জুনিয়র শিল্পীদের নিয়ে ভাবছেন প্রযোজকেরা?
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে রাজ্যে কার্যত লকডাউন। সরকারি নির্দেশ মেনে খাতায়কলমে ১৬ মে থেকে স্তব্ধ টেলিপাড়াও। খবর, তার মধ্যেই বাড়ি থেকে মুঠোফোনে নতুন পর্বের দৃশ্য শ্যুট করে পাঠাচ্ছেন ধারাবাহিকের মুখ্য অভিনেতারা। যার সরাসরি প্রতিবাদ জানিয়েছে ফেডারেশন। সংগঠনের মতে, বাড়ি থেকে শ্যুটিং করলে লাভ প্রযোজকদের। বঞ্চিত হবেন কলাকুশলীরা। যদিও রবিবার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন প্রোডিউসার্স (ডব্লিউএটিপি)-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছরের মতোই কলাকুশলীরা তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হবেন না।
কিন্তু কী হবে জুনিয়র শিল্পীদের? কোনও আলোচনাতেই তাঁদের কথা কিন্তু এক বারের জন্যও উঠে আসেনি!
বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজার ডিজিটাল কথা বলেছিল প্রযোজক স্নিগ্ধা বসু, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, আর্টিস্ট ফোরামের সহ-সম্পাদক দিগন্ত বাগচীর সঙ্গে। কী বলছেন তাঁরা? শুরু থেকেই ফেডারেশনের আচরণে ক্ষুব্ধ ব্লু’জ প্রযোজনা সংস্থার কর্ণধার। জুনিয়র শিল্পীদের নিয়ে ভাবতে ভয় পাচ্ছেন, সাফ জানালেন তিনি। স্নেহাশিসের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এক বারের জন্যও বাড়ি থেকে শ্যুটিং করতে বারণ করেননি। আমরাও সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে খুব অল্প করেই শ্যুটিং করছি। তাতেই আমাদের ওপর খড়্গহস্ত ফেডারেশন। এর পর জুনিয়র শিল্পীদের নিয়ে কাজ করতে চাইলে আরও কথা শুনতে হবে।’’ প্রযোজকের ক্ষোভ, সমস্ত প্রযোজক চ্যানেল, সম্প্রচারণ বিভাগ, কলাকুশলী, শিল্পী-- সবার মুখ চেয়েই এ ভাবে কাজ চালানোর চেষ্টা করছেন। কারণ, কাজ চললে অর্থ আসবে। বদলে তাঁদের ফেডারেশনের হুমকি, রক্তচক্ষু সহ্য করতে হচ্ছে। তাঁর আফসোস, ‘‘উপকার করতে গিয়ে অপরাধীর তকমা পাব, এক বারও ভাবিনি।’’
অ্যাক্রোপলিস প্রযোজনা সংস্থার কর্ণধার স্নিগ্ধা বসু অকপটে জানিয়েছেন, জুনিয়র শিল্পীদের নিয়ে ভাববে আর্টিস্ট ফোরাম। যদিও তিনি এ কথাও বলেছেন, ‘‘ম্যানেজারের মাধ্যমে আমি জুনিয়র শিল্পীদের খবর নিই। গত বছরেও তাঁদের যা প্রয়োজন ছিল, জেনে আমার সাধ্য মতো তা মেটানোর চেষ্টা করেছি। এ বছরেও তার অন্যথা হবে না।’’ পাশাপাশি স্নিগ্ধার দাবি, করোনা বিধি অনুযায়ী এমনিতেই ৫ জনের বেশি শিল্পী নিয়ে শ্যুটিং করা যাচ্ছে না। ফলে, জুনিয়র শিল্পীদের প্রয়োজন আগের তুলনায় অনেকটাই কম। এর জন্য তিনি সমস্ত নিয়ম মেনে বাড়ি বসে শ্যুটিংয়ের অনুমতি দেওয়ার প্রসঙ্গও তুলেছেন। স্নিগ্ধার কথায়, প্রযোজকের সাহায্য চাইলে তাঁদের কাজ করতে দিতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দেন মুম্বইয়ের ধারাবাহিক নির্মাতাদের। বলেন, তাঁরা লকডাউনে টিম নিয়ে চলে গিয়েছেন হোটেলে। সেখানে শিল্পী, কলাকুশলীদের রেখে শ্যুটিং করছেন। ফলে, দর্শকেরা প্রতি দিন টাটকা পর্ব দেখতে পাচ্ছেন। সেই সুযোগ তিনি এই রাজ্যেও চান। পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কাজ করতে না দিলে, শ্যুটিংয়ের অভাবে ধারাবাহিক বন্ধ হয়ে গেলে আমরা কোথা থেকে সাহায্য করব?’’
আর্টিস্ট ফোরামের সহ-সম্পাদক দিগন্ত বাগচী জুনিয়র শিল্পীদের দায়িত্ব ফেডারেশনের বলেই জানিয়েছেন। প্রযোজকদের মতো তিনিও অভিযোগ জানিয়েছেন ফেডারেশনের বিরুদ্ধে। কথা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘গত বছর লকডাউনে ৩ মাস শ্যুটিং বন্ধ থাকার পরেও মোটা অঙ্কের টাকা কলাকুশলীরা পেয়েছিলেন। শিল্পীরা কোনও টাকাই পাননি। অথচ গত বছরে যে পরিমাণ টাকা ফেডারেশন পেয়েছিল, সেটা শিল্পীদের হাত ধরেই এসেছিল।’’ দিগন্তের দাবি, অরিন্দম শীলের কাজ ‘ঝড় থেমে যাবে’ বা অমিতাভ বচ্চনের ভিডিয়োতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় টাকা এনে দিয়েছিল। আর্টিস্ট ফোরাম ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। তার এক কণাও শিল্পীরা পাননি। অথচ, জুনিয়র আর্টিস্ট সহ অভিনেতাদের একটা বড় অংশ ফেডারেশনের অধীনস্ত।
দিগন্তের কথায়, এ বছরেও যাতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য সোমবার বিকেলে অস্থায়ী কোভিড ত্রাণ শিবির ‘সৌমিত্র’-র প্রাঙ্গণে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছে আর্টিস্ট ফোরাম। সেখানেই পুরো বিষয়টি সামনে আনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy