টিটেনাসের টিকা কেন জরুরি? ছবি: সংগৃহীত।
পড়ে গিয়ে ছড়ে গেলে, কিংবা মরচে ধরা লোহায় শরীরে কেটে গিয়ে রক্তপাত হলে, তা যত সামান্যই হোক, আমরা টিটেনাসের টিকা নিই। কিন্তু জানেন কি এই টিটেনাস আসলে কী? কেনই বা এই টিকা নেওয়া জরুরি?
টিটেনাস বহু পুরনো একটি রোগ। বাংলায় বলা হয় ধনুষ্টঙ্কার। তথ্য বলছে, ভারতে সচেতনতার অভাবে টিটেনাসে একাধিক মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা কমে এলেও এ বিষয়ে সচেতনতা প্রয়োজন।
টিটেনাসের জন্য দায়ী ‘ব্যাকটিরিয়াম ক্লস্ট্রিডিয়াম টিটেনি’। এটা একধরনের ব্যাকটিরিয়া যা মাটি, নোংরা জায়গায় পাওয়া পায়। কোনও ক্ষত ঠিকমতো পরিষ্কার না হলে, নোংরা জায়গা থেকে সংক্রমণ ছড়ালে, টিটেনাস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। টিটেনাস হলে, উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
টিটেনাসের উপসর্গ
টিটেনাস ব্যাকটিরিয়া শরীরে প্রবেশ করে স্নায়ুর সংযোগস্থলে আক্রমণ করে। ব্যাকটিরিয়ার টক্সিন বা বিষে মাংসপেশি ক্রমশ শক্ত হতে সাহায্য করে। একসময় ঘাড় ও চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। খিঁচ ধরে শরীরে। রোগী শ্বাস নিতে পারেন না। তার জেরে মৃত্যুও হতে পারে।
কখন নেওয়া প্রয়োজন?
শিশুরা অনেক সময় পড়ে গিয়ে চোট পায়। মাঠে-ঘাটে খেলাধুলো করে তারা। বড়দেরও কেটে যায়, চোট লাগে অনেক সময়। সেই ক্ষতস্থানে যদি ধুলো, ময়লা লেগে গিয়ে থাকে, তাহলে দ্রুত পরিষ্কার না করলে, কিন্তু বিপদ ঘটতে পারে। যেহেতু এই ব্যাকটিরিয়া মাটি, ধুলো, বিষ্ঠায় থাকে, তাই ঝুঁকি এড়াতে ক্ষতে ধুলো-ময়লায় সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকলে টিটেনাস ইঞ্জেকশন নিতে বলা হয়। ছড়ে, কেটে যাওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিটেনাস ইঞ্জেকশন নেওয়া প্রয়োজন।
টিটেনাসের টিকা কী?
ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে টিটেনাসের অ্যান্টিজেন ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। সেই অ্যান্টিজেন শরীরে গেলে, পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে শরীর। তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। তারপর যদি কোনও ক্ষতের কারণে শরীরে টিটেনাস ব্যাকটিরিয়া ঢুকেও পড়ে, শরীর বাধা দেওয়ার জন্যে আগে থেকেই তৈরি হয়ে যায়।
কোন বয়সে দেওয়া হয়?
জন্মের পরেই সাধারণত শিশুদের টিটেনাসের টিকা দেওয়া হয়। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানালেন, এখন আলাদা ভাবে কেবল টিটেনাস ভ্যাকসিন দেওয়া হয় না শিশুদের। দেড় মাস থেকে সাড়ে তিন মাস পর্যন্ত তিনটি টিটেনাস ভ্যাকসিন দেওয়া হয়, তবে অন্যান্য ভ্যাকসিনের সঙ্গে মিশিয়ে। এরপর দেওয়া হয় দেড় বছরে, তারপর ৫ বছরে। ১০ বছর পর্যন্ত টিটেনাস বাধ্যতামূলক ভাবেই নিতে বলা হয়।
কোনও কোনও টিকার কার্যকারিতা অনেক বছর পর্যন্ত থাকে। তবে টিটেনাসের ক্ষেত্রে তা নয়। চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী জানালেন, ছড়ে বা কেটে গেলে একবার টিটেনাস ইঞ্জেকশন দেওয়া হলে তার মেয়াদ থাকে ৫ বছর পর্যন্ত। অ্যান্টিজেন শরীর যাওয়ার পর ৮-১০ দিন লাগে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে। তবে ৫ বছর পর আবার কোনও ক্ষত থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকলে টিটেনাস নিতে হবে। পাশাপাশি কোনও দুর্ঘটনায় গভীর ক্ষত হলে, সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমণের ভয় থাকলে, টিটেনাসের অ্যান্টবডিও ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
বিশেষ কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। ইঞ্জেকশনের জায়গাটি হালকা ফুটে যায়, লাল হয়ে যায়, ব্যথা হয়। তবে কারও ক্ষেত্রে জ্বর আসতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy