মশার কামড়ে ফুলছে পা, কী রোগ ছড়াচ্ছে। ছবি: ফ্রিপিক।
‘লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়া’ বা ‘এলিফ্যান্টাসিয়াসিস’ রোগের ঝুঁকি বাড়ছে দেশে। বাংলা ভাষায় এই রোগকে বলে ‘গোদ’। মশার কামড়ে পরজীবী সংক্রমণে হলে এই রোগ হয়। বর্ষার মরসুমে মশার উপদ্রব বেড়েছে। তা ছাড়া খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য রোগজীবাণুরও বাড়বাড়ন্ত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, দেশের ৩৪৫টি জেলায় এই রোগের প্রকোপ বেড়েছে। যার মধ্যে অসম, বিহার, মদ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, কর্নাটক, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ ও গুজরাতের বিভিন্ন জেলা রয়েছে।
আগামী চার বছরের মধ্যে দেশ থেকে ‘লিম্ফ্যাটিক ফাইলেরিয়াসিস’ দূরীকরণের লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, ওই রোগের প্রকোপ এখনও রয়ে গিয়েছে।
কেন হয় এই রোগ?
ফাইলেরিয়া মশাবাহিত রোগ। কিউলেক্স মশার কামড়ে এই রোগ হয়। মশার লালার মাধ্যমে ফাইলেরিয়া রোগের পরজীবী মানুষের শরীরে ঢুকে রক্তে মিশে যায় এবং লসিকা গ্রন্থিগুলিকে সংক্রমিত করে। ফলে লসিকা গ্রন্থিগুলি ফুলে উঠতে শুরু করে। দেহরসের সংবহনে বাধা তৈরি হয়। তখন হাত-পা ফুলে উঠতে থাকে। পায়ের কিছু গ্রন্থি ফুলে যায়। হাঁটাচলায় সমস্যা হয়।
ফাইলেরিয়ার রোগের অধীনে রয়েছে লিম্ফেডিমা (পা ফুলে যাওয়া) এবং হাইড্রোসিল (অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া) নামে দু’টি রোগ। কিউলেক্স মশা কামড়ের কয়েক বছর পরেও এই রোগ দেখা দিতে পারে।
‘এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক হেলথ’ জানাচ্ছে, গোদে আক্রান্ত রোগীরা শুধু শারীরিক কষ্টই পান না, মানসিক, সামাজিক ও আর্থিক ভাবেও বিপর্য়স্ত হয়ে পড়েন। তাই এই রোগকে প্রতিরোধ করতে ও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে এখনও যে সমস্ত জায়গায় গোদের প্রাদুর্ভাব রয়েছে, সেখানকার সমস্ত মানুষকে ওষুধ খেতে হবে। যদিও এখনও ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে অনেকের অনীহা দেখা যায়। রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর থেকে যদি টানা পাঁচ থেকে সাত বছর ওষুধ খাওয়া যায়, তা হলে এই রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।
গোদ নিয়ে এখনও সার্বিক সচেতনতার অভাব রয়েছে বহু জায়গায়। দেখা গিয়েছে, যে সব এলাকায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি, সেখানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিশু বয়স থেকে এই রোগের সংক্রমণ ঘটে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে অধিকাংশ বাবা-মা তা বুঝতে পারেন না, রোগটি কী। ফলে ভিতরে ভিতরে পরজীবীর সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করে। ২০-২৫ বছর বয়সে গিয়ে রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। তখন আর চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া যায় না। আক্রান্তেরা কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy