বয়সকালে নিয়মিত যোগাভ্যাস করলে অবশ্যই সুস্থ থাকা যায়। প্রতীকী ছবি।
বয়স বেড়েছে মানেই শরীরে বাসা বেঁধেছে একাধিক রোগ-ব্যাধি। দিন দিন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে প্রেসক্রিপশনে ওষুধের নামগুলি। তার পরেও সব কিছু ঠিক নেই। আজ পায়ে ব্যথা, কাল হজমের সমস্যা, পরশু ঘুম আসছে না— কিছু না কিছু তো লেগেই আছে।
তবে কি বয়সের ভারের থেকে বেরিয়ে এসে মোটের ওপর সুস্থ থাকা সম্ভব নয়? আলবাত সম্ভব! বয়সকালে নিয়মিত যোগাভ্যাস করলে অবশ্যই সুস্থ থাকা যায়।
যোগাসন এবং প্রাণায়াম অধিক বয়েসে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা থেকে মানুষকে অনায়াসে মুক্তি দিতে পারে। নিয়মিত যোগাভ্যাস কোষের জীবনকাল বৃদ্ধি করে, শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে পারে। সব মিলিয়ে বয়সের ছাপ শরীর ও মন থেকে মুছে ফেলতে যোগাসন ও প্রাণায়ামের জুড়ি মেলা ভার।
হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস সুস্থ রাখতে কিছু প্রাণায়াম করতেই হবে—
শ্বাসের ব্যায়াম: সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু’হাত দেহের দু’পাশে রাখুন। চোখ বন্ধ করে দু’হাত ধীরে ধীরে মাথার উপরে তুলুন। হাত তোলার সঙ্গে সঙ্গে খুব ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। আবার ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দু’হাত নামিয়ে আনুন। এ ভাবে অভ্যাস করুন।
ইন্টার কস্টাল ব্রিদিং: দু’টি পাঁজরের মধ্যবর্তী স্থানকে ইন্টার কস্টাল স্পেস বলে। প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পাঁজরের মধ্যবর্তী অংশের ডান দিকে ডান হাতের তালু এবং বাঁ দিকে বাঁ হাতের তালু রাখুন। এ বার শ্বাস নিয়ে ওই মধ্যবর্তী অংশকে সম্প্রসারণ এবং শ্বাস ছেড়ে সংকোচন করুন। যতটা শ্বাস গ্রহণ করবেন ততটাই ছাড়তে হবে।
ডিপ ব্রিদিং এক্সেলেশন থ্রু মাউথ: প্রথমে দু’হাত দেহের দু’পাশের উরুতে রেখে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এ বার নাক দিয়ে শ্বাস গ্রহণ করুন। এরপর সামান্য সামনে ঝুঁকে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এ ভাবে অভ্যাস করুন।
ভুজঙ্গাসন: মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ বার হাতের তালু মেঝের উপর ভর দিয়ে পাঁজরের দুই পাশে রাখুন। এরপর কোমর থেকে পা পর্যন্ত মাটিতে রেখে হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে বাকি শরীরটা ধীরে ধীরে উপরের দিতে তুলুন। এরপর মাথা বেঁকিয়ে উপরের দিকে তাকান। এই ভঙ্গিতে ২০-৩০ সেকেন্ড থাকার পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যান। প্রথম দিকে এই আসন তিন বার করুন। পরবর্তীকালে ৫-৬ বারও করতে পারেন। এই আসনে মেরুদণ্ডের ভাল উপকার হয়। তবে হার্টের সমস্যা থাকলে এই ব্যায়াম করা যাবে না।
উত্থান পদাসন: বয়সকালে অনেকেই আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় ভোগেন। এ ক্ষেত্রে চেয়ারে বসে উত্থান পদাসন ব্যায়ামটি বেশ উপকারী। প্রথমে চেয়ারে বসে পড়ুন। দুই হাত শরীরের দু’পাশে রাখুন। এ বার স্বাভাবিক শ্বাস নিতে নিতে দু’টি পা জোড়া অবস্থাতেই মাটি থেকে যতটা সম্ভব তুলুন। প্রথমেই দু’টি পা তুলতে না পারলে একটি পা তুলেও আসনটি অভ্যাস করতে পারেন।
উড্ডীয়ন: বয়সের ভারে হজমের সমস্যা দেখা দেওয়া বেশ স্বাভাবিক। এই সমস্যার সমাধানে উড্ডীয়ন আসনটি করতেই পারেন। প্রথমে পা দু’টি ফাঁক করে দাঁড়ান। এ বার সামান্য সামনের দিকে ঝুঁকে, হাঁটু ভেঙে হাত দু’টি উরুর উপর রাখুন। এই অবস্থায় ঘাড় ও কাঁধের মাংস পেশি টানটান করুন এবং পেটের অংশের পেশি হালকা করে ফেলুন। এর পর ধীরে ধীরে নিশ্বাস ছাড়ুন। তার পর দম বন্ধ রেখে পেট যতটা সম্ভব ভিতরের দিকে টেনে আনুন। এই অবস্থায় পাঁচ-দশ সেকেন্ড থাকার চেষ্টা করুন। এর পর ধীরে ধীরে পেট স্বাভাবিক করুন। স্বাভাবিক শ্বাস নিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy