কোন কোন ওষুধে কর ছাড় দেবে কেন্দ্র, তাতে কী কী সুবিধা হবে রোগীদের? প্রতীকী ছবি।
ক্যানসারের তিনটি মহার্ঘ ওষুধে করছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২৪-’২৫ আর্থিক বর্ষের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে ক্যানসারের ওই তিনটি ওষুধের উপর থেকে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনটি ওষুধের দামই লক্ষাধিক টাকা। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, তিন ওষুধে ১২ থেকে ৫ শতাংশ করছাড় দিলে সেগুলির দাম কিছুটা হলেও কমবে। ক্যানসারের এমন অনেক ওষুধ আছে, যেগুলি জীবনদায়ী হওয়ার পাশাপাশি তাদের দামও অনেক। তার মধ্যে ওই তিনটি ওষুধই কেন বেছে নেওয়া হল এবং দাম কমানোর পরে ক্যানসার রোগীদের কী কী সুবিধা হবে, তা জানালেন ক্যানসারের শল্যচিকিৎসক শুভদীপ চক্রবর্তী।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘোষণা করেছিলেন, ‘ট্রাস্টুজ়ুমাব ডিরাক্সটেকান’, ‘ওসিমেরটিনিব’ এবং ‘ডুরভ্যালুমাব’— এই তিন ওষুধের উপর থেকে ১২ থেকে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে শুভদীপ আনন্দবাজার অনলাইনকে বলছেন, “স্তন, পাকস্থলী, গলব্লাডার এবং শরীরের অন্যান্য ক্যানসারে ওই তিন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। ডিরাক্সটেকান স্তন ক্যানসারের চিকিৎসায় লাগে, ওসিমেরটিনিব ফুসফুসের ক্যানসার সারাতে দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহার করা হয় এবং ডুরভ্যালুমাব মূত্রথলি ও কোলন ক্যানসারের চিকিৎসায় লাগে। এত দামের জন্য এই ওষুধগুলির থেরাপি মাঝপথেই বন্ধ করে দিতে হয়। করছাড় দেওয়ার পরে অনেক ক্যানসার রোগীই তাঁদের চিকিৎসা শেষ করতে পারবেন বলে আশা করা যায়।”
ক্যানসার চিকিৎসার জন্য প্রথমে রোগ নির্ণয়, তার পর কেমোথেরাপি, রেডিয়োথেরাপি বা ইমিউনোথেরাপির সাহায্য নেওয়া হয়। চিকিৎসক বলছেন, নির্দিষ্ট থেরাপিতে ক্যানসার কোষ নির্মূল করার পরে কিন্তু চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায় না। তার পরেও দীর্ঘ মেয়াদে রোগীকে পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। ক্যানসার কোন পর্বে নির্ণয় করা হয়েছিল এবং তা কতটা ডালপালা মেলেছিল— এই সবের উপর নির্ভর করেই অস্ত্রোপচারের পরবর্তী থেরাপি চলে। একে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ‘মেনটেন্যান্স থেরাপি’। প্রাথমিক চিকিৎসা সফল হওয়ার পরে এই থেরাপি শুরু হয়, যাতে ক্যানসার আর ফিরে আসতে না পারে। শুভদীপ বলছেন, অনেক সময়ে রোগীর অবস্থা দেখে প্রথম থেকেই এই সব ওষুধের প্রয়োগ করা হয়।
ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রে ইমিউনোথেরাপি হিসেবে ‘ডুরভ্যালুমাব’ ইঞ্জেকশনের প্রয়োগ করা হয়। এখন মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসার ভীষণ ভাবে বাড়ছে। ‘ট্রাস্টুজ়ুমাব ডিরাক্সটেকান’ ইঞ্জেকশনটি যদি দীর্ঘ মেয়াদে প্রয়োগ করা হয়, তা হলে ক্যানসার আর ফিরে আসার আশঙ্কা থাকে না। তেমনই ফুসফুস আর কোলন ক্যানসারের রোগীর সংখ্যাও কম নয়। দেশে এখন স্তন ক্যানসার, ফুসফুস ও কোলন ক্যানসারের রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তাই এই তিন ওষুধ ক্যানসার রোগীদের জন্য যে ভীষণ ভাবে জরুরি, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
‘ট্রাস্টুজ়ুমাব ডিরাক্সটেকান’ ইঞ্জেকশনের একটি ভায়ালের দাম সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। ‘ডুরভ্যালুমাব’ ইঞ্জেকশনের একটি ভায়ালের দাম ১ লক্ষ ৩৭ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৪২ হাজারের মধ্যে। ‘ওসিমেরটিনিব’ –এর দাম ১ লক্ষ ১৭ হাজারের মধ্যে। শুভদীপের কথায়, “এই ওষুধগুলি প্রতি মাসে এক বার করে নিতে হয়। রোগীর অবস্থা বুঝে প্রতি সপ্তাহেও দরকার হতে পারে। টানা ২১ থেকে ২৮টি ডোজ়ের দরকার হয়। সে কারণেই দাম কমা খুবই জরুরি ছিল। সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy