ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কেনাকাটা করেন কেলি নাইপস্। ছবি: সংগৃহীত।
ঘুমের মধ্যে কথা বলা, হাঁটা কিংবা চলা এক ধরনের রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে ‘প্যারাসমনিয়া’ বলা হয়। কিন্তু ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অনলাইনে কয়েক লক্ষাধিক টাকার জিনিস কিনে ফেলাও কি এক ধরনের রোগ?
সম্প্রতি কেলি নাইপস্ নামে ইংল্যান্ডের এক মহিলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অনলাইন সাইট থেকে প্রায় ৩ হাজার পাউন্ডেরও বেশি টাকার কেনাকাটা করে ফেলেন। ভারতীয় মুদ্রায় অঙ্কটা ৩ লক্ষ টাকারও বেশি। বছর ৪২-এর ওই মহিলা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “শুনতে মজা লাগলেও বিষয়টি কিন্তু খুব সহজ নয়। প্রতি রাতে আমি আতঙ্কে থাকি। কখন কী করে ফেলি নিজেই বুঝতে পারি না।”
কাজ থেকে ফিরে রাতে শুয়ে শুয়ে অনলাইনে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে শপিং করার অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। পোশাক, প্রসাধনী থেকে বাড়ির প্রয়োজনীয় কিংবা মুদির জিনিসপত্র— আজকাল সবই অনলাইনে পাওয়া যায়। সময়ের অভাবে অনেকেই ফোন থেকে সেই সব জিনিস অর্ডার করেন। আবার, অর্ডার না করলেও অ্যাপের ঝুলিতে (কার্ট) পছন্দের জিনিস রেখে দেন। সেই অভ্যাস কেলিরও ছিল। কিন্তু তা যে এমন বিরল রোগে পরিণত হবে তা তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি।
চিকিৎসকেরা বলছেন, প্যারাসমনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কী করেন তাঁরা নিজেরাও জানেন না। কথা বলা, হাঁটা কিংবা গান গাওয়ার মতো কাজ তাঁরা অনায়াসেই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে করে ফেলতে পারেন। কারণ, তাঁদের মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট একটি অংশ ঘুমের মধ্যেও জাগ্রত থাকে।
বাড়ির বা নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস কিনলে না হয় ঠিক ছিল। কিন্তু কেলি প্রতি রাতে এমন কিছু জিনিস কিনে ফেলছেন যে তার আদৌ কোনও প্রয়োজন ছিল না। এবং তার মধ্যে এমন কিছু জিনিসও রয়েছে, যেগুলি ফেরতযোগ্য নয়। এমনকি সেই টাকা মেটাতে কেলিকে ঋণ পর্যন্ত নিতে হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, “ঘুমের মধ্যে এক রাতে নিজের ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য জালিয়াতদের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। তাঁরা আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছিল। জেগে থাকলে নিশ্চয়ই এমন ভুল আমি করতাম না।”
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কেলিকে আপাতত সিপ্যাপ যন্ত্রের সাহায্যে ঘুমোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই। তবে, নানা রকম থেরাপি রয়েছে। যার সাহায্যে এই সমস্যা খানিকটা হলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy