‘অ্যাব রোলার’ কী? ছবি: সংগৃহীত।
ইংরেজিতে একটা কথা আছে না ‘স্লো বাট স্টেডি উইন্স দ্য রেস’! অর্থাৎ অল্প সময়ে, কম খেটে চট করে কোনও কিছু অর্জন করে ফেলার চাইতে ধীরে, সময় নিয়ে চলা ভাল। তার স্থায়িত্ব অনেক বেশি। শরীরচর্চার ক্ষেত্রে বিষয়টা কিন্তু ১০০ ভাগ সত্যি।
কিন্তু এখন তো হাতে আর সময় নেই। চাইলেও সারা দিন জিমে ধীরে ধীরে কসরত করা যাবে না। আর তেমনটা করে বিশেষ লাভও হবে না। তবে খুব ইচ্ছে ছিল, এ বছর পুজোর আগে অভিনেতা হৃতিক রোশন বা ভিকি কৌশলের মতো ‘সিক্স প্যাক’ না হোক, সুন্দর একটা ‘অ্যাব্স’ হবে। হাঁটাচলার মধ্যে বেশ একটা নায়কোচিত ব্যাপার থাকবে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। সারা বছর করছি, করব বলে এতটুকুও শরীরচর্চা করা হয়নি। উল্টে অফিসফেরত কোনও দিন রোল, কোনও দিন বিরিয়ানি খেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সে সব রগরগে খাবার খাওয়ার পর শরীরে কতখানি ক্যালোরি জমছে, বিছানায় শুয়ে শুয়ে তার হিসাব কষতেও ইচ্ছে করেনি। এখন শেষ মুহূর্তে জিমে গেলে হাসির পাত্র হতে হবে। সে যন্ত্রণাও সহ্য হবে না। তাই দিনরাত এক করে ‘রিল’ ঘেঁটে, অনলাইনে একটি ‘অ্যাব রোলার’ অর্ডার করে ফেলেছেন। কিন্তু সেই যন্ত্রটির সাহায্যে শরীরচর্চা করলে শুধুই কি অ্যাব্স সুন্দর হবে? না কি তার আরও গুণ রয়েছে?
‘অ্যাব রোলার’-এর সাহায্যে ব্যায়াম করলে দেহের ঠিক কোন কোন অংশের উপকার হয়?
১) পেটের সব ক’টি পেশির উপর নজর দেয় এই যন্ত্রটি। পাশাপাশি কোমরের নীচের দিকের পেশি মজবুত করতেও সাহায্য করে।
২) দেহের পেশি সক্রিয় করার দিকে খুব একটা নজর দেন না সকলে। অ্যাব রোলারের সাহায্যে কিন্তু সেই কাজটি সহজেই করে ফেলা যায়।
৩) অ্যাব রোলারের সাহায্যে নিয়মিত ব্যায়াম করলে পেট, কোমরের পেশির গঠন ভাল হয়। পেশি সক্রিয় রাখতেও সাহায্য করে এই যন্ত্রটি। ফলে শরীরের ভঙ্গিও সুঠাম হয়।
৪) এই যন্ত্রটি দিয়ে ব্যায়াম করতে গেলে দেহের ভারসাম্যও বজায় রাখা প্রয়োজন। নিয়ম মেনে এই যন্ত্রটি দিয়ে শরীরচর্চা করলে ব্যালান্স বা ভারসাম্য রাখার ব্যাপারেও উন্নতি লক্ষ করা যায়।
৫) দেহের পেশি মজবুত হলে চোট-আঘাত লাগার আশঙ্কা অনেকটাই কম থাকে। এই যন্ত্রটি দিয়ে ব্যায়াম করলে শরীরের সব পেশিই ধীরে ধীরে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
বাড়িতে ‘অ্যাব রোলার’-এর সাহায্যে শরীরচর্চা করবেন কী ভাবে?
১) প্রথমে ম্যাটের উপর হামাগুড়ি দেওয়ার ভঙ্গিতে উপুড় হয়ে যান।
২) খেয়াল রাখবেন, যেন দুই হাঁটু এবং হাতের উপর দেহের সমস্ত ভর থাকে।
৩) এ বার দুই হাত দিয়ে অ্যাব রোলার যন্ত্রটি শক্ত করে ধরুন।
৪) হাঁটু থাকবে মাটিতে। দুই পায়ের পাতা একত্রিত করে মাটি থেকে সামান্য তুলে রাখা যেতে পারে।
৫) শরীরকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখে, যন্ত্রটির চাকা ধীরে ধীরে সামনের দিকে গড়াতে শুরু করুন।
৬) যত দূর যাওয়া সম্ভব তত দূরই যাবেন। প্রথমেই শরীরকে টেনে-হিঁচড়ে খুব বেশি দূর নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।
৭) শরীর স্ট্রেচ করে সোজা করার পর ওই অবস্থানেই থাকুন মিনিটখানেক।
৮) রোলারের সাহায্যে শরীরটাকে আবার টেনে আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনুন।
৯) এই ভাবে অন্তত ১০ বার করে এই ব্যায়ামটি অভ্যাস করুন। অভ্যস্ত হয়ে গেলে আরও বেশি সময় ধরে অ্যাব রোলার ব্যবহার করতে পারেন।
‘অ্যাব রোলার’ দিয়ে শরীরচর্চা করার সময়ে কী কী খেয়াল রাখবেন?
মনে রাখতে হবে, গোটা শরীরের নিয়ন্ত্রণ যেন নিজের হাতে থাকে। শরীর টেনে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া এবং ফিরিয়ে আনার সময়ে পিঠ যেন একেবারে টান টান থাকে। একেবারে শুরুর দিকে শরীরের ভর রাখার জন্য হাঁটু মাটির উপর রাখা যেতে পারে। কিন্তু বেশি কসরত করতে চাইলে শুধুমাত্র পায়ের পাতার উপর ভর দিয়ে যন্ত্র চালনা করতে শিখতে হবে। শুরুতেই খুব বেশি বার এই ব্যায়াম করার লক্ষ্য না নেওয়াই ভাল। সঠিক পদ্ধতি, শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং অধ্যবসায় থাকলে সুফল মিলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy