অতিরিক্ত কফি খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি হয়। একাধিক গবেষণায় প্রামাণ্য তথ্য প্রকাশিত হয়েছে এই বিষয়ে। তবে এখন দেখা যাচ্ছে, চায়ের ক্ষেত্রেও এই সূত্র কার্যকর। লাল, চা, গ্রিন টির মতো চাগুলিতে ক্যাফিনের পরিমাণ বেশি থাকায়, একই সমস্যা হতে পারে। কফি বা এই ধরনের চা অতিরিক্ত পান করার ফলে খাবার থেকে আয়রন শোষণের ক্ষমতা কমে যায় শরীরের। যদিও ভেষজ চায়ের ক্ষেত্রে এই সমস্যা নেই, কারণ তাতে ক্যাফিনের পরিমাণ কম থাকে অথবা থাকেই না।
যদিও মনে হতে পারে, এর জন্য দায়ী কেবল ক্যাফিন, আদপে কিন্তু তা নয়। কফি এবং চায়ের মধ্যে আরও একটি যৌগ থাকে, যার সঙ্গে আয়রনের সম্পর্ক মোটেও ভাল নয়। তা হল, ট্যানিন। আয়রন হল এমনই এক অপরিহার্য খনিজ, যা খাবার থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু ট্যানিনের অতি-সেবনে শরীর সেই খাবারটি থেকে আয়রন শোষণ করতে পারে না।
পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী আনন্দবাজার ডট কমকে জানাচ্ছেন, চা এবং কফির মধ্যে ট্যানিন থাকে। এই যৌগটি খাবারের আয়রনকে দেহে শোষণে বাধা দেয়। তাঁর কথায়, ‘‘ধরা যাক, পালং শাক, আপেল বা ড্রাই ফ্রুটসে প্রচুর আয়রন রয়েছে। যা খেলে আপনার শরীরে আয়রনের ঘাটতি মিটতে পারে। অথচ আপনি যদি খাবার পরই বা খাবারের সঙ্গে চা-কফি পান করেন, তা হলে কিন্তু সেই পুষ্টিগুণ শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না।’’ তাই চা-কফি পান করার সঠিক নিয়মটি জেনে নেওয়া দরকার।

খাবারের সঙ্গে চা পান করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়। ছবি: সংগৃহীত।
চা কফি পান করার সঠিক নিয়ম
পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, যে কোনও খাবার খাওয়ার পর অন্তত এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে, তবেই চা বা কফি খাওয়া উচিত। অথবা চা খাওয়ার পরেই খাবার খাওয়া উচিত নয়। কমপক্ষে এক ঘণ্টার ব্যবধান প্রয়োজন। যদি আগে থেকেই শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে, বা আপনি যদি অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হন, তবে খাবারের সঙ্গে চা খাওয়া একেবারেই বারণ।
দেহে আয়রন শোষণ ভাল হয় কোন খাবারে
পুষ্টিবিদের কথায়, ‘‘ঠিক যেমন চা এবং কফিতে দেহে আয়রন শোষণ বাধা পড়ে, তেমনই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারে দেহে আয়রন শোষণ বৃদ্ধি পায়। তাই শরীরে আয়রন শোষণের প্রক্রিয়াটি উন্নত করতে প্রতিটি খাবারের সঙ্গে পাতিলেবু খেতে পারেন। খাবারের সঙ্গে লেবুর রস চিপেও খেতে পারেন, অথবা লেবুর কোয়া চুষেও খাওয়া যায়। এর ফলে যে খাবারটি আপনি খাচ্ছেন, সেটি থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণ আয়রন দেহে প্রবেশ করতে পারবে।’’