অভিনয় ক্ষমতার জন্য তিনি বলিউডে সমাদৃত। ওয়েব সিরিজ় থেকে সিনেমা— রোম্যান্টিক নয়, বরং ‘অ্যাকশন’ দৃশ্যেই তাঁকে বেশি দেখা যায়। তিনি আরশাদ ওয়ারসি। বছর ৫৭-র অভিনেতার স্বাস্থ্যও ভাল। সুঠাম গড়ন পেতে বি টাউনের বহু অভিনেতাই যখন কড়া ডায়েট এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তখন কিন্তু জীবন নিয়ে অন্য ভাবে ভাবেন ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’-এর ‘সার্কিট’ চরিত্রের অভিনেতা। বরং জীবন নিয়ে ‘কুল’ তিনি।
১৯ এপ্রিল ৫৭ বছর হল তাঁর। কিছু দিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে ‘জলি এলএলবি’-র নায়ক জানিয়েছেন, ডায়েট এবং শরীরচর্চায় তিনি বি টাউনের নায়কদের মতো কঠোর নিয়ম মানেন না। বরং মন এবং শরীরের যত্ন নেওয়ায় বিশ্বাসী তিনি। আর সে জন্য নির্দিষ্ট রুটিনের বাইরে যাওয়া যাবে না, তেমনটা মোটেই মনে করেন না।
আরশাদ বলেছিলেন, ‘‘দিনভর জিম এবং শরীরচর্চায় মন দেওয়ার লোক আমি নই। আমি পছন্দের সব রকম পানীয়, খাবার খাই। আমি যাপনের মুহূর্তগুলিকে নিয়ে ভাবি। আমি ভুল হতে পারি, কিন্তু আমি মনে করি, জীবনে উদ্বেগ যত কম থাকবে, ততই ভাল। এতে কাজেও সুবিধা হয় আমার।’’
দুশ্চিন্তা এবং উদ্বেগ জীবনের বড় শত্রু, মানেন অনেকেই। মনোবিদেরা এ সব কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ দেন। আরশাদও জীবনে ‘স্ট্রেস’ নিতে পছন্দ করেন না।
আরশাদ গত দু’বছরে ওয়েব সিরিজ়, সিনেমায় অভিনয় করেছেন। ‘জলি এলএলবি ৩’-এ আগামী বছরে দেখা যেতে চলেছে তাঁকে। আরশাদের চেহারাও বেশ ভাল। তবে আরশাদের এমন মনোভাব শুরু থেকেই ছিল না। ২০২০ সালে অভিনেতা টুইটে পোস্ট করেছিলেন, ‘‘এক মাস কঠোর ডায়েট করেছি। কার্বোহাইড্রেট ছুঁইনি, ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং, কার্ডিয়ো, ওজন তোলার মাধ্যমে ৩০ দিনে ৬ কেজি ওজন কমিয়েছি। তবে এই সকালে কার্বোহাইড্রেট খেয়ে মনে হচ্ছে, বিশ্বের সেরা খাবার। এখন মনে হচ্ছে, আমাকে ফিট থাকার অন্য পথ খুঁজতে হবে।’’
আরও পড়ুন:
সম্ভবত, তার পরেই অভিনেতার ভাবনার বদল আসে। তাঁর মতো কড়া ডায়েট না করে, শরীরচর্চার বাড়াবাড়ি ছাড়াও কি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায়? তা কী ভাবে?
বি টাউনের অভিনেতা নন, সমাজমাধ্যম প্রভাবী ফিটনেস প্রশিক্ষক সুনীল শেট্টি বলছেন, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে গেলে দৈনন্দিন জীবনে কয়েকটি শর্ত মানা জরুরি। কড়া ডায়েট, শরীরচর্চা ছাড়াও ওজন ঝরানো যায়। দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় প্রোটিন থাকা জরুরি। শরীরের যা ওজন, সেই হিসেবে কেজিপ্রতি ১.৫-২ গ্রাম গ্রাম প্রোটিন খাবার খেতে হবে। অর্থাৎ, কারও ওজন ৪০ কেজি হলে তাঁকে সারা দিনে অন্তত ৬০ গ্রাম প্রোটিন খেতেই হবে। পাশাপাশি, দিনে ২৫-৩০ গ্রাম ফাইবারে সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে পাতে। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য খেতে হবে দই বা মজানো খাবার, যাতে শরীরে প্রোবায়োটিকের জোগান অব্যাহত থাকে। তালিকায় রাখতে হবে আখরোট, কাজু, পেস্তার মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাটজাতীয় খাবার। রাখতে হবে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার, যেমন আটা, বাজরা, ডাল, দানাশস্যও। এ ছাড়াও জরুরি হল নিয়মিত খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ। বদলে সপ্তাহে একটি দিন ‘ডেসার্ট’ খাওয়া যেতে পারে। আর অত্যন্ত জরুরি হল মেপে খাওয়া।