প্রায় সারা বছরই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন। অনেকের কাছেই শুনেছেন, এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে ওট্স। কারণ, এই খাবারে সহজপাচ্য ফাইবারের পরিমাণ বেশি। এ ছাড়া ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও নাকি সাহায্য করে ওট্স। তাই সকালের জলখাবারে ওট্স থাকা আবশ্যক। কখনও পরিজ়, আবার কখনও তা দিয়ে খিচুড়ি বানিয়ে নিন সকালের জলখাবারে। ওট্স খেলে বেশ অনেক ক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকে। মুশকিল হল, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা! সে যে তিমিরে ছিল, তেমনই রয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রে ওট্স উপকারী হলেও আপনার খুব একটা কাজে লাগছে না, কেন?
আরও পড়ুন:
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সাহায্য করে ফাইবার। ওট্সে ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তবে ফাইবার দু’ধরনের হয়। সলিউবল ফাইবার জল শোষণ করে বেশি। তাই জলে পড়লে তা থকথকে জেলির মতো হয়ে যায়। ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইনসলিউবল ফাইবার আবার জল শোষণ করে না। বরং খাবার পরিপাক করার পর অবশিষ্টাংশ দ্রুত বর্জ্যে পরিণত করতে সাহায্য করে। তাই বলে গাদাগুচ্ছের ফাইবার খেয়ে ফেলাও কাজের কথা নয়। তার নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে।
আমেরিকার কৃষি দফতরের দেওয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কেরা রোজ ২২ থেকে ৩৪ গ্রাম পর্যন্ত ফাইবার খেতে পারেন। তার বেশি ফাইবার খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ২০১৯ সালে ‘অ্যানাল্স অফ দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ওট্সে রয়েছে বিটা-গ্লুকান, যা অন্ত্রের মধ্যে থাকা ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। প্রদাহজনিত সমস্যা এবং কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রুখে দিতে পারে।
আরও পড়ুন:
ওট্স কখন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়?
ফাইবার অনেকটা পরিমাণে জল শোষণ করে। ওট্স খাওয়ার পর পর্যাপ্ত জল না খেলে ‘বাওয়েল মুভমেন্ট’ স্বাভাবিক হয় না। আবার, আচমকা শরীরে অনেকটা পরিমাণ ফাইবার প্রবেশ করলে পরিপাকতন্ত্র খানিক বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই পেটফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হতে পারে।
কোষ্ঠ পরিষ্কার করতে দু’ধরনের ফাইবারই প্রয়োজন। ওট্সে সলিউবল বা জলে দ্রবণীয় ফাইবারের পরিমাণ বেশি। কিন্তু ইনসলিউবল ফাইবার একেবারে নেই বললেই চলে। তাই ওট্সের সঙ্গে এমন খাবার খেতে হবে, যেটির মধ্যে ইনসলিউবল ফাইবার রয়েছে। তবেই সমস্যার সমাধান হবে।