কায়িক পরিশ্রম কমে যাওয়ায় বদহজমের সমস্যা অনেক বেড়েছে। রাতে খাওয়ার পরে গলা-বুক জ্বালা, গ্যাসের সমস্যা ভোগাচ্ছে। হজমের গোলমালের নেপথ্যে যে কারণগুলি মূলত দায়ী, তা বুঝতে পারেন না অনেকেই। পুষ্টিবিদের পরামর্শ না নিয়েই যাঁরা ডায়েট করেন, তাঁরা বলবেন যে, রাতে পরিমিত খেয়েও অম্বলের সমস্যা হচ্ছে। মেদও বাড়ছে। তা হলে ভুলটা কোথায় হচ্ছে?
রাতে খেতে বসে বা খাবার খাওয়ার পরে এমন তিন জিনিস অনেকেই খান, যা রাতের বেলা খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। অনেক বাঙালি বাড়িতেও এই ধরনের খাবার খাওয়া হয়। যাঁরা হঠাৎ করেই খুব কঠোর ডায়েট শুরু করেছেন, তাঁরা না জেনেই ভুলটা করে ফেলেন। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী জানালেন, খাওয়ার অভ্যাসে অনেক কিছুই ভুল হয়। যেমন, দু’টি মিলের মাঝে বিরতির মেয়াদ যদি অনেকটাই বেশি থাকে, তবে বদহজমের সমস্যা বাড়ে। আর ওই বিরতির পরে ফাস্ট ফুড খেলে শরীরের আরও ক্ষতি হয়। সন্ধ্যার স্ন্যাক্স কেমন খাচ্ছেন, তা-ও বোঝা দরকার। স্ন্যাকস বলতে অবশ্যই প্রোটিনযুক্ত স্ন্যাক্স, যেমন, ছোলা, কাঠবাদাম, ছাতু খেলে ভাল। স্ন্যাক্সে মিষ্টিজাতীয় খাবার বা ভাজাভুজি খেয়ে যদি রাতে আবার ভারী মিল খান, তা হলে অম্বল হবেই।
রাতে কোন ৩ জিনিস একেবারেই খাবেন না?
ভাত বা রুটির সঙ্গে স্যালাড
বাঙালি বাড়িতে রাতে ভাত বা রুটি খাওয়ারই রেওয়াজ রয়েছে। অনেককে রাতে ভাত বা রুটির সঙ্গে এক থালা স্যালাড নিয়ে বসেন। তাতে শসা, টম্যাটো, গোল গোল করে কাটা গাজর, পেঁয়াজ থাকেই। লেবুর রস মাখিয়ে সেই স্যালাড খেতেও ভাল লাগে। এখন আবার নানা রকম বাহারি স্যালাড খাওয়ার চল হয়েছে। ব্রকোলি, বাঁধাকপি, বিট, লেটুস সহযোগেও স্যালাড বানিয়ে খাচ্ছেন অনেকেই। মাংস বা বাদামের স্যালাডও বানাচ্ছেন। সে উপকরণে যা-ই থাক না কেন, রাতে কাঁচা সব্জি দিয়ে তৈরি স্যালাড খেলে অন্ত্রে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়বে। এমনিতেও রাতে হজমের প্রক্রিয়া ধীর গতিতে হয়, তার উপর বেশি ফাইবার বা প্রোটিন খেলে তা হজম করতে সমস্যা হবে। তখন অতিরিক্ত অম্লরস তৈরি করতে হবে পাকস্থলীকে, যা খাদ্যনালি দিয়ে উপরে উঠতে থাকবে। তখন গলা-বুক জ্বালা হবে।
আরও পড়ুন:
ফল
রাতে ফল খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, মোনো ডায়েট করছেন যাঁরা, তাঁরা একই রকম খাবার টানা খেতে থাকেন। যে সপ্তাহে ফল বা সব্জি খাচ্ছেন, তা রাতেও খান। ফলে রাতে যদি ফল দিয়ে তৈরি স্যালাড বা খাওয়ার পরে ফল খান, তা হলে বদহজম কোনও দিনও কমবে না। ক্যালোরি ঝরাতে রাতে অনেকেই ফল খাওয়া শুরু করেছেন, যা অস্বাস্থ্যকর। বিকেল ৫টার পর আর ফল খাওয়া ঠিক নয়।
শেষ পাতে মিষ্টি
বাঙালির শেষ পাতে মিষ্টি লাগবেই। যাঁরা ডায়েট মানছেন, তাঁরা আবার কায়দা করে মধু, ওট্স বা রাগি দিয়ে স্বাস্থ্যকর মিষ্টি বানিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করছেন। কোনও রকম মিষ্টি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার রাতে খাওয়া ঠিক নয়। সে যতই কম মিষ্টি হোক না কেন, তা রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করবেই। তা ছাড়া মিষ্টি মেলাটোনিন হরমোনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। তাই রাতে মিষ্টি খেলে ঘুমের সমস্যা হবেই।