আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলা ভাষা শিক্ষার্থীদের এক পরিণত ভাবনা দেবে জানাচ্ছেন আরজে রয়
দু'সপ্তাহে ৭টা জেলা মিলিয়ে ৬০টার বেশি স্কুলে শব্দ-জব্দ নিয়ে গিয়েছিলাম আমরা। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর, নদীয়া আর মুর্শিদাবাদ–এই জেলাগুলোর বাংলা আর ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বাংলা শব্দের মজার খেলাগুলো খেলাতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তার ভিত্তিতে বেশ জোর দিয়েই বলতে পারি, বাঙালির ভাষা-ই শুধু নয়, আগামীদিনে সংস্কৃতিও অনেকটাই বদলে যাবে।
ভাষা আর সংস্কৃতি হাত ধরাধরি করে চলে, যেন একই বৃন্তে দুইটি কুসুম–এ কথা ইতিহাসের পাতা ওল্টালেই টের পাওয়া যায়। সুলতানি আর মুঘল শাসনকালে আরবি, ফারসি, তুর্কি শব্দগুলোই যে শুধু ভাষায় ঢুকেছিল, তা নয়; আস্তে আস্তে অনেকটাই বদলে গিয়েছিল পোশাক, খাদ্যরীতি এবং সামগ্রিক সংস্কৃতি। পরবর্তীকালে পর্তুগিজ-ফরাসি উপনিবেশ আর ব্রিটিশ শাসনের মধ্যে দিয়ে এদের ভাষার শব্দ যেমন বাংলায় জায়গা করে নেয়, সংস্কৃতি-পোশাক-খাদ্য-অভ্যাস সবই একটু একটু করে বদলে যায়।
এই বদল এখন ইন্টারনেটের শাসনকালে আবার প্রবলভাবে দেখা যাচ্ছে। ভাষা কীভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, সেটা তো আগেও বলেছি। এর সঙ্গে বদলাচ্ছে রুচি, বদলাচ্ছে মানসিকতা–এবং বদলাচ্ছে বেশ দ্রুত গতিতে। এবং, সেটা ভালো না খারাপ, সেটা বুঝতে এই ২০২৩-এর পর্যবেক্ষণের নিরিখে আরো বছর দশেক অপেক্ষা করতে হবে। আজ যারা অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রী, তারা বছর দশেক পরে ২৩ থেকে ২৭ বছর বয়সী বাঙালি হবে। তাদের যুব-সময়টাকে তারা আজকে শেখা-জানা সংস্কৃতি, এবং আগামী কয়েক বছরের পরিণত ভাবনা দিয়ে দেখবে।
বাংলা শব্দের মজার খেলার মাধ্যমে তাদের বাংলা শিখতে উৎসাহ দিতে গিয়ে আমরা টের পাচ্ছি, তারা বাংলা ভাষায় আটকে থাকতে চাইছে না। প্রচলিত যে ধারণা–শহরের ছেলেমেয়েরা বেশি জানে, স্মার্ট অথচ মফস্বলের দিকে তা নয়–এই ধারণা এখন ভুল। ইন্টারনেট প্রায় সবার কাছেই আছে, আর তার প্রভাবে আজকের ১৩-১৭ বয়সী, অর্থাৎ টিনএজাররা প্রায় একই জিনিস একই সময়ে দেখছে। শহর-মফস্বলের শেখার উৎস এক, ফলে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন প্রায় একইসঙ্গে ঘটছে–এটাই বিভিন্ন জেলার ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বারবার টের পেয়েছি।
পুরো দুনিয়া থেকেই কীভাবে, আর কী কী শিখছে ভবিষ্যতের বাঙালি–সেটা পরের আলোচনায় সবিস্তারে বলছি। যেটা শিখলাম ওদের থেকে–শুধু আমাদের মতো করে শিখিয়ে দিলে আর হবে না। ওরা কী ভাবছে-শিখছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ওদের শেখাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy