Yesteryears' Heroine Saeeda Khan Was Shot Dead by Her Producer Husband on Their Son's Birthday dgtl
bollywood
নায়ক ছেলের জন্মদিনে প্রযোজক স্বামীর গুলিতে সকন্যা খুন হন অতীতের এই নায়িকা
রুপোলি দুনিয়া থেকে সরে যাওয়ার পরে মেয়ে নম্রতা, ছেলে কমল এবং স্বামীকে নিয়ে সংসারেই ব্যস্ত ছিলেন সঈদা। কিন্তু সে জীবনও বেশি দিন স্থায়ী হল না।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২০ ১০:১৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
যশ ও খ্যাতির পাশাপাশি নায়িকার স্বপ্ন ছিল ভালবাসার নীড়ের। তাঁর স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল। নিজের সময়ের সেরা প্রযোজক তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন ছেলেও। কিন্তু ছেলেকে নায়কের ভূমিকায় দেখে যেতে পারেননি সঈদা খান। তার আগেই ছেলের জন্মদিনে স্বামীর গুলিতে মৃত্যু হয় সাদাকালো যুগের এই নায়িকার।
০২১৭
১৯৪৯ সালের ২৮ অক্টোবর সঈদার জন্ম কলকাতায়। তাঁর বোন শগুফতা এক জন লেখিকা। তাঁর লেখা অনেক গল্প সফল ভাবে চিত্রায়িত হয়েছে। ছোটবেলা থেকে সঈদার ইচ্ছে ছিল নায়িকা হওয়ার। ঘটনাচক্রে এক অনুষ্ঠানে তাঁর আলাপ হল পরিচালক-প্রযোজক এইচ এস রাওয়ালের সঙ্গে।
০৩১৭
রাওয়াল তাঁর ছবিতে নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব দেন সঈদাকে। স্বপ্নপূরণ করতে মায়ের সঙ্গে মুম্বই (তখন বম্বে) পাড়ি দিলেন সঈদা। ১৯৬১ সালে মুক্তি পেল তাঁর প্রথম ছবি ‘কাচ কি গুড়িয়া’। বিপরীতে নায়ক ছিলেন মনোজকুমার।
০৪১৭
প্রদীপকুমার, মনোজকুমার, কিশোরকুমারের মতো তারকাদের সঙ্গে অভিনয় করেন সঈদা। কিন্তু আচমকাই সুর কেটে গেল। বড় ছবির সুযোগ কমে গেল সঈদার কাছে। তার বদলে তিনি অভিনয় করতেন বি অথবা সি গ্রেডের ছবিতে।
০৫১৭
সঈদা খুব হাসিখুশি আর মিশুকে স্বভাবের ছিলেন। কেরিয়ারের দুঃসময়েও বজায় রেখেছিলেন এই স্বভাব। অভিনেত্রী মুমতাজ, সঞ্চালিকা তবসসুম-সহ বেশ কয়েক জন সঈদার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিলেন ইন্ডাস্ট্রিতে।
০৬১৭
ভালবেসে সঈদা বিয়ে করেছিলেন পরিচালক প্রযোজক ব্রিজ সাদানাকে। সে সময় বেশ কিছু তারকাখচিত ছবি যেমন ‘চোরি মেরা কাম’, ‘ভিক্টোরিয়া ২০৩’ ছবির নির্মাতা ছিলেন ব্রিজ সাদানা।
০৭১৭
রুপোলি দুনিয়া থেকে সরে যাওয়ার পরে মেয়ে নম্রতা, ছেলে কমল এবং স্বামীকে নিয়ে সংসারেই ব্যস্ত ছিলেন সঈদা। কিন্তু সে জীবনও বেশি দিন স্থায়ী হল না।
০৮১৭
দিনটা ছিল ১৯৯০-এর ২১ অক্টোবর। ছেলে কমলের জন্মদিন। বন্ধুবান্ধবদের জন্য পার্টির ব্যবস্থা করছিলেন তিনি। পরে কমল পুলিশকে জানান, বাড়ির একতলায় সে সময় তাঁর বাবা মায়ের মধ্যে তীব্র ঝগড়া চলছিল। তাঁর বাবা সে সময় মদ্যপ ছিলেন বলে জানান কমল।
০৯১৭
কমলের দাবি, আচমকাই গুলির শব্দ পেয়ে তিনি ছুটে যান। দেখেন, তাঁর মা রক্তের স্রোতে ভাসছেন। কমলের সামনে মাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন তাঁর বোন, নম্রতা। কিন্তু রাগে অন্ধ হয়ে ব্রিজ সাদানা মেয়েকেও হত্যা করেন।
১০১৭
পুলিশের কাছে কমল জানিয়েছিলেন, চোখের সামনে বোনকে লুটিয়ে পড়তে দেখেন তিনি। গুলি লেগেছিল কমলের গলাতেও। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করার পরে নিজেও আত্মঘাতী হন ব্রিজ সাদানা।
১১১৭
এই রক্তাক্ত ঘটনার পরে কমল সাদানার জীবন কার্যত থমকে যায়। তিনি নিজের জন্মদিন পালন করা বন্ধ করে দেন। তার পরেও জীবনের পথে ফিরে আসেন তিনি। মায়ের পথ অনুসরণ করে পা রাখেন অভিনয়ের দুনিয়ায়।
১২১৭
১৯৯২ সালে মুক্তি পায় কাজলের বিপরীতে তাঁর প্রথম ছবি ‘বেখুদি’। এই ছবিটি সে রকম সফল না হলেও তার পরের বছর ১৯৯৩ সালে দিব্যা ভারতীর সঙ্গে জুটি বেঁধে কমলের ‘রং’ সিনেমাটি সফল হয়।
১৩১৭
এর পর নব্বইয়ের দশকে আরও বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। কিন্ত প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। শেষে বলিউড ছেড়ে বিদায় নেন কমল সাদানা। ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলেন ২০০৫ সালে। সুচিত্রা পিল্লাইয়ের বিপরীতে ‘কর্কশ’ ছবির মাধ্যমে।
১৪১৭
কিন্তু এই ছবিও ব্যর্থ হয়। ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিদায় নেন, কমল সাদানা ও সুচিত্রা পিল্লাই দু’জনেই। তাঁদের অভিনয়জীবনের শেষ ওখানেই। নায়ক হিসেবে ব্যর্থ কমলকে এর পর বলিউড পায় প্রযোজক হিসেবে।
১৫১৭
তত দিনে তিনি বিয়ে করেছেন মেক আপ শিল্পী লিজা জনকে। ছেলের নাম রেখেছেন অঙ্গথ। প্রয়াত বোনের নামে মেয়ের নাম রেখেছেন ‘নম্রতা’। ছেলের নামে নিজের প্রোডাকশন হাউসের নামকরণ করেছেন কমল সাদানা।
১৬১৭
২০০৭ সালে কমলের প্রযোজনায় ও অনন্ত মহাদেবনের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘ভিক্টোরিয়া ২০৩’। এই ছবিটি ছিল কমলের বাবা ব্রিজ সাদানার করা ছবির রিমেক। কিন্তু বক্স অফিসে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি কমল প্রযোজিত ছবি।
১৭১৭
কিন্তু জীবনযুদ্ধের ব্যর্থতা প্রভাব ফেলেনি কমলের ব্যক্তিগত জীবনে। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে আদ্যন্ত ঘরোয়া জীবনের ঘেরাটোপে তিনি খুশি। পরিবারের ভালবাসাই তাঁকে ভুলিয়ে দিয়েছে অতীতের রক্তাক্ত স্মৃতিকে। যেখানে এক রাতে তিনি হারিয়েছিলেন মা, বোন এবং বাবাকে।