ডায়াবিটিস বা রক্তে শর্করার চোখরাঙানিতে ত্রস্ত গোটা বিশ্ব। পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন বয়সের কয়েক কোটি মানুষ বর্তমানে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। আর ডায়াবিটিসের জেরেই দিনে দিনে বাড়ছে হার্ট, কিডনি, স্নায়ু, প্রদাহজনিত নানা রকম সমস্যা। তবে সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যে সব মহিলা দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত, তাঁদের জরায়ুর ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই এই বিষয়ে সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন:
ডায়াবিটিসের সঙ্গে জরায়ুর ক্যানসারের যোগ কোথায়?
প্রথমত, ডায়াবিটিস থাকলে শরীরে হরমোনের হেরফের ঘটে। ইনসুলিন হরমোনের ঘাটতি কিংবা অতিরিক্ত ক্ষরণ, কোনওটিই জরায়ুর জন্য ভাল নয়। ইনসুলিন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে ইস্ট্রোজেন হরমোন ক্ষরণের মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। যার ফলে জরায়ুর ভিতর কোষ বিভাজনের হারও বেড়ে যায়। পরবর্তী কালে যা ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে।
দ্বিতীয়ত, ইনসুলিন হরমোনের উৎপাদন বা ক্ষরণ বেড়ে গেলে দেহের ওজন বেড়ে যেতে পারে। এই কারণেও কিন্তু জরায়ুর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ ছাড়া শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ার পিছনেও কিন্তু ডায়াবিটিসের বড় ভূমিকা রয়েছে।

যে সব মহিলা দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত, তাঁদের জরায়ুর ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ছবি: সংগৃহীত।
জরায়ুর ক্যানসার প্রতিরোধ করার উপায় কী?
জরায়ুর ক্যানসার রুখে দেওয়ার প্রথম এবং প্রধান শর্ত হল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা। এ ছাড়া দেহের বাড়তি ওজন বা স্থূলত্বের কারণেও অনেক সময়ে নানাবিধ রোগব্যাধি দেখা দিতে পারে। ডায়েট এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
যে সব মহিলা ধূমপান করেন, তাঁদেরও এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ডায়াবিটিস থাকলে ধূমপায়ীদের জরায়ুর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
ক্যানসার প্রতিরোধ করতে চাইলে অবশ্যই পরীক্ষা করানো জরুরি। ২৫ বছর বয়সের পর থেকে তিন বছর অন্তর এক বার ‘প্যাপ স্মিয়ার’ পরীক্ষা করাতে পারলে ভাল হয়।