বাতিক কী ভাবে শরীরের ক্ষতি করে? ছবি: সংগৃহীত।
সারা সপ্তাহ কাজ। তার পর সপ্তাহান্তে একটা ছুটি। জমানো বাড়ির কাজ তো থাকেই। সে সব সারতেই বেলা কাবার। সেখান থেকে সময় বাঁচলে তার পর না হয় সিনেমা দেখা, পছন্দের বই পড়া বা বাইরে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা করা যায়। কিন্তু বেশির ভাগ দিনই সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় না। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত বিভোরের দিনলিপি অনেকটা এ রকমই। ছুটির দিন সহকর্মী, বন্ধুরা ফোন করে ‘কী করছিস’ জিজ্ঞেস করলে বেশির ভাগ সময়েই বিভোরের উত্তর হয়, “সাফাই অভিযান।”
কর্মসূত্রে শহরের বাইরে একা থাকতে হয়। কিন্তু তাঁর ছোট্ট এক কামরার ঘর দেখলে মনেই হয় না, তিনি একা থাকেন। পরিপাটি করে সাজানো ঘর, বিছানার উপর টান টান করে পাতা চাদর, হেঁশেলের কোথাও একটু নোংরা নেই। অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়ি ফিরলে সেই সময়টুকু তিনি কাচাকুচিতে ব্যয় করেন। ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে যখন বেশির ভাগ সহকর্মী অনলাইনে খাবার অর্ডার করতে ব্যস্ত, তখন বিভোর হেঁশেল ধুয়েমুছে রান্নার কাজ শুরু করেন। খাওয়াদাওয়া শেষ হলে বাসন ধুয়ে আবার একপ্রস্ত ধোয়ার পর্ব চলে। একা হাতে সব দিক সামলানোর দক্ষতা দেখে সহকর্মীরা রীতিমতো ঈর্ষা করেন। নিন্দকেরা অবশ্য বিভোরের এই পরিষ্কার করা বা থাকার অভ্যাসকে ‘বাতিক’ বলে দাগিয়ে দিতে চান। আবার অনেকে মনে করেন, এই বাতিক কিছু ক্ষেত্রে মানসিক চাপ বশে রাখার ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
কিন্তু মনোরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, বরং উল্টোটাই ঘটে এমন ক্ষেত্রে। এই বাতিক কিন্তু শরীর এবং মনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ‘অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিজ়অর্ডার’ বা ‘ওসিডি’ বলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটি রোগের কথা বলা আছে। এই বাতিককে ‘ওসিডি’-র একটি লক্ষণ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তার পিছনে অবশ্য জৈবিক, মানসিক এবং পরিবেশগত কারণ থাকতে পারে।
এই ‘ওসিডি’ অনেকের ক্ষেত্রেই জিনগত। আবার শরীরে ভিটামিন বা হরমোনের সমতা বিঘ্নিত হলেও এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আবার, অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকেও কেউ কেউ ‘ওসিডি’-তে আক্রান্ত হন। এই ধরনের সমস্যা কিন্তু পুরোপুরি নিরাময় হয় না। তবে চাইলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy