তিমির মল্লিক শিক্ষক
কী করেন?
ঝাড়গ্রাম শহরের বেসরকারি নার্সারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলের দু’টি শাখা আছে। একটি বাংলা মাধ্যম, অন্যটি ইংরেজি। করোনার আগে প্রি-নার্সারি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ৭৫০। কিন্তু অতিমারিতে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বেশির ভাগ অভিভাবকই স্কুলের ফি মেটাতে পারেননি। ফলে শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন মেটানো নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন তিমির। ভার্চুয়াল ক্লাস চালু করেও লাভ হয়নি। নিম্ন আয়ের অভিভাবকদের অধিকাংশের স্মার্টফোন না থাকায় পড়ুয়ারা স্মার্ট ক্লাসে যোগ দিতে পারেনি। উল্টে অনলাইন ক্লাসের জন্য শিক্ষিকাদের মোবাইলে রিচার্জ করে দিতে হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তার পর থেকে শুরু হয় স্কুল বাঁচানোর উদ্যোগ। ঝাঁপিয়ে পড়েন হেডমাস্টারমশাই স্বয়ং।
কেন?
স্কুল বাঁচানোর কোনও উপায় না দেখে চপ আর মিষ্টির দোকান দেন বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর বছর তিপ্পান্নর তিমির। সে দোকানের লাভের টাকায় বেতন পান ১৫ শিক্ষক এবং ছ’জন শিক্ষাকর্মী। শহরের উপকণ্ঠে তিমিরের তিন কাঠা জমি ছিল। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে সেখানেই শুরু হয় দোকান।
আর কী?
নিজেই চপ-শিঙাড়া ভাজতে শুরু করেন তিমির। স্কুলের শিক্ষাকর্মী সন্দীপনারায়ণ দেব, অর্পণ নন্দ, কল্পনা সিংহ, শ্যামল দলুই, দুর্গা দে’রা হেডস্যরের সঙ্গে জুটে যান। ক্রমে খদ্দের বাড়ে। এখন অবশ্য কারিগর রেখেছেন তিমির। জিনিসও বেড়েছে। সকালে মেলে ইডলি, হিংয়ের কচুরি, ঘুগনি, আলুর চপ আর চা। বিকেলের মেনু শিঙাড়া, ভেজিটেবল চপ, ডিমের চপ, এগ চাউমিন, চিকেন চাউমিন, চিকেন কাটলেট। সঙ্গে মিষ্টি আর দই তো আছেই।
এর পর?
এখন ধীরে ধীরে স্কুলের হাল ফিরেছে। আগের মতো না হলেও অনেক পড়ুয়া স্কুলে আসছে। তবে যে দোকান অসুবিধার সময়ে বাঁচিয়েছে, তা বন্ধ করেননি তিমির। সারা দিন দুই কর্মী দেখাশোনা করেন ‘স্পার্ক ২০২০’ নামের দোকানটি। বিকেলে হেডস্যরের সঙ্গে শিক্ষকরাও যান সেখানে।
১৯৯৫ সালে শুরু। দীর্ঘ দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে ম্যানেজমেন্ট শিক্ষাজগতে প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছে ইআইআইএলএম-কলকাতা। দৈনিক পাঠ্যক্রম হোক বা শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শুরুর থেকেই বাস্তব চাহিদা অনুযায়ী দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থায় শিক্ষার্থীদের কেরিয়ার সুনিশ্চিত করছে এই প্রতিষ্ঠান।