Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Mental Pressure

মনের চাপ কি মস্তিষ্কের টিউমারের কারণ? এর থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় কী?

‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই)’-এর তথ্য বলছে, মস্তিষ্কে টিউমার হওয়ার পিছনে অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে একটি হল অত্যধিক মানসিক চাপ।

Can Mental Stress cause Brain Tumour

অত্যধিক মানসিক চাপ মস্তিষ্কের জটিল অসুখের কারণ হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ ১৪:০৭
Share: Save:

মস্তিষ্কে টিউমার মানেই আতঙ্ক। মস্তিষ্কে টিউমার বাসা বেঁধেছে শুনলেই রোগীর আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়। এমন ধারণাও আছে যে, মস্তিষ্কে টিউমার মানেই মৃত্যু। বাঁচার আর কোনও আশাই নেই। ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন (এনসিবিআই)’-এর তথ্য বলছে, মস্তিষ্কে টিউমার হওয়ার পিছনে অনেক কারণ আছে। তার মধ্যে একটি হল অত্যধিক মানসিক চাপ।

এনসিবিআই-এর গবেষকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন, মস্তিষ্কের যে কোনও জটিল রোগের জন্য মানসিক চাপ অনেকাংশেই দায়ী। মনের উপর চাপ যত বাড়বে, ততই তার রেশ পড়বে মস্তিষ্কের কোষে। ধীরে-ধীরে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যেতে থাকবে। আমাদের মগজে যে স্নায়ুর জাল রয়েছে সেখানেও গভীর প্রভাব পড়বে। মস্তিষ্কের কোষের অনিয়মিত বিভাজন হতে শুরু করবে এবং তা থেকেই ক্যানসার কোষের জন্ম হবে।

বর্তমানে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের ব্যস্ততা বেড়েছে বহুগুণ। মানসিক চাপ, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা এখন নিত্যসঙ্গী। প্রতিযোগিতার দৌড়ে মন ভাল থাকছে না, ঘন-ঘন মেজাজ বদলে যাচ্ছে, সেই সঙ্গেই চেপে বসছে অবসাদ। সব মিলিয়ে মন ও মস্তিষ্কের উপর পাহাড়প্রমাণ চাপ জমা হচ্ছে। আর এ সবই ভবিষ্যতে মস্তিষ্কের জটিল রোগের কারণ হয়ে উঠছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ হল মনের একটা জটিল অবস্থা, যেখানে স্বাভাবিক চিন্তা-ভাবনার পথটা বন্ধ হয়ে যায়। কোনও ব্যক্তি যদি দীর্ঘ সময় ধরেই প্রচণ্ড মানসিক চাপে ভুগতে থাকেন, তা হলে এক সময়ে তা মস্তিষ্কের উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে। এনসিবিআই জানাচ্ছে, মানসিক চাপের জন্য স্নায়ুর রোগ হয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ‘নিউরোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার’-এর কারণ হয়ে উঠেছে। আর এই অবস্থাই পরবর্তী সময়ে গিয়ে মস্তিষ্কের টিউমারের কারণ হয়েছে।

মনের চাপ দূর হবে কী করে?

১) মানসিক চাপ দূর করতে সবচেয়ে আগে মনকে চিন্তামুক্ত রাখতে হবে। তার জন্য ‘মেডিটেশন’, মানে ধ্যান করা খুব জরুরি। সকাল, সন্ধে বা রাত— যে-কোনও সময়ে আপনি ধ্যান করতে পারেন। যে সময়ে আপনার চারপাশের পরিবেশ শান্ত থাকে, সেই সময়টা ধ্যানের জন্য বেছে নিন। দিনের সব কাজ সেরেই ধ্যানে বসুন। কাজ মিটলেই মনে অন্য চিন্তা আসবে না। আর ধ্যানের সময় চিন্তাভাবনা সরিয়ে রাখা জরুরি।

২) পেশাগত কাজ ছাড়াও নানা রকম সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। ভাল বই পড়ুন, গান শুনুন, সিনেমা দেখুন, ছবি আঁকুন। মনটাকে ডানা মেলতে দিন নিজের মতো। দেখবেন, অনেক হালকা লাগছে।

৩) দিনে ২০ থেকে ৩০ মিনিট বরাদ্দ রাখুন শরীরচর্চার জন্য। সারা শরীরের ব্যায়াম হলে রক্ত চলাচল ভাল হবে। মজবুত হবে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা। এতে শরীর ও মনের যে কোনও জটিল অসুখের ঝুঁকি কমবে।

Can Mental Stress cause Brain Tumour

মনের চাপে কী কী ক্ষতি হতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।

৪) শহরের ব্যস্ত জীবন ও দূষণ যেমন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক, তেমনই আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকারক। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সারা দিনের মধ্যে অন্তত ৩০ মিনিট সবুজ গাছপালা, প্রকৃতির মাঝে থাকা ও বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণের অভ্যাস আমাদের ফুসফুসকে সুস্থ রাখে। রক্তচাপ কমায়, সঙ্গে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও ‘হ্যাপি হরমোন’ (ডোপামিন)-এর ক্ষরণ বৃদ্ধি করে, যার ফলে মন ভাল থাকে।

৫) একা থাকার অভ্যাস, মেলামেশা না-করা মানসিক চাপের অন্যতম কারণ। অনেকেই নিজের পরিবারে সকলের মধ্যেও একা থাকতে পছন্দ করেন। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে মেলামেশাও কম করেন। এইসব থেকেই একাকীত্বের বোধ তৈরি হয়। তাই মেলামেশা, কথাবার্তা বাড়াতে হবে। খুব কাছের মানুষজনের সঙ্গেও সমস্যার বিষয়গুলি আলোচনা করলে মন অনেক হালকা লাগবে। মনের উপর চাপ জড়ো হবে না।

৬) শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা— এই দুই ক্ষেত্রেই সুষম খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর সুষম ডায়েট ‘কর্টিসল’ হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যার ফলে মানসিক চাপ কম হয়। মনের স্বাস্থ্যও ভাল থাকে।

অন্য বিষয়গুলি:

stress Mental Stress Brain Tumor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy