হিট স্ট্রোক এড়াতে কোন ফলে রাখবেন ভরসা? ছবি: পিটিআই।
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে ক্রমশ বাড়ছে তাপমাত্রা। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, এখনই তাপপ্রবাহ কমার কোনও পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। এই গরমে সুস্থ থাকতে চিকিৎসকেরা বারবার চড়া রোদ এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। বাড়ি থেকে কাজ করার অবকাশ নেই, কাজের জন্য চড়া রোদ মাথায় নিয়েই অফিসে যেতে হবে। তীব্র দাবদাহে বাইরে সুস্থ থাকতে খাদ্যাভ্যাসে বদল আনা জরুরি। গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর জল খাওয়ার কথা বলছেন চিকিৎসকেরা। সুস্থ থাকতে শরীর আর্দ্র রাখা খুব প্রয়োজন। তাই বাইরে বেরোলেই সব সময়ে সঙ্গে রাখুন জলের বোতল। বাইরে বেরোলে ব্যাগে কেবল জলের বোতল রাখলেই হবে না, ফলও রাখতে হবে।
বাসে-ট্রেনে যাতায়াতের সময়ে আবার অল্প-অল্প মাথাও ঘুরছে। কাঠফাটা গরমে এই রকম অভিজ্ঞতা কমবেশি সকলেই হয়। এই লক্ষণগুলি অবহেলা করার ফল কিন্তু ভুগতে হতেই পারে আপনাকে। নিয়মিত এ রকম চলতে থাকলে সংজ্ঞা হারানো, বুক ধড়ফড় করা, নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা, এমনকি হিট স্ট্রোকের মতো বিপত্তিতেও পড়তে হতে পারে।
পুষ্টিবিদদর মতে, এই সব সমস্যার সূত্রপাত হয় শরীরে জলের ঘাটতির কারণে। নিঃশ্বাস, ঘাম, প্রস্রাবের মতো নানা শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত যে জল বেরিয়ে যায়, তা পূরণ হয় খাদ্য-পানীয়ের মাধ্যমে। যখন শরীরে এই জলের জোগান কম পড়ে, তখনই শুরু হয় ডিহাইড্রেশনের সমস্যা।
অনেকেই আছেন যাঁরা বাড়ি থেকে ফল না নিয়ে গিয়ে রাস্তার ধারের কাটা ফলের উপরেই ভরসা রাখেন। এই অভ্যাস উল্টে স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি করে। রাস্তার ধারে যে কাটা ফল বিক্রি হয়, তাতে মাছির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়। এই খাবার খেলে পেটের গোলমাল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই বাড়ি থেকেই নিজের টিফিন নিয়ে যেতে হবে সঙ্গে। তবে যে কোনও ফল নয়, এমন ফল রাখতে হবে সেই টিফিনে, যাতে শরীরে জলের মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। জেনে নিন হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে কোন কোন ফল খাবেন, যাতে ওজন বাড়বে না আর রক্তের শর্করার মাত্রাও থাকবে নিয়ন্ত্রণে।
১) ডাবের জল: গরম থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হল ডাবের জল। এতে পেট ঠান্ডা থাকে। সঙ্গে থাকে বেশ কিছু পুষ্টিগুণও। ডাবের জল শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে। গ্রীষ্মের দিনে ডাবের জল খেলে তাই শরীর চাঙ্গা থাকে। রোদের মধ্যে ডাবের জল খেতে নীচে নামার প্রয়োজন নেই, বাড়ি থেকেই বোতলে ভরে নিয়ে যান।
২) কাঁচা আম: এই ফল শরীর থেকে টক্সিন বার করে দিতে সাহায্য করে। এটি শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে দারুণ উপকারী। গরমের দিনে এই ফল খেলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। এই সময়ে নুন দিয়ে কাঁচা আম খেতে পারেন। তা ছাড়া কাঁচা আমপোড়া শরবত কিংবা কাঁচা আম মাখাও শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
৩) শসা: এই ফলে জলের মাত্রা ৯৫ শতাংশ। ফল হিসেবে কাঁচা খাওয়া যায়। আবার কেউ কেউ শসা দিয়ে নানা পদ রান্নাও করে ফেলেন। এই সময়ে শসার মতো খাবার কমই আছে। শরীর ঠান্ডা রাখে, পেট ভর্তি করে। ত্বকের জন্যও এই ফল দারুণ উপকারী। টিফিনে এই ফল কিন্তু রাখতেই পারেন।
৪) তরমুজ: এই ফলের প্রায় ৯০ শতাংশ হল জল। অর্থাৎ, শরীরে জলের জোগান দিতে যথেষ্ট পরিমাণে তরমুজ খাওয়া যেতে পারে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি। ক্যালোরির মাত্রাও কম। তাই তরমুজ খেলে ওজন বৃদ্ধির ভয়ও নেই। তা ছাড়া, ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্যও এই ফল ভাল।
৫) ফুটি: এতে প্রায় ৯০ শতাংশ জল থাকে। মিষ্টি গন্ধে ভরা ফুটির পুষ্টিগুণ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় দারুণ কাজ দেয় এই ফল। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর ফুটির বীজ বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy