কী কী লক্ষণ দেখলে বুঝবেন ফুসফুসে সিস্ট হচ্ছে। ছবি: ফ্রিপিক।
‘সিস্ট’ কথাটা শুনলেই অধিকাংশ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়। ফুসফুসে বড় সিস্ট হলে শ্বাসকষ্ট বাড়বে। সে ক্ষেত্রে কাশি সারবে না। ওষুধ খেয়েও লাভ হচ্ছে না। তখন সতর্ক হতে হবে। যখন তখন শ্বাসকষ্ট ও লাগাতার শুকনো কাশি ভোগালে অনেকেই সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজ়িজ়) ভেবে নেন। কিন্তু, সমস্যার কারণ সিস্ট হতে পারে। চিকিৎসকেরা বলেন, সব সিস্ট খারাপ নয়। অধিকাংশই বিনাইন অর্থাৎ তা থেকে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাব। তবে সিস্ট হলে সংশ্লিষ্ট অংশে ব্যথা-যন্ত্রণা হতে পারে। ওই অঙ্গের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হতে পারে। তাই দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করা উচিত।
কমবয়সিরাই কি বেশি ভুগছেন?
সিস্ট হল জলভরা থলির মতো। শরীরের যে কোনও অংশে হতে পারে। থলির ভিতর দূষিত তরল জমা হতে থাকে। ছোট ব্রণর মতো থেকে বড় মার্বেলের মতো আকৃতির হতে পারে সিস্ট। যেখানে সিস্ট হয়েছে, তার আশপাশেও যদি সংক্রমণ হয়, তা হলে তা চিন্তার ব্যাপার হয়ে ওঠে। অনেক সময় দেখা যায়, সিস্ট একটি বা দু’টি নয়, একাধিক হয়েছে। আর ফুসফুসে যদি সিস্ট হয়, তা হলে অনেক সময়েই সংক্রমণ ঘটে আশপাশের কোষগুলিতে। তখন প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বুকে চাপ বা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। সর্দি-কাশি হলে তা সারতেই চাইবে না। ফুসফুসে সিস্ট হলে তাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ‘সিস্টিক লাং ডিজ়িজ়’।
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত ধূমপান, নেশা করার কারণে এখন কমবয়সিরাও ভুগছেন এই রোগে। তা ছাড়া দূষণের প্রভাব তো রয়েছেই। প্রথম প্রথম রোগের লক্ষণ ধরা পড়ে না। যত দিন যায়, ততই যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। লাং ফাংশন টেস্ট বা সিটি স্ক্যান করালে ফুসফুসে সিস্ট আছে কি না ধরা যায়।
সিওপিডির রোগী বা ফুসফুসে আগে সংক্রমণ হয়েছে, এমন রোগীদের সিস্টের ঝুঁকি বেশি থাকে। কোভিড পরবর্তী সময়ে ফুসফুসে এমন সিস্ট হতে দেখা যাচ্ছে অনেকেরই। চিকিৎসকেরা বলছেন, কিছু ক্ষেত্রে ঋতুস্রাব চলাকালীন ইস্ট্রোজেন হরমোনের তারতম্যের কারণে মেয়েদের এই ধরনের সিস্ট হতে পারে। জিনগত কারণেও সিস্ট হতে পারে ফুসফুসে। আবার ভাইরাস সংক্রমণের কারণেও সিস্ট হতে পারে।
ফুসফুসের সমস্ত সংক্রমণই ঠিক ভাবে চিকিৎসা না হলে শেষ পর্যন্ত ফাইব্রোসিসে পরিণত হয়। ফুসফুসের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও ধীরে ধীরে স্থূল ও কঠিন হয়ে পড়ে শ্বাসকার্যে বাধা তৈরি করে। তখন অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া ছাড়া গতি থাকে না। তাই যদি দেখেন, শ্বাসের সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে, শুকনো কাশি ওষুধ খেলেও কমছে না, নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিচ্ছে, তখন দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy