখনও সহজ নয় ক্যানসার থেকে আরোগ্য। তবে নবতম প্রযুক্তির হাত ধরে বদলে যেতে পারে এই ছবি। বৃহস্পতিবার বিজ্ঞান পত্রিকা নেচার-এ প্রকাশিত হয়েছে এক লেখা। সেখানে খোঁজ দেওয়া হয়েছে এমন একটি চিকিৎসা পদ্ধতির যা বদলে দিতে পারে ক্যানসার চিকিৎসার ভবিষ্যৎ।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ক্যানসারের চিকিৎসায় ব্যবহার করেছেন ‘ক্লাসটার্ড রেগুলারলি ইন্টারস্পেসড শর্ট প্যালিনড্রোমিং রিপিটিস’ বা ‘ক্রিসপর’ পদ্ধতি। জিনগত উপাদানই জীবনের ভিত্তি। এই ক্রিসপর পদ্ধতিতে বদলে ফেলা যায় সেই জিনের গঠন। এত দিন সাধারণত ডিএনএ-র সমস্যা নির্মূল করতেই এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন গবেষকেরা। নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, জিনগত উপাদানে পরিব্যাপ্তি (মিউটেশন)-র ফলেই সাধারণ কোষ ক্যানসার কোষে রূপান্তরিত হয়। সে কারণেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বহিরাগত জীবাণুর সঙ্গে যতটা যুদ্ধ করতে পারে, ক্যানসার কোষের সঙ্গে ততটা পারে না।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মানবদেহে টি-সেল নামে এক প্রকার বিশেষ কোষ থাকে। এই কোষগুলিই রোগজীবাণুকে আক্রমণ করে। ক্রিসপর পদ্ধতি ব্যবহার করে এই কোষগুলির জিনগত উপাদানে কিছু বদল আনা হয়েছে। ক্যানসার কোষের জিনগত উপাদানের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আনা হয়েছে বদল যাতে সেগুলি ক্যানসার কোষকে আরও বেশি আক্রমণ করতে পারে। জিনের কোন কোন জায়গায় বদল আনা দরকার তা জানতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ গাণিতিক পদ্ধতি। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রত্যেক রোগীর জন্য বিশেষ ভাবে নির্মিত টি-সেল তৈরি করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ক্যানসার কোষের কোথায় আক্রমণ করবে টি-সেল, আগে থেকেই স্থির করে দেওয়া হয় সেই লক্ষ্যও।

ক্যানসার চিকিৎসায় নয়া দিগন্ত খুলতে পারে বলে আশা গবেষকদের।

ক্যানসার চিকিৎসায় নয়া দিগন্ত খুলতে পারে বলে আশা গবেষকদের। প্রতীকী ছবি।

মোট ষোলো জনের দেহে প্রয়োগ করা হয় এই বিশেষ ভাবে তৈরি কোষগুলি। ১ মাস পর দেখা যায়, ক্যানসার কোষের পার্শ্ববর্তী কোষগুলিতে বেশি পরিমাণে সঞ্চিত হয়েছে নবনির্মিত টি-সেল। ষোলো জন রোগীর মধ্যে ৫ জনের দেহে ক্যানসার আর বাড়েনি। কেবল ২ জনের দেহে দেখা গিয়েছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, আপাত ভাবে ষোলো জনের মধ্যে ৫ জন উপকার পেয়েছেন দেখে মনে হতে পারে চিকিৎসা খুব একটা কার্যকর নয়, কিন্তু আদৌ এমনটা নয়। গবেষকদের দাবি, এই প্রথম মানুষের উপর এ ধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে। তাই মানবদেহে কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন না তাঁরা। সেই জন্য খুবই অল্প পরিমাণে দেওয়া হয় ওষুধ। পরবর্তী পরীক্ষাগুলিতে এই মাত্রা আরও বাড়ানো হবে। এই প্রক্রিয়া যে কার্যকর হতে পারে, সেটিই সবচেয়ে বড় আবিষ্কার। যদি ভবিষ্যতে এই পদ্ধতি আরও উন্নত এবং কার্যকর হয়, তবে ক্যানসার চিকিৎসায় নয়া দিগন্ত খুলে যেতে পারে বলে আশা গবেষকদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Cancer Research Health Cancer treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE