Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Side Effects of Overtime

রোজ সকলের চেয়ে বেশি ক্ষণ কাজ করেন? অফিসে বেশি সময় থাকলে কোন রোগ হতে পারে?

প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা অফিসের কাজ করেন অনেকেই। কারও কারও ক্ষেত্রে সময়টা তারও বেশি। চিকিৎসকরা বলছেন, এতটা সময় কাজ করলে প্রভাব পড়ে শরীরের উপর।

symbolic image of working at office.

৮ থেকে ১০ ঘণ্টার বেশি নিয়মিত কাজ করলে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৩৩
Share: Save:

অফিসে অতিরিক্ত সময় কাজ করলে কর্তৃপক্ষের মন পাবেন? এমন ভাবেন অনেকে। কিন্তু ফাঁক গলে বেরিয়ে যায় আরও গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবনা। ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার বেশি নিয়মিত কাজ করলে অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। সম্প্রতি তাইল্যান্ডে ৪৪ বছর বয়সি এক ব্যক্তির মৃত্যু।

কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজ দেখাতে গেলে নানা বিপদ ঘটতে পারে। তাইল্যান্ডের ওই যুবককে চরম পরিণতি পেতে হয়েছে। হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর কাজের মধ্যেই। কিন্তু তা ছাড়াও নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে এর কারণে।

১) ঘুমের সমস্যা

ঘরে বাইরে সমান তালে কাজ করতে গেলে পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন। এক জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার। হালের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, একমাত্র ঘুমের মধ্যেই মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলি আবার পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। কাটতে পারে উদ্বেগ এবং ক্লান্তি। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মে প্রত্যেকেরই ঘুমের একটি বৃত্ত আছে। অতিরিক্ত কাজের চাপে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠা বা ঘুমোতে যাওয়ার ওই চক্রটি বিঘ্নিত হলে তার প্রভাব পড়ে শরীরে। কারও কারও ক্ষেত্রে আবার অনিদ্রাজনিত সমস্যাও দেখা যায়।

২) ঘাড় এবং কোমরের সমস্যা

যে কোনও অফিসে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা থাকতেই হয়। দীর্ঘ ক্ষণ বসে বসে কাজ করে কোমর, ঘাড় এবং পিঠে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। তার উপর যদি আরও অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয়, সে ক্ষেত্রে ব্যথার পরিমাণ বাড়বে। বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের উপর করা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে দীর্ঘ ক্ষণ বসে কাজ করার ফলে মহিলাদের ঘাড়ে এবং পুরুষদের মধ্যে কোমরে ব্যথার সমস্যা বেড়ে গিয়েছে।

৩) হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি

ল্যানসেটে প্রকাশিত তথ্যতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করার ফলে বেড়ে যেতে পারে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। সেখানে বলা হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে গড়ে ৬১ থেকে ৭০ ঘণ্টা এবং ৭১ থেকে ৮০ ঘণ্টা কাজ করার অভ্যাস ‘করোনারি আর্টারি ডিজ়িজ়’ বা ধমনীর রোগ বাড়়িয়ে দিতে পারে যথাক্রমে ৪২ শতাংশ এবং ৬৩ শতাংশ।

 ল্যানসেটে প্রকাশিত তথ্যতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করার ফলে বেড়ে যেতে পারে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।

 ল্যানসেটে প্রকাশিত তথ্যতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করার ফলে বেড়ে যেতে পারে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। প্রতীকী ছবি।

৪) মানসিক অবসাদ

অতিরিক্ত কাজের চাপ থেকে বাড়তে পারে মানসিক অবসাদ। প্রত্যক্ষ ভাবে মানসিক অবসাদ শরীরে প্রভাব ফেলতে না পারলেও শারীরবৃত্তীয় নানা কাজে কিন্তু তার ছাপ ফেলে যায়। হার্টের রোগ, রক্তে শর্করার মাত্রা, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছাড়াও হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার নেপথ্যে রয়েছে মানসিক অবসাদের হাত।

৫) সম্পর্কে অবনতি

সারা দিনের অর্ধেকটা সময় যদি কর্মক্ষেত্রেই কাটিয়ে দিতে হয়, তা হলে পরিবার, বন্ধু, কাছের চেনা-জানা মানুষদের সময় না দিতে পারাটাই স্বাভাবিক। কোনও অনুষ্ঠান, বন্ধুদের জমায়েত কোনও কিছুতে অংশ নিতে পারলে নিজেও হীনমন্যতায় ভুগতে পারেন। ব্যক্তিগত পরিসরেও কাজ যদি শিকড় ছড়িয়ে বসলে ভালবাসার উষ্ণ সম্পর্কগুলোও অচিরেই ম্লান হয়ে যাবে।

৬) মদ্যপান এবং ধূমপান বেড়ে যাওয়া

নির্দিষ্ট সময়ের বেশি কাজ করা মানে সেই সংক্রান্ত উদ্বেগও বেড়ে যাওয়া। অনেকেই কর্মক্ষেত্রের এই উদ্বেগ সামাল দিতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ধূমপান করেন। কাজ শেষে একটু মদ্যপানও করে থাকেন কেউ কেউ। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কর্মক্ষেত্রে বাড়তে থাকা এই উদ্বেগ কিন্তু ধূমপান এবং মদ্যপানের মাত্রা অনেক গুণে বাড়িয়ে দেয়।

৭) কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়া

বেশি সময় কাজ করলে কাজের মান খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। স্ট্যানফর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে, যাঁরা সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা বা তার বেশি সময়ে অফিসে কাটান, তাঁদের কাজের মান খারাপ। খুব একটা উন্নত নয়। আবার বেশি কাজ দেখাতে গেলে তুলনায় ফাঁকিবাজ সহকর্মীদের খারাপ নজরেও পড়তে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Side Effects Overtime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy