গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
একটাতে তিনি আসেন সন্ধ্যা ৬টার সময়। অন্যটায় রাত সাড়ে ৮টায়। কাদম্বিনী দেবী, যিনি শ’খানেক বছরেরও কিছু আগে বাঙালি সমাজকে টলিয়ে দিয়েছিলেন, সেই তিনিই এখন বিনোদনের আকর্ষণের কেন্দ্রে।
কে এই কাদম্বিনী দেবী?
কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন এবং হিন্দু সমাজের দাদাঠাকুরদের অগ্রাহ্য করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হন। সালটা ছিল ১৮৮৩। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পড়তে চেয়েছিলেন এক নারী। সেই সময়কালের সমাজে এ তো এক অবিশ্বাস্য ঘটনা! পশ্চিমি ডাক্তারি বিদ্যা তখনও দেশের আপামর মানুষের মনে পাকাপাকি জায়গা করে নিতে পারেনি। ডাক্তার বলতে কোট-প্যান্ট পরিহিত, গলায় স্টেথোস্কোপ ঝোলানো ভারিক্কি পুরুষকেই কল্পনা করা হত। এই বিদ্যে পড়তে চায় এক মেয়ে? ব্রাহ্ম সমাজের খোলামেলা আবহাওয়াতেও এমন কাণ্ড আগে কখনও ঘটেনি। রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের কথা দূর অস্ত! ডাক্তারি পড়তে চাওয়া মেয়েটিকে পেরতে হয়েছে একের পর এক বাধার পাহাড়। সমাজের রক্ষণশীলতার কথা থাক, ডাক্তার সমাজেও ব্যাপারটা খুব আনন্দের কিছু ছিল না। কারণ পুরুষশাসিত চিকিৎসক মহলে এক নারীর অনুপ্রবেশকে মোটেই সুবিধের চোখে দেখেনি সমকালীন ভিক্টোরীয় নৈতিকতায় ডুবে থাকা পশ্চিমি ও পশ্চিমি ভাবাপন্ন বাঙালি সমাজও। মুখে যতই স্ত্রীশিক্ষা আর স্ত্রী-স্বাধীনতার বুলি কপচাক আধা-সাহেব বাঙালি ডাক্তার সমাজ, কাদম্বিনীর ডাক্তারি পড়তে চাওয়াকে খোলা মনে স্বাগত জানাতে পারেননি বেশির ভাগ পুরুষই।
কিন্তু, কাদম্বিনীর জেদ আর তাঁর স্বামী দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের উৎসাহের কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠান। মেডিক্যাল কলেজে পুরুষদের সঙ্গে পড়ার অধিকার পান কাদম্বিনী। এ যেন এক পাহাড় ভাঙার গল্প! সে সময়ে এ দেশের অগণিত মেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। প্রসূতির যথাযথ সেবা হয় না, সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুও এক নৈমিত্তিক ঘটনা। এর কারণ একটাই। পুরুষ ডাক্তারের অন্তঃপুরে প্রবেশের তেমন অধিকার নেই। কাদম্বিনী এই সত্যটা বুঝেছিলেন, যত দিন পর্যন্ত এ দেশে মেয়েরা স্টেথোস্কোপ তুলে নিচ্ছেন, তত দিন এই পরিস্থিতির বদল হবে না। এই অচলায়তনকেই তিনি ভাঙতে চেয়েছিলেন। শুধু কলকাতা থেকে ডাক্তারি শিক্ষা নয়, তিনি অনুভব করেছিলেন, এ দেশের পুরুষ-শাসিত ডাক্তার সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠা দিতে হলে দরকার বিলিতি স্বীকৃতিও। খাস ইংল্যান্ড থেকে তিনটি মেডিক্যাল ডিপ্লোমা নিয়ে দেশে ফিরে প্র্যাকটিস শুরু করেন বাংলার প্রথম মহিলা ডাক্তার কাদম্বিনী।
আরও পড়ুন: কাজ করেছেন ব্যাঙ্ক এবং এনজিও-তে, প্রত্যাশাপূরণের পিছনে না দৌড়ে জীবনকে উপভোগ করতে ভালবাসেন সোহা
এহেন কাদম্বিনী দেবীর ইতিবৃতান্ত নিয়ে বাঙালির লোকগাথায় তেমন কোনও বর্ণনাই নেই। ইতিহাসবিদ রুদ্রাংশু মুখোপাধ্যায় তাই বলছেন, ‘‘কাদম্বিনীকে আমরা সবাই ভুলে গিয়েছি। ১৮৮০ সালে এক জন বাঙালি মহিলা ডাক্তার হলেন, এটা একটা অসাধারণ ব্যাপার। আমরা তো সব সময় আমাদের পুরুষ অ্যাচিভারদের নিয়ে কথা বলি, জন্মদিন পালন করি, দেওয়ালে ছবি আঁকি। সেই জায়গায় উনি কম তো নন, বরং একটু এগিয়ে আছেন। নবজাগরণের ক্ষেত্রে অনেক বড় মাপের পথিকৃৎ। আমার মনে হয়, রামমোহন, বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথের চেয়ে কাদম্বিনী কোনও অংশে কম নন।’’
কিন্তু এখন কেন কাদম্বিনীকে নিয়ে সিরিয়ালের কথা ভাবল দু’টি চ্যানেল? জি বাংলার বিজনেস হেড সম্রাট ঘোষ আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, ‘‘আমরা কাদম্বিনীকে নিয়ে বহু আগে থেকেই পরিকল্পনা করেছিলাম। আমরাই প্রথম চ্যানেল যারা প্রোমো লঞ্চ করি। লকডাউনের বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই, বস্তুত, আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যানেলের অনেক আগেই আমরা প্রোমো দেখাই।’’ এই প্রসঙ্গেই সম্রাট বলেন, ‘‘বিস্তর গবেষণার ভিত্তিতে ধারাবাহিকটি তৈরি করার জন্য আমরা সময় নিয়েছি যাতে দর্শক প্রকৃত ও যথাযথ কাহিনি দেখতে পান।’’
স্টারে সম্প্রচারিত ‘প্রথমা কাদম্বিনী’র পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দারের কাছে প্রশ্ন ছিল, ততটা পরিচিত চরিত্র নন কাদম্বিনী। তবু তাঁর বায়োপিক কেন? এবং সামান্য কম চার মাসের তফাতে দুই চ্যানেলে একসঙ্গে কেন? পরিচালকের উত্তর: ‘‘দুই চ্যানেল এক নারীর বায়োপিক কেন বাছল সেটা চ্যানেল কর্তৃপক্ষই ভাল বলতে পারবেন। এই প্রজেক্টের কথা শুনে ভীষণ উৎসাহিত হয়েছিলাম। এক, এমনিতেই নারী চরিত্র পুরুষ চরিত্রকে ছোট পর্দায় ডমিনেট করতে পারে এবং করেও। দুই, অতি পরিচিত চরিত্রকে তুলে ধরতে পদে পদে তুলনা টানার সম্ভাবনা থাকে, দর্শক তাকে বই বা ছবির মাধ্যমে আগে থেকে জেনে ফেলেন বলে। তাই কম পরিচিত চরিত্রকে জনপ্রিয় করা তার থেকে সহজ। এবং চ্যালেঞ্জের।’’
জি বাংলার ‘কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকের গবেষক শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলা ধারাবাহিকের কল্যাণে বাঙালি রেনেসাঁর নারী বলতে আর কেউ পড়ে রইলেন না। দুই চ্যানেলেই যদি কাদম্বিনী হয় হোক। বুলফাইট তো অনেক দিন দেখা যায়নি।’’ আবার স্টার জলসার ‘প্রথমা কাদম্বিনী’র প্রযোজক সংস্থা এসভিএফ-এর পক্ষ থেকে অরবিন্দ দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত কাদম্বিনী আড়ালে। অথচ তিনি বাংলার প্রথম মহিলা প্র্যাক্টিসিং ডাক্তার। আর তিনি এই পেশায় মহিলা হিসেবে প্রথম বলেই ধারাবাহিকের নাম ‘প্রথমা কাদম্বিনী’।’’
চিত্রনাট্য, পরিচালক, গবেষকের খুঁটিনাটি তথ্যই তাঁকে কাদম্বিনী হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন ঊষসী।
স্টার জলসা ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ দেখাচ্ছে সন্ধ্যা ৬টায়। আবার রাত সাড়ে ৮টায় জি বাংলায় চোখ রাখলে দেখা মিলছে ‘কাদম্বিনী’র। কাদম্বিনীকে নিয়ে এই লড়াইয়ে সামান্য হলেও কি আপাতত এগিয়ে স্টার জলসা? কারণ, এই চ্যানেল ধারাবাহিক দেখাতে শুরু করেছে গত ১৬ মার্চ থেকে। সেখানে জি বাংলায় সম্প্রচার শুরু হয়েছে গত ৬ জুলাই। ফলে, কাদম্বিনী সম্বন্ধে ইতিমধ্যেই দর্শক মনে একটা ধারণা স্টার তৈরি করে দিতে পেরেছে। এই সপ্তাহে ‘প্রথমা কাদম্বিনী’র টিআরপি রেটিং ৩.৫। গত সপ্তাহে ছিল ২.৫। অর্থাৎ কিছুটা এগিয়েছে স্টারের এই সিরিয়াল। জি বাংলার ‘কাদম্বিনী’ অবশ্য এখনও টিআরপি তালিকায় আসেনি সদ্য শুরু হওয়ায়।
জি বাংলার সঙ্গে স্টার জলসার টক্কর যদিও আজকের নয়। এর আগে নন ফিকশন শো নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি না হলেও ছোটখাটো লড়াই হয়েছে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ আর ‘ডান্স বাংলা ডান্স জুনিয়র’ রিয়েলিটি শো দিয়ে। কিন্তু এই বিভাগে জি-এর জনপ্রিয়তা প্রবল। কারণ, তার তুরুপের তাস আরও দু’টি রিয়েলিটি শো— ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ এবং ‘দাদাগিরি’। এর উল্টো ছবিটা ধরা পড়ে ভক্তিমূলক মেগায়। জি বাংলার ‘জয় বাবা লোকনাথ’ আর স্টারের ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ দর্শকেরা হইহই করে দেখেন। এর আগেও স্টার একাধিক ভক্তিমূলক ধারাবাহিক দেখিয়েছে যা বাংলায় দেখা যায়নি।
এই জায়গায় দাঁড়িয়ে জি বাংলা আলাদা কী দিতে চলেছে? সম্প্রচারের আগেই চ্যানেলের প্রোমো বলেছিল, কাদম্বিনীর ছোটবেলা দেখানো হবে না। ধারাবাহিকের শুরু থেকেই তিনি বড়।
এই ভাবনা কি দুই চ্যানেলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে তোলার সুচিন্তিত প্রয়াস? উত্তর মিলল ‘কাদম্বিনী’ ধারাবাহিকের গবেষক শিবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে, ‘‘কাদম্বিনীর বাবা ব্রজকিশোর বসু বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষকতা করেছেন, এটা গবেষণা বলছে। তার মধ্যেও কিছু অংশের সঠিক খোঁজ মেলে না, কিছু অংশ ধোঁয়াশা। তার মধ্যে রয়েছে কাদম্বিনীর একেবারে ছোটবেলা। কলকাতায় এসে স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় থেকে কাদম্বিনীকে জানা যায় ভাল করে। কাদম্বিনীকে গোরক্ষপুরবাসী হিসেবে আমাদের ধারাবাহিক দেখাবে।’’
আরও পড়ুন: মৃত্যুর এক মাস পর সুশান্তকে নিয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখন্ডে
আরও একটি পার্থক্য চোখে পড়ার মতো। যেখানে ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ কথা বলছে বাঙাল ভাষায় সেখানে ‘কাদম্বিনী’ কথা বলবে কথ্য বাংলায়। শিবাশিসের যুক্তি, ‘‘কাদম্বিনীর আনুমানিক বেড়ে ওঠা বিহারে। শিক্ষা কলকাতায়। তাঁর জীবনে আসবেন লেডি ডাফরিন-সহ একাধিক ইংরেজ। পরে তিনি সেই সময়ের কংগ্রেস দলের মুখও হয়ে উঠবেন। যাঁর জীবনে এত বৈচিত্র তাঁর জীবনে নানা ভাষার অনায়াস গতিবিধি। বাঙাল, কলকাত্তাইয়া, ইংরেজি, হিন্দি যদি তাঁর মুখে বসানো হয় তা হলে দর্শক তো আরও গুলিয়ে যাবেন। তাই বাংলা কথ্য ভাষাকে আমরা ধারাবাহিকের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করেছি।’’
একই চরিত্রকে অবলম্বন করে এই দুই মেগা সিরিয়াল নিয়ে দর্শকদের নানা প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে। দুই সিরিয়ালের মধ্যে তুলনা টেনে এক দর্শক লিখছেন, ‘আচ্ছা আমাকে বলুন তো কাদম্বিনী মা কি দুরকম ছিল?... দু জায়গায় দুরকম ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে।’ আর এক জন লিখছেন, ‘কাদম্বিনীতে সোলাঙ্কি সবচেয়ে মানানসই... ঊষসী খুব চিৎকার করে কথা বলে... আর সবসময় একই নায়িকা কেন? নতুন মুখ নিয়ে আসা দরকার ছিল’।
দুই ধারাবাহিকের মধ্যে নানা পার্থক্য থাকলেও দুই চ্যানেলের তুরুপের তাস অবশ্যই নামভূমিকায় সোলাঙ্কি বনাম ঊষসীর অভিনয়। আলাদা ভাবে একই চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার মুন্সিয়ানা।
সেখানে কার নেট প্র্যাক্টিস কেমন? ঊষসীর কথায়: ‘‘বই পড়ে কোনও চরিত্রে ঢোকা বা তাকে বোঝার চেষ্টা কখনও করি না। আমাদের শুট হচ্ছে বেলগাছিয়া রাজবাড়িতে। অত পুরনো বাড়ি, সেখানকার বড় বড় ঘর, পুরনো আসবাবে আপনা থেকেই অতীত বন্দি। সঙ্গে চিত্রনাট্য, পরিচালক, গবেষকের খুঁটিনাটি তথ্য আমাকে কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় হয়ে উঠতে যথেষ্ট সাহায্য করছে।’’
আরও পড়ুন: ৩০ দিন তুমি নেই, কিন্তু আমাদের ভালবাসা আজীবনের: রিয়া
স্টার জলসায় কাদম্বিনীর চরিত্রে রয়েছেন সোলাঙ্কি। ছবি: সোলাঙ্কির ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত।
সোলাঙ্কির গল্প একটু ভিন্ন। ২০১৫-র বইমেলায় তিনি কাদম্বিনী দেবীর উপরে লেখা বই কিনেছিলেন। সেই বইটি পড়ে তাঁর মনে হয়েছিল, যদি এই চরিত্র কোনও দিন করতে পারেন! পাঁচ বছর পরে সেই সুযোগ মিলতেই উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী, ‘‘প্রথমে আর এক বার বইটা পড়ে ফেললাম। ‘প্রথমা কাদম্বিনী’ যেহেতু ছোটবেলা থেকে শুরু তাই তৈরি হওয়ার একটু বেশি সুযোগ পেয়েছি। তবে কিশোরী কাদম্বিনী চরিত্রে আমার অভিনয় করার কথা ছিল না, যেটা এখন দেখানো হচ্ছে। এটা আচমকা ক্যারি করতে গিয়ে একটু দ্বিধা হয়েছিল। পরে দেখলাম, উতরে গেছি।’’
বয়সের পার্থক্য ফারাক গড়ে দিয়েছে দুই কাদম্বিনীর সাজের মধ্যেও। স্টারে কিশোরী কাদম্বিনী তাই দর্শকের সামনে হাজির বেড়া বিনুনি বাঁধা, ঘরোয়া স্টাইলে শাড়ি পরে। আর জি-র ‘কাদম্বিনী’ মেগার মুখ্য চরিত্রকে দেখা যাবে, মোটা দুই বিনুনি, মাঝকপালে ছোট্ট টিপ, শাড়ি, কানের ছোট্ট রিং-এ। যা উনিশ শতকের গন্ধ বয়ে আনবে।
দুই মেগার দুই মুখ্য চরিত্র একে অন্যের সম্পর্কে কী বলছেন?
সোলাঙ্কি ইতিমধ্যেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বন্ধু ঊষসীকে। বলেছেন, ‘‘ঊষসী খুব ভাল অভিনয় করে। ফলে, সুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হবেই। আর এটা পরোক্ষে লাভজনক। আমরা দু’জনেই আমাদের সেরাটা দিতে চেষ্টা করব। মান বাড়বে ধারাবাহিকের। বাকিটা বলবে টিআরপি আর দর্শক।’’
আবার সোলাঙ্কিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ঊষসীও। বলছেন, ‘‘সোলাঙ্কি অনেক বড় মাপের অভিনেত্রী। ছোট পর্দা ছাড়াও ওয়েব সিরিজে কাজ করে। ফলে, ওর আলাদা ফ্যান ফলোয়ার্স আছেই। ইতিমধ্যেই কাদম্বিনী চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের প্রচুর ভালবাসা পেয়েছে সোলাঙ্কি। যেহেতু আমরা একই চরিত্রে অভিনয় করছি তাই অনেক সময়েই হয়তো তুলনা টানার চেষ্টা চলবে। আমাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে, এমন রটনাও রটবে। আমার কিন্তু সোলাঙ্কির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনও মানসিকতা নেই। যদি কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী থেকেই থাকে তা হলে সে আমার অভিনীত আগের চরিত্র ‘বকুল’।
আরও পড়ুন: ‘তারাদের সঙ্গে তোমার নাচ চালিয়ে যাও’, সুশান্তের সঙ্গে তাঁর সালসা নাচের ভিডিয়ো পোস্ট করলেন স্বস্তিকা
এই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক আবহের মধ্যে জি বাংলার পক্ষে সম্রাট ঘোষ বলছেন, ‘‘কোনও ঐতিহাসিক চরিত্রকে নিয়ে তৈরি কাহিনি যে কেউই সবার সামনে তুলে ধরতে পারেন। কিন্তু একমাত্র দর্শকরাই ঠিক করবেন, পরীক্ষায় কে শেষমেশ পাশ করল।’’
বাংলা ছবিতে দেখা গিয়েছিল এক গল্প বা ভাবনা নিয়ে দুই ছবি। কিন্তু ধারাবাহিকে এই প্রথম। কাদম্বিনীর মতো চরিত্র ধারাবাহিকে এ ভাবে আগে আসেনি। বাড়ির বউয়ের পায়ের মাটি শক্ত করার ছকে বাঁধা ধারাবাহিকে কাদম্বিনী যেন নরম ঝড়। মহিলা ডাক্তার, বয়স্ক স্বামী, স্বামীর প্রথম পক্ষের দুই সন্তান থেকে নিজের আটটি সন্তান আর বাইরে ডাক্তার হিসেবে প্রতিষ্ঠার লড়াই— সব মিলিয়ে এমন এলিট ক্লাসের মানবীর গল্প বলতে গিয়ে মোড় ঘুরছে বাংলা ধারাবাহিকের।
স্বামী দ্বারকানাথের যে দিন মৃত্যু হয়, সে দিন বিকেলে কলকাতার এক জমিদার বাড়ি থেকে কাদম্বিনীকে প্রসব করানোর জন্য ‘কল’ দেওয়া হয়। সকালে স্বামীহারা চিকিৎসক বিকেলে তাঁর ব্যাগপত্র নিয়ে সেখানে রওনা দেন। হতবাক ও অসন্তুষ্ট আত্মীয়দের তিনি বলেছিলেন, ‘‘যে গেছে সে তো আর ফিরবে না, যে নতুন প্রাণ পৃথিবীতে আসছে তাকে তো আনতে হবে!’’
কাদম্বিনীর জীবন যেন রূপকথার মতো। আর কে না জানে, বাস্তবের রূপকথা চিরকাল কল্পনার রূপকথাকে টেক্কা দিয়েছে! কাদম্বিনী যেন লকডাউনের মধ্যে বাঙালির আলুনি জীবনে বহু দিন পরে আলোড়ন তোলা পাঁচফোড়ন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy