সম্পূর্ণ সুস্থ থাকার জন্য হাড়ের সুস্বাস্থ্য কিন্তু খুব প্রয়োজন। ছবি: সংগৃহীত।
সম্পূর্ণ সুস্থ থাকার জন্য হাড়ের সুস্বাস্থ্য কিন্তু খুব প্রয়োজন। এবং ক্যালশিয়াম বরাবরই মজবুত এবং সুস্থ হাড়ের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি খনিজ। তবে শুধুমাত্র ক্যালশিয়াম নয়, মজবুত হাড়ের জন্য আরও কিছু বিষয় সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মজবুত হাড় বজায় রাখতে শরীরের ক্যালশিয়াম শোষণ করার ক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যালশিয়াম গ্রহণ এবং ক্যালশিয়াম শোষণের মধ্যে কী সম্পর্ক, তা জেনে রাখা প্রয়োজন। কী ভাবে এই দুটো বিষয় আমাদের হাড় সুস্থ রাখতে সাহায্য করে?
ক্যালশিয়ামের গুরুত্ব
ক্যালশিয়াম একটি খনিজ যা বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য অতি আবশ্যক। তবে এর প্রাথমিক ভূমিকা হাড়ের কাঠামো এবং শক্তি বজায় রাখা। আমরা যখন আমাদের শরীরকে, খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম সরবরাহ করতে পারি না, তখন শরীর হাড় থেকে ক্যালশিয়াম শোষণ করে। এবং তার ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হাড় দুর্বল হতে থাকে। এটি প্রতিরোধ করার জন্য ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন।
ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
দুধ, পনির এবং দইয়ের মতো দুগ্ধজাত খাবার-সহ আরও অনেক খাবারই ক্যালশিয়ামের দুর্দান্ত উৎস। উপরন্তু, শাক, আমন্ড বাদাম, তিল এবং ফরটিফাইড ফুড যেমন দুধ, দই, ওটমিল ইত্যাদি এই সব খাবারগুলিও ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ। যদিও এই খাবারগুলি উপকারী, তবে এটাও বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, কেবলমাত্র ক্যালশিয়াম গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি, হাড়ের সর্বোত্তম স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে না।
ক্যালশিয়াম শোষণ এবং ভিটামিন ডি-র ভূমিকা
আমরা যে খাবারগুলি খাই তাতে উপস্থিত ক্যালশিয়াম গ্রহণ এবং ব্যবহার করার শরীরের ক্ষমতাকে ক্যালশিয়াম অ্যাবসর্বশন (শোষণ) বলে। এই বিষয়টি বিভিন্ন কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়, যেমন বয়স, শরীরের হরমোনাল ব্যালেন্স এবং অন্যান্য খাদ্যের উপাদান। ক্যালশিয়াম শোষণের জন্য ভিটামিন ডি খুব প্রয়োজন। কারণ, ভিটামিন ডি শরীরকে ক্যালশিয়াম শোষণ করতে সাহায্য করে। তাই পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম গ্রহণ সম্পূর্ণ রূপে কার্যকর না-ও হতে পারে যদি পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি শরীরে না থাকে।
ম্যাগনেশিয়ামের ভূমিকা
ক্যালশিয়াম অ্যাবসর্বশন-এর আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ম্যাগনেশিয়াম। ম্যাগনেশিয়াম হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ক্যালশিয়ামের সঙ্গে একত্রে কাজ করে। এটি শরীরে ভিটামিন ডি সক্রিয় করতে সাহায্য করে। বাদাম, বীজ এবং হোল গ্রেন-এর মতো খাবারগুলি ম্যাগনেশিয়ামের দুর্দান্ত উৎস এবং এই খাবারগুলি হাড়-স্বাস্থ্যকর ডায়েটে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
ভারসাম্যপূর্ণ পদ্ধতি:
শক্তিশালী হাড় বজায় রাখার জন্য, শুধুমাত্র বেশি পরিমাণে ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলেই হয় না। একটি ব্যালেন্স ডায়েট ও পদ্ধতি অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা ক্যালশিয়াম গ্রহণ, ভিটামিন ডি এবং ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা বিবেচনা করে। উপরন্তু, পেশি শক্তিশালী করার ব্যায়াম এবং স্ট্রেংথ ট্রেনিং বা ওয়েট ট্রেনিং হাড়ের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে পারে এবং হাড়ের ঘনত্ব (বোন ডেনসিটি) বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
সুতরাং, ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারগুলি হাড়ের স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও শরীরে সেই ক্যালশিয়াম খাবারের মাধ্যমে যাওয়ার পরে তা শোষণ এবং ব্যবহার করার ক্ষমতা বিবেচনা করাও সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্যকর হাড় বজায় রাখতে শুধুমাত্র পর্যাপ্ত ক্যালশিয়াম খেলেই হয় না। তার জন্য ক্যালশিয়াম গ্রহণ, শোষণ এবং সামগ্রিক পুষ্টির মধ্যে ভারসাম্য বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। এবং এই দিকগুলির উপর ফোকাস করে, হাড় সারা জীবন সুস্থ এবং মজবুত রাখতে সক্রিয় পদক্ষেপ করা যেতে পারে।
(লেখক ইউকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন এবং পেশায় পুষ্টিবিদ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy