ঝাড়গ্রাম কুমুদ কুমারী ইনস্টিটিউশনে সন্ধান মিলেছে ‘মনের বন্ধু’র। নিজস্ব চিত্র
কী ভাবছে তারা?
রাগ, ভয়, দুঃখ, কষ্ট, বাস্তবের ঝড়-বৃষ্টি-মেঘে কেমন আছে প্রতিদিন? চারপাশের পৃথিবীটাকে কী চোখে দেখছে?
সে সব খবর জানে ‘মনের বন্ধু’। ছোট্ট একটা বাক্স, যার মধ্যেই রাখা রয়েছে পড়ুয়াদের মনের খোঁজ।
ঝাড়গ্রাম কুমুদ কুমারী ইনস্টিটিউশনে সন্ধান মিলেছে এমন বাক্সের ।
পড়ুয়াদের মনের হদিশ পেতেই স্কুলে রাখা হয়েছে সেই মনের কথার বাক্স। নাম তার ‘মনের বন্ধু’। তবে সেই বাক্সে সব সময় নজর রাখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত। পড়ুয়ারা নির্ভয়ে নিজেদের কথা কাগজে লিখে রেখে যায় বাক্সে।
যে কথা কাউকে বলা যায় না, শুধু মনের মধ্যে জমে থাকে, সে কথাই লেখে তারা। চারপাশে যা দেখে শোনে, কিন্তু কিছু করার উপায় নেই, সেসবের আভাসও মিলেছে তাদের লেখায়। খুব সহজ কথায় তাদের মনের আগল খুলে যায় শব্দের কাছে। কিন্তু এই যে তারা মনের গোপন কথা লিখছে, তার খোঁজ কে রাখছেন? স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর ওই বাক্সের ডালি খোলা হয়। প্রতিটি চিঠি পড়ে তার লেখকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলা হয়। খোঁজ মেলে মনের গোপন রহস্য সমাধানের চাবিকাঠির। যিনি এই রহস্য সমাধান করেন, তিনি এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মাতৃভাষার সঙ্গে পড়ুয়ার বাঁধন মজবুত করতে, ছাত্রজীবনের নিরানন্দ ভাব কাটিয়ে তুলতেই ‘মনের বন্ধু’র জন্ম দিয়েছেন।
এই বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বায়নের যুগে মাতৃভাষার মর্ম ভুলতে বসেছে পড়ুয়ারা। হিন্দি বা ইংরেজি ভাষার আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে তার বদলে। সেই পরিস্থিতিতে মাতৃভাষার শিকড়ের সঙ্গে জুড়ে রাখতে ওই ‘মনের বন্ধু’-এর ঝাঁপি খুলে বসেন তিনি। এই একই ভাবনা নিয়েই স্কুল পড়ুয়াদের জন্য আয়োজিত আনন্দবাজার অনলাইনের ‘শব্দ জব্দ’র যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেই উদ্যোগকেও স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। শব্দ ধাঁধার এই মজার লড়াইতে বাংলা ভাষায় শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে, তার খোঁজ পেতেই ‘শব্দ জব্দ’ ২০২৪-এর প্রথম পর্বে কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনে পৌঁছে গিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সেখানে গিয়ে জানা গিয়েছে, স্কুলের ছাত্রদের মধ্যে বাংলা ভাষার ঐতিহ্য এবং মাধুর্য বাঁচিয়ে রাখার জন্য ‘মনের বন্ধু’-র প্রচলন। এ ছাড়াও প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, বির্তক প্রতিযোগিতা, কবিতা, গল্প লেখার মধ্যে দিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে ভাষা বন্ধন দৃঢ় করার চেষ্টা করা হয়। উদ্দেশ্য একটাই, বাংলা ভাষাটাকে যেন পড়ুয়ারা ভালবাসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy