Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Rutuja Diwekar Diet Tips

সুস্বাস্থ্যের আশায় পিঠেপুলিও ছেড়েছেন? বাড়ির খাবারের গুণ চেনালেন বলিপাড়ার পুষ্টিবিদ

‘ডায়েট’ করতে গিয়ে পৌষের পিঠেপুলির দিকেও তাকাতে ভয় পান অনেকে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এত বছর ধরে চলে আসা ভাত-রুটি-ডালের কি কোনও গুণই নেই? ঘরোয়া খাবারও পিছিয়ে নেই পুষ্টিগুণে।

‘ডায়েট’ করতে গিয়ে পৌষের পিঠেপুলির দিকেও তাকাতে ভয় পান অনেকে।

‘ডায়েট’ করতে গিয়ে পৌষের পিঠেপুলির দিকেও তাকাতে ভয় পান অনেকে। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ২০:১২
Share: Save:

নধর-নাদুস ‘ভেতো’ বাঙালিদের অনেকেই এখন আর ভাত ছুঁয়ে দেখেন না। ওজন কমানো থেকে আরও স্বাস্থ্যকর কোনও বিকল্প খাবার খুঁজে নেওয়া, বিভিন্ন লক্ষ্যে অনেকেই প্রথাগত খাবারদাবার ছেড়ে বেছে নেন বাজারচলতি বিভিন্ন ‘সাপ্লিমেন্ট’। ‘ডায়েট’ করতে গিয়ে পৌষের পিঠেপুলির দিকেও তাকাতে ভয় পান অনেকে। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এত বছর ধরে চলে আসা ভাত-রুটি-ডালের কি কোনও গুণই নেই?

বলি-পাড়ার পুষ্টিবিদ রুতুজা দিয়েকর সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে একটি লম্বা পোস্ট দিয়েছেন। সেখানেই তিনি দাবি করেছেন, স্থান ও সংস্কৃতিভেদে মানুষের খাদ্যাভ্যাস আলাদা আলাদা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সেই সব খাবারে কোনও পুষ্টি নেই। আসলে বাজারজাত বিভিন্ন খাবার বিক্রি করতে এত বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় যে, মানুষ নিজেদের শিকড় অর্থাৎ, ঐতিহ্যশালী খাবারগুলিকেই ভুলতে বসেছেন।

পৌষ সংক্রান্তির সময়ে নানা রাজ্যে নানা ধরনের উৎসব হয়। সব ক্ষেত্রেই আলাদা আলাদা খাবার। উত্তর ভারতে ‘লোরি’ পালিত হয়। সে উৎসবের খাবার খাওয়ার প্রেক্ষিতেই রুজুতা কথাগুলি বলেন। ঘরোয়া খাবার খাওয়ার পক্ষে সওয়াল করে রুজুতা লেখেন, ‘‘খাবারের ভিন্নতা, মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর কিন্তু একেবারেই লাভজনক নয়। কাজেই যখনই কোনও ঐতিহ্যশালী খাবার দেখে মনে এই প্রশ্ন আসে যে, তাতে আদৌ প্রোটিন কিংবা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে কি না, তখন মনে রাখবেন, যে বাজার রোগা হওয়ার শিক্ষা দেয়, সেই বাজারই মুনাফা বৃদ্ধির জন্য খাবারকে কৃষিক্ষেত্র, মানুষ ও বাস্তুতন্ত্রের থেকে আলদা করে দেখতে শিখিয়েছে।”

শুধু রুতুজা নন, পুষ্টিবিদদের অনেকেই বলছেন, বাঙালির চিরায়ত ডাল-ভাত-পোস্তও কম যায় না খাদ্যগুণে। যেমন থায়ামিন, রাইবোফ্ল্যাভিন ও নিয়াসিনের মতো ভিটামিন বি থাকে সেদ্ধ চালে। ডালে থাকে ভরপুর প্রোটিন ও আয়রন।

আলু পোস্ত, পটল পোস্ত, ঝিঙে পোস্ত— এগুলি বাঙালির বিখ্যাত রান্না। জানেন কি এই পোস্ততে রয়েছে অনেকটা পরিমাণে ক্যালশিয়াম? এক টেবিল-চামচ পোস্ততে থাকে ১২৭ গ্রাম ক্যালশিয়াম।

আর বাজারে যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা কমায় বলে এত বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, তা মেলে বিভিন্ন ধরনের মাছে। তা ছাড়া, মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন তো থাকেই। আমোদি, চুনো বা মৌরলার মতো ছোট ছোট মাছেও থাকে ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস। কাজেই ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ প্রবাদটি কিন্তু স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও খুব একটা খারাপ নয়।

খরচের কথা ভাবলেও কিন্তু স্বাদ ও স্বাস্থ্য দু’কুলই রক্ষা করতে বাজারচলতি বিভিন্ন খাবারের বদলে বেছে নেওয়া যায় ঘরোয়া কিছু খাবারও। ধরুন বাজারে কোনও একটা সংস্থার তৈরি জলখাবারের সিরিয়াল খুব চলছে। প্যাকেটের গায়ে লেখা উপকরণগুলি মন দিয়ে পড়ুন। দেখবেন বহু জিনিস উপস্থিত রয়েছে আপনার হেঁশেলেই। মরসুমি ফল, শীতের সবুজ শাকসব্জিও গুণে কম যায় না। কাজেই শুধু বিজ্ঞাপনে দেখানো খাবারের পিছনে না দৌড়ে, বাড়ির রান্নাঘরেই খুঁজে দেখুন, মিলতেই পারে ‘অমূল্য রতন’।

অন্য বিষয়গুলি:

Diet Indian Food
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE