গর্ভনিরোধক বড়ি খেলে কি পরে গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে? ছবি: শাটারস্টক
অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা এড়িয়ে চলার অন্যতম নিরাপদ উপায় গর্ভনিরোধক বড়ি। কিন্তু এই ওষুধ নিয়ে অনেকের মনেই ভয় রয়েছে। তার বেশির ভাগই যদিও ভ্রান্ত। কেউ মনে করেন, এগুলি খেলে মোটা হয়ে যাবেন। কেউ মনে করেন, এর ফলে ক্যানসার অনিবার্য। কিন্তু সত্যিই কি তাই? এই ধারণাগুলির সত্যতা কতটা?
গর্ভনিরোধক বড়ি মূলত তিন ধরনের। প্রথমত, কম্বাইনড পিল, যাতে ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন— দু’ধরনের হরমোনই থাকে। এই ওষুধই সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত। ঋতুচক্র অনুযায়ী খেতে হয় এটি। ঋতুস্রাবের প্রথম দিন থেকে চতুর্থ দিনের মধ্যে খাওয়া শুরু করে ২১ দিন পর্যন্ত একটানা রোজ একটা করে খেয়ে যেতে হয়। দ্বিতীয়ত, জরুরিকালীন কন্ট্রাসেপশন। সঙ্গমের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খেতে হয় এই বড়ি। এতে হাই ডোজ় প্রোজেস্টেরন দেওয়া থাকে। তৃতীয়ত, শুধু মাত্র প্রোজেস্টেরন ওষুধ, যেটি নিয়মিত একটি করে খেতে হয়। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিছু বছর আগেও গর্ভনিরোধক বড়িতে যে পরিমাণ ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন হরমোন ব্যবহার করা হত, এখন তার তুলনায় অনেকটাই কম ব্যবহার করা হয়। অথচ এর ফলে সন্তানধারণের ঝুঁকি কিন্তু মোটেই বাড়ছে না।
নিয়মিত এই প্রকার ওষুধ খেলে কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়?
এই ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম। কিছু ক্ষেত্রে মাথাব্যথা, খিদে না পাওয়া, সামান্য স্পটিং বা ব্লিডিং দেখা যেতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে। সাধারণত পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি কমেও যায়। অবশ্য কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন ওষুধ নিলে যোনি অঞ্চল শুষ্ক হয়ে যায়, যৌনমিলনে অনীহাও দেখা যেতে পারে। তবে, এই ধরনের সমস্যা খুবই কম। বরং নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার ফলে দেখা গিয়েছে, ডিম্বাশয়ে ক্যানসার, কোলন ক্যানসার, স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। এমনকি, ওষুধ খাওয়া বন্ধ করার পরের পাঁচ থেকে দশ বছর ডিম্বাশয়ে ক্যানসারের ভয়ও কম থাকে। শুধুমাত্র গর্ভনিরোধক হিসাবেই নয়, যাঁরা অনিয়মিত পিরিয়ডস বা অত্যধিক রক্তপাতের সমস্যায় ভোগেন, তাঁরাও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেতে পারেন।
কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে এই প্রকার বড়ি নিয়মিত খাওয়া নিরাপদ নয়। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়মিত প্রেশার মাপতে বলা হয়। প্রেশার বেড়ে গেলেই ওষুধ বন্ধের পরামর্শ দেওয়া হয়। যাঁরা ধূমপান করেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও কম্বাইনড ওষুধ বেশি দিন খাওয়া যায় না। কারণ, অনেক সময়ে তাঁদের ডিপ ভেন থ্রম্বোসিস বা পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এই প্রকার বড়িতে ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেশি থাকার কারণে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, স্ট্রোক কিংবা হার্টের অসুখের মতো সমস্যা দেখা দিত কিছু মহিলার ক্ষেত্রে। তবে এখন যে হেতু হরমোনের মাত্রা কমেছে, তাই সেই ঝুঁকিও অনেকটা কমেছে।
অনেকে মনে করেন, টানা ওষুধ খেয়ে গেলে সন্তানধারণে সমস্যা হয়। তা কিন্তু ঠিক নয়। চিকিৎসকের মতে, যে মাসে ওষুধ বন্ধ করা হচ্ছে, ওভিউলেশন তার পরের মাস থেকেই শুরু হতে পারে। সুতরাং, সন্তানধারণের সমস্যা হয় না। পরবর্তী কালে গর্ভপাতের ঝুঁকিও থাকে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy