কর্মব্যস্ত জীবনে লিভারের যত্ন নেওয়ার কিছু পন্থা। ছবি: সংগৃহীত।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনে বেশ কিছু বদল এসেছে। যার হাত ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন অসুখও। এমনই একটি অসুখ হল নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। মদ্যপান করলেই যে শরীরে ফ্যাটি লিভারের মতো রোগ বাসা বাঁধতে পারে, এ ধারণা ভুল। শীরের অ্যালকোহল উপস্থিত না থাকলেও এই অসুখ হতে পারে। নানা কারণে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
ডায়াবিটিস, স্থূলতা, উচ্চরক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে সতর্ক হওয়া জরুরি।
ফ্যাটি লিভার হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা টের পাওয়া যায় না। কারণ নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করানো নিয়ে আমাদের মধ্যে এখনও অনীহা রয়েছে। এই রোগ চুপিসারে শরীরে বাসা বাঁধে। ফ্যাটি লিভার থাকলে লিভার সিরোসিসের মতো প্রাণঘাতী রোগেও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে।
শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া, হঠাৎ ভুঁড়ি বেড়ে যাওয়া, হলুদ রঙের দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, ওজন অত্যন্ত বেড়ে যাওয়া, সারা ক্ষণ ক্লান্তি— এই উপসর্গগুলি ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ হতে পারে। অনেকের ধারণা, মদ্যপান করলেই এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। তবে কেবল মদ্যপান ছেড়ে দিলেই ঝুঁকি কমবে না। কম তেলমশলা দেওয়া খাবার খাওয়া, বাড়ির খাবারে অভ্যস্ত হওয়া, মদ ছেড়ে দেওয়া— এই অভ্যাসগুলিই লিভারকে ভাল রাখার অন্যতম উপায়।
এই অসুখকে ঠেকিয়ে রাখতে ডায়েটের উপর বিশেষ নজর দিতে হবে। তবে এগুলিই শেষ কথা নয়। লিভার ভাল রাখতে মেনে চলতে হয় আরও কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু কী কী?
ওজন কমান: শুধু সুন্দর দেখানোর জন্যই নয়, লিভার ভাল রাখতে চাইলেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। শরীরে কার্বহাইড্রেট-প্রোটিন-ফ্যাটের সঠিক ভারসাম্য থাকা ভীষণ জরুরি। তবে ইদানীং বাড়ির খাবার নয়, বরং রেস্তরাঁর খাবার, পাঁঠার মাংস, বাইরের ভাজাভুজি, প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেয়ে অভ্যস্ত। আর এর জেরেই শরীরে ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা বাড়ছে। লিভারের পক্ষে এই ফ্যাট মোটেই ভাল নয়।
চিনির খাওয়া কমান: সহজে রোগা হতে চেয়ে অনেকেই নিজের খুশি মতো ডায়েট প্ল্যান বানিয়ে নেন। চিনি বাদ দিয়ে দেদারে কৃত্রিম চিনির উপরেই ভরসা করেন। এতেই আসলে চরম ক্ষতি করছেন শরীরের। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের লিভারের ব্যাপক ক্ষতি করে। ফ্রুকটোজ হোক কিংবা কৃত্রিম চিনি, লিভারের অসুখ ডেকে আনে।
ব্যথার ওষুধ কম খান: বেশ কিছু বেদনানাশক ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে। কিছু প্যারাসিটামল বা কোলেস্টেরলের ওষুধও লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে। ঘুম না হলে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করেন। এই অভ্যাসের কারণে লিভারের জটিল রোগে ভুগতে হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে বেদনানাশক ওষুধ খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
ডায়েটে নজর: ডায়েটে প্রোটিন, সব্জি, ফল বেশি করে রাখতে হবে। কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা কমাতে হবে। ফ্যাটজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকাই ভাল। নুন, চিনি যত কম খাওয়া যায়, ততই ভাল। একেবারে অনেকটা খাবার না খেয়ে অল্প খাবার বার বার খাওয়ার অভ্যাস করুন।
জল বেশি করে খান: শরীর থেকে যতটা দূষিত পদার্থ বার করে দিতে পারবেন, লিভার ততটাই সুস্থ থাকবে। তাই বেশি করে জল খেতে হবে। তবেই প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের টক্সিন পদার্থগুলি বেরিয়ে যাবে। দিনে কয়েক বার গরম জলে পাতিলেবুর রস দিয়ে খান। ডায়েটে রাখুন টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy