ফাইব্রোমায়ালজিয়া কী? ছবি: সংগৃহীত।
রোজই ভাবেন, কাজ থেকে ফিরে ভাল করে গোটা শরীরে তেল মালিশ করবেন। সারা গায়ে এমন ব্যথা, যেন মনে হয় খুব পরিশ্রমের কাজ করেছেন। অথচ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে, এক জায়গায় বসে কাজ। খুব যে দৌড়ঝাঁপ করতে হয়, তা-ও নয়। কাজ থেকে ফিরে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করলে ব্যথা কমে। তবে, ঠান্ডার সময়ে রোজ রাতে স্নান করাও ভাল নয়। কারও কারও ক্ষেত্রে তীব্র মাথাযন্ত্রণা কিংবা কোমর-পিঠেও ব্যথা হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা-যন্ত্রণাকে সাধারণ ভেবে খুব একটা পাত্তা দেন না অনেকে। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, এই উপসর্গ কিন্তু ‘ফাইব্রোমায়ালজিয়া’-র হতে পারে।
ফাইব্রোমায়ালজিয়া কী?
চিকিৎসকেরা বলছেন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগের কারণে অনেকেরই রাতে ঘুম হয় না। ঘুমের ঘাটতি থাকলে ফাইব্রোমায়ালজিয়া হতে পারে। মানবদেহের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি হরমোন হল সেরোটোনিন। এই হরমোনের হেরফের হলে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ে। ফলে ক্লান্ত বোধ করা অস্বাভাবিক নয়। কেউ কেউ আবার অল্পতেই রেগে যান। কোনও কারণ ছাড়াই কারও মেজাজ বিগড়ে যায়। সারা শরীরে প্রদাহ বাড়তে থাকে। ঘুমের অভাব হলে বা অনিদ্রাজনিত সমস্যা থাকলে শরীরে উপস্থিত নানা রকম নিউরোকেমিক্যালের মধ্যে ভারসাম্যের অভাব দেখা যায়। যার ফলে বিভিন্ন ‘ট্রিগার পয়েন্ট’ থেকে সারা শরীরে তীব্র ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ঘাড়ে বা কাঁধে ব্যথা হলে অনেকেই তা স্পন্ডিলাইটিসের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। পিঠে বা কোমরে এই ধরনের ব্যথা হলে অনেকেই মনে করেন, একটানা বসে থাকার জন্য এমনটা হচ্ছে। আসলে তা নয়। এগুলি ফাইব্রোমায়ালজিয়ার লক্ষণ হতেই পারে।
ফাইব্রোমায়ালজিয়ার সঙ্গে মনেরও অনেকটা যোগ রয়েছে। একটানা অনেক ক্ষণ কাজ করলে অবসন্ন, ক্লান্ত বোধ করতেই পারেন। তাই আধ ঘণ্টা বা ৪০ মিনিট অন্তর কাজ থেকে বিরতি নিতে পারলে ভাল। অনেক ক্ষণ টানা দাঁড়িয়ে থাকা, ভারী জিনিস তোলার মতো কাজ করলেও ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই। বিশ্রাম এবং শরীরচর্চায় এই ধরনের যন্ত্রণা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক গবেষণা বলছে, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গন্ধচিকিৎসা বা অ্যারোমাথেরাপিও বেশ কার্যকর। পরোক্ষ ভাবে হলেও তা ফাইব্রোমায়ালজিয়ার উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন গন্ধচিকিৎসাবিদেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy