সারা দিন ল্যাপটপে বা টেবিলে খাতাপত্রের মাঝে কাজ। শরীরকে সচল রাখার জন্য নামমাত্র সময় বার করাও কঠিন। হাঁটারও সুযোগ নেই। আর তাই অনেকে বুদ্ধি করে নিজেকে সক্রিয় রাখার নানা উপায় বার করেন। যেমন, অফিস বা বাড়ির লিফ্ট ব্যবহার না করে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা। তাতে অল্প হলেও সচল থাকে শরীর। বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানেই যদি ভুল থেকে যায়?
সুরাতের অস্থিরোগ চিকিৎসক রাজীব রাজ চৌধরি জানাচ্ছেন, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামায় ভুল থাকলে পেশির সমস্যায় ভুগতে হয়। তিনি বলছেন, ‘‘সিঁড়ির ধাপে পায়ের পাতার কতখানি অংশ রাখা উচিত, সেটি অনেকেই জানেন না। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়ে কেউ কেউ পায়ের কেবল সামনের অংশটুকু ফেলেন। আর তাতেই সমস্যার সুত্রপাত। গোটা শরীরের ভার পড়ে ওইটুকু অংশে। কিন্তু পায়ের গোটা পাতাই ধাপে রেখে উঠতে হবে। তা ছাড়া রেলিংয়ে ভর দিয়ে সিঁড়ি ভাঙা উচিত। খেয়াল রাখতে হবে, সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় প্রথম পদক্ষেপ খুব গুরুত্বপূর্ণ। উপরে ওঠার সময় জোরদার পা-ই যেন আগে পড়ে। অপেক্ষাকৃত দুর্বল পা নয়। কিন্তু নীচে নামার সময়ে আবার উল্টো নিয়ম। দুর্বল পা আগে বাড়াতে হবে। নয়তো হাঁটুতে যন্ত্রণা শুরু হতে পারে।’’

সিঁড়ির ধাপে পায়ের পাতার কতখানি অংশ রাখা উচিত, সেটি অনেকেই জানেন না। ছবি: সংগৃহীত।
একই সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে, হাঁটুতে চাপ কমানোর জন্য ধীরে ধীরে ওঠানামা করতে হবে। খুব দ্রুত সিঁড়ি ভাঙলে হাঁটুতে ব্যথা বাড়বে। আগে থেকেই সমস্যা থাকলে সিঁড়ি এড়িয়ে চলা ভাল। কিন্তু যদি এমন হয়, সিঁড়ি ছাড়া উপায় নেই, তা হলে রেলিংয়ের উপর ভরসা রাখতে হবে। ভারী জিনিসপত্র হাতে থাকলে লিফ্ট ব্যবহার করাই ভাল। সিঁড়ি ভাঙলে হাঁটু, কোমরের তলার অংশ বা নিতম্বের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে ব্যথা হয়।
অস্থিরোগ চিকিৎসার সিনিয়র কনসালট্যান্ট মুম্বইয়ের অনুপ খাত্রির পরামর্শ, ওঠানামা করার সময়ে উপযুক্ত জুতো ব্যবহার করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় যদি গাঁটে অসহ্য ব্যথা অনুভব করেন, তা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এটি সম্ভবত অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত। অপ্রয়োজনীয় ভেবে উপেক্ষা করলে এই ব্যথা উল্টে বেড়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন:
তাঁর বক্তব্য, রোজ ৪৫ মিনিট শরীরচর্চা করলে আপনার হাঁটুর সমস্যা দূর হতে পারে।