‘ড্রাই আইজ়’ হলেও চোখ থেকে জল পড়ে। ছবি: সংগৃহীত।
এ এক অদ্ভুত সমস্যা! চোখ থেকে অনবরত জল পড়ছে কিন্তু চিকিৎসক বলছেন, এটি ‘ড্রাই আইজ়’-এর লক্ষণ।
মনে হচ্ছে চোখের ভিতর যেন বালি ঢুকে গিয়েছে। বেশি ক্ষণ ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের দিকে চেয়ে থাকতেও অস্বস্তি হচ্ছে। চোখ চুলকোচ্ছে, জ্বালা করছে। অজান্তেই বার বার হাত দিয়ে চোখ রগড়ে ফেলছেন। তাতে সাময়িক ভাবে অস্বস্তি এড়ানো গেলেও বিশেষ সুবিধা কিছু হচ্ছে না। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই সমস্যা বাড়াবাড়ি আকার ধারণ করতে পারে দীর্ঘ ক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকলে।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বাতাসের আর্দ্রতা শুষে নেয়। বদ্ধ ঘরে দীর্ঘ সময় এসি চললে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ একেবারে কমে যেতে পারে। আর বাতাসের আর্দ্রতা কমে গেলে তার প্রভাব পড়ে চোখের উপর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘ইভাপোরেটিভ ড্রাই আইজ়’। চোখের পাতায় থাকে এমন সব গ্রন্থি, যেগুলি থেকে জলীয় পদার্থ ক্ষরিত হয়। ক্ষরিত হয় স্নেহপদার্থও। দীর্ঘ সময় ধরে এসিতে থাকলে চোখের পাতায় থাকা এই লিপিড উৎপাদক গ্রন্থিগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রভাব পড়তে পারে অশ্রুগ্রন্থির উপরেও। সব মিলিয়ে চোখ চুলকানির সমস্যা বাড়ে। তার উপর দীর্ঘ ক্ষণ ‘স্ক্রিন টাইম’ অর্থাৎ, মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকার অভ্যাস এই সমস্যা আরও কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
‘ড্রাই আইজ়’-এর প্রধান উপসর্গ:
মাঝেমধ্যে চোখের সামনের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া ‘ড্রাই আইজ়’-এর একটি লক্ষণ। কোনও কারণ ছাড়াই চোখ থেকে অনবরত জল পড়লে তা-ও কিন্তু ড্রাই আইজ়ের কারণে হতে পারে। চোখ থেকে জল পড়ার অর্থ হল, ‘টিয়ার ফিল্ম’ চোখকে আর্দ্র রাখতে পারছে না। তাই শুষ্ক চোখকে আর্দ্র রাখতে জল উৎপাদন করছে। চোখে ব্যথা ও ক্লান্তিও কিন্তু এর একটি লক্ষণ। চোখে যখন জল কমে যায়, তখন বার বার পলক ফেলে চোখ নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। ফলে চোখের পাতার পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে।
‘ড্রাই আইজ়’-এর সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী কী সুরক্ষা নেবেন?
১) চোখের পাতায় কোনও ধুলোবালি জমতে দেবেন না। ধুলো থেকেই সংক্রমণ হতে পারে। সেই কারণে চোখ সব সময়ে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। বাইরে থেকে ফিরে ভাল করে চোখ ধুয়ে নিতে হবে। চোখে-মুখে জল দেওয়ার আগে ভাল করে ত্বক পরিষ্কার করে নিন। তবে ঘণ্টায় ঘণ্টায় চোখে জলের ঝাপটা দেওয়ার অভ্যাস খারাপ। দিনে দুই থেকে তিন বারের বেশি জলের ঝাপটা না দেওয়াই ভাল, নইলে চোখের জল ধুয়ে গিয়ে আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
২) সারা দিন কনট্যাক্ট লেন্স পরে থাকলেও কিন্তু এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দিনে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি লেন্স পরে না থাকাই ভাল।
৩) দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে না থাকাই ভাল। অফিসে থাকলেও মাঝেমাঝে বিরতি নিতে হবে। মোবাইলে ফোনের দিকে টানা অনেক ক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন না।
৪) সারা দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া প্রয়োজন। জল খেলে শরীর আর্দ্র থাকে। এ ছাড়াও তরমুজ, শসা, স্ট্রবেরির মতো জলযুক্ত ফল বেশি করে খান। এতে শরীরে জলের ঘাটতি তৈরি হবে না।
৫) মাঝেমাঝে চোখে গরম ভাপ বা ‘হট কম্প্রেস’ দিতে পারেন। চোখ শুষ্ক হয়ে গেলে কিন্তু এই টোটকা বেশ কাজে দেয়। দিনে দুই থেকে তিন বার চোখে কাপড়ের সেঁক দিতে পারলে চোখের ক্লান্তি দূর হবে, ব্যথাও কমবে আর আরামও পাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy