পরিসংখ্যান বলছে, ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ রোগীই ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। অথচ ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় পঁচিশ শতাংশ রোগী তাঁদের গোটা জীবনে কখনও ধূমপান করেননি। কাজেই ধূমপান করুন বা না করুন ফুসফুসের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলি থেকে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত প্রতি তিন জনের মধ্যে দুই জনেরই বয়স ৬৫ বা তার বেশি। কাজেই এই বয়সি মানুষদের নিতে হবে অতিরিক্ত সতর্কতা।

১। দম না পাওয়া: হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস প্রশ্বাসের ধরনে বদল আসা ফুসফুসের ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। ফুসফুসে টিউমার তৈরি হওয়ার ফলে বায়ু প্রবাহের পথ রুদ্ধ হতে পারে। আবার কখনও কখনও টিউমারের প্রভাবে জমে যেতে পারে জল। কাজেই অল্প হাঁটাহাঁটি কিংবা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করলেই যদি দম ফুরিয়ে আসার উপক্রম হয়, তবে তা উপেক্ষা করা বাঞ্চনীয় নয়।

২। কাশি: শ্বাসনালীর যে কোনও ধরনের সমস্যার প্রথম লক্ষণ হল কাশি। ফুসফুসের ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণও একই। কিন্তু সাধারাণ কাশির সঙ্গে এর পার্থক্য হল, সাধারণ কাশি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় না। কাশি যদি কয়েক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় বা ক্রমাগত বেড়েই চলে তবে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৩। কফের সঙ্গে রক্ত: কাশির পাশাপাশি ফুসফুসের ক্যানসারের আরও কিছু লক্ষণ থাকে যা অনেক সময়ে উপেক্ষা করেন অনেকে। দেহের কোনও অঙ্গ থেকেই অযথা রক্তপাত ভাল লক্ষণ নয়। শ্লেষ্মার সঙ্গে রক্ত ক্ষরণ বা লাল রঙের কফও ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

৪। গলার স্বরের পরিবর্তন: সাধারণ সর্দি কাশিতে যেমন গলা বসে যায়, তেমনই ফুসফুসের ক্যানসারের ফলেও বসে যেতে পারে গলা। ফলে দীর্ঘদিন গলা বসে যাওয়া, গলার স্বর ভারী হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি কাশির ধরনের পরিবর্তনও ক্যানসার কোষের বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে।

৫। বুকে ব্যথা: বুকে ব্যথা যদি কিছুতেই না কমে, তা হলে তা-ও ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় শ্বাস নেওয়ার সময় বা হাসতে গিয়ে ব্যথা অনুভূত হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। অল্প কাজে হাঁপিয়ে ওঠা বা ক্লান্ত লাগার মতো অসুবিধাও ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

৬। অন্যান্য লক্ষণ: ক্যানসার শরীরে বাসা বাঁধলে, প্রধান লক্ষণ ছাড়াও আরও বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। প্রায় যে কোনও ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেই দেখা যায় দ্রুত ওজন কমে যায় আক্রান্তের। ক্ষুধামান্দ্য, বার বার ঠান্ডা লাগা, দীর্ঘ দিন সংক্রমণ থেকে মুক্তি না পাওয়া ইত্যাদিও লক্ষণ হতে পারে এই মারণরোগের।