Advertisement
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Bhramari Pranayama Benefits

কোনও কাজেই মনোযোগ দিতে পারছেন না? শিখে নিন ভ্রামরী প্রাণায়ামের সঠিক পদ্ধতি

ঠিক নিয়ম মেনে প্রাণায়াম করলে তবেই মিলবে ফল। পুজোর আগে শরীর চাঙ্গা রাখতে কোন কোন আসন করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজ শিখে নিন ভ্রামরী প্রাণায়াম।

Bhramari Pranayama a Humming Bee Breathing to Try Before Durga Puja

চিত্রাঙ্কণ: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৮
Share: Save:

ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর। শ্বাসের সমস্যাও হচ্ছে। তা ছাড়া পরিবেশে দূষণ যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। এই সময়ে তাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে রাখা উচিত। বিশেষ করে ফুসফুসের জোর বৃদ্ধি করতে হবে। ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে ফুসফুসই আগে আক্রান্ত হচ্ছে। তার উপর শরীরচর্চার অভাবের কারণে বিভিন্ন রোগ চেপে বসছে অকালেই। শরীর সুস্থ রাখতে হলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতেই হবে। সে জন্য নিয়ম করে শ্বাসের ব্যায়াম অভ্যাস করা জরুরি। শরীরের পাশাপাশি ফুসফুসের যত্ন নিতে কোন কোন আসন অভ্যাস করতে পারেন, খোঁজ নিল আনন্দবাজার অনলাইন। রইল আসন আসান করার পদ্ধতির হদিস। আজ শিখে নিন ভ্রামরী প্রাণায়াম।

সংস্কৃত শব্দ ‘ভ্রমর’ অর্থ ‘মৌমাছি’। ভ্রামরী প্রাণায়ামের বৈশিষ্ট্য এই প্রাণায়ামটি অভ্যাসের সময় গুঞ্জনরত মৌমাছির মতো শব্দ করতে হয়।

কী ভাবে করবেন?

* ম্যাটের উপরে শিরদাঁড়া সোজা করে পা মুড়ে বসুন। মাথা ও ঘাড় টান টান রাখুন। দু’হাত থাকুক দুই হাঁটুর উপরে। দরকার হলে কোমরের পিছনে একটা কুশন রাখতে পারেন। এ বার চোখ বন্ধ করে এই অবস্থানে আরামদায়ক ভাবে বসুন। প্রাণায়াম শুরুর আগে এই ভঙ্গিমা রপ্ত করা জরুরি।

* এ বার মুখমণ্ডলের দিকে খেয়াল করুন। ঠোঁট যেন বন্ধ থাকে, কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে রাখবেন না। দু’পাটি দাঁতের মধ্যে কিছুটা ফাঁক রাখুন।

* দুই হাত পাশের দিকে সোজা করুন। কনুই থেকে ভাঁজ করে কানের কাছে আনুন। মধ্যমা কিংবা মাঝের আঙুল দিয়ে কান বন্ধ করুন। কানের মধ্যে আঙুল না পুরে ইচ্ছে হলে দুই কান মুড়েও কান বন্ধ রাখতে পারেন।

* এ বার নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ার সময় গলা থেকে মৌমাছির মতো গুনগুন শব্দ করুন। মুখ খুলবেন না, শব্দ বার হবে গলা থেকে। যত ক্ষণ পারবেন, শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ধীরে ধীরে গুনগুন শব্দ করবেন।

* গুনগুন শব্দ করার সময় মাথায়, চোয়ালে, দাঁতে ও গলায় মৃদু কম্পন অনুভব করবেন।

* মন থাকবে চাপমুক্ত। শরীর থাকবে শিথিল। গুনগুন শব্দ উপভোগ করুন।

* এক রাউন্ড শেষ হলে আবার গভীর ভাবে শ্বাস নিন ও একই ভাবে অভ্যাস করুন।

* ৫–৭ বার একই ভাবে ভ্রামরী অভ্যাস করার পর হাত নামিয়ে কয়েক মিনিট চুপ করে বসে থাকুন।

কেন করবেন?

ভ্রামরী প্রাণায়াম আসলে মনকে একাগ্র করে ধ্যান বা মেডিটেশনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। শব্দের কম্পন মন ও স্নায়ুকে শান্ত করে সুখকর অনুভুতি আনতে সাহায্য করে। সুতরাং, অতিরিক্ত পরিশ্রম বা মানসিক চাপের পর ইচ্ছে মতো ভ্রামরী প্রাণায়াম অভ্যাস করে মনকে শান্ত রাখার পাশাপাশি তরতাজাও করে তোলা যায়। এই প্রাণায়াম অভ্যাস করলে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমে। রাগ, দুশ্চিন্তা ও অনিদ্রা দূর হয় এবং রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীরের কোষকলাকে পুনরুজ্জীবিত করতে ভ্রামরী প্রাণায়াম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয়। কোনও অস্ত্রোপচার বা অসুস্থতার পর এটি অভ্যাস করলে দ্রুত সুস্থ হওয়া যায়। নিয়মিত এই আসন অভ্যাস করলে গলার সমস্যা দূর হয়। ভ্রমরীর গুনগুন শব্দে বাচ্চারাও এই আসনটি করতে আনন্দ পায়। নিয়মিত অভ্যাসে তাদেরও মনঃসংযোগ, একাগ্রতা এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ে।

সতর্কতা

শুয়ে শুয়ে ভ্রমরী প্রাণায়াম অভ্যাস করা অনুচিত। কানে কোনও সংক্রমণ থাকলে এই প্রাণায়াম করা নিষেধ। সংক্রমণ সম্পূর্ণ কমলে তবেই এই প্রাণায়াম করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE