তথাগত-দেবলীনা;মধুবনী-রাজা;নবনীতা-জিতু;পায়েল-দ্বৈপায়ন
ফিরে পেয়েছি অনেক কিছু
কাজপাগল তথাগত মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে আটকে থাকতে সমস্যা হলেও দেবলীনা দত্তর ভারী মজা। পরিবারের পাঁচ সদস্যের একসঙ্গে থাকার সুযোগ হচ্ছে অন্তত। ঘর পরিষ্কার, নতুন পদ বানানো, সিনেমা দেখা, গেম, কুকুরদের পরিচর্যা করেই তাঁদের সময় কাটছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের জীবনযাপনের আপডেট দিতে চান না দেবলীনা। বললেন, ‘‘কত লোক না খেয়ে আছেন, কত শ্রমিক পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছেন। এ সব দেখে বাড়িতে মিষ্টি তৈরির ছবি দেওয়া যায় না।’’ রোজ সন্ধেবেলা এমন সিনেমা চালান যা মা, শ্বশুর-শাশুড়ি সকলে উপভোগ করতে পারেন। সঙ্গে চলছে ক্যারম টুর্নামেন্টও। তাতে অবশ্য পাল্লা ভারী তথাগতর। কিন্তু তাঁর মন বাইরে বেরোনোর জন্য ছটফট করছে। এলাকার ৩২টি পথকুকুরের দায়িত্ব নিয়েছেন পশুপ্রেমী কর্তা-গিন্নি। তথাগত বলছিলেন, ‘‘বেড়াতে গিয়ে অনেক ছবি তুলেছিলাম। সেগুলো দিয়ে একটা শর্ট ফিল্ম ‘স্ট্রিপড’ বানালাম।’’ করোনার কারণে অনেক কাজ থমকে গেলেও, কিছু জিনিস ফিরে পেয়েছেন তাঁরা। যেমন নিকটজনের সান্নিধ্য।
স্বপ্নসন্ধানী
পায়েল দে ও দ্বৈপায়ন দাসের কোয়রান্টিন আনন্দে কাটছে তাঁদের সন্তান মেরাখের সঙ্গে। ‘‘মেরাখ জন্মানোর কয়েক মাসের মধ্যেই অভিনয়ে ফিরি। ছেলের বড় হওয়া দেখতে না পাওয়া মিস করতাম। লকডাউন সেই দুঃখটা ভুলিয়ে দিল,’’ পায়েলের গলায় খুশির সুর। ছেলের স্নান-খাওয়ার দায়িত্ব দ্বৈপায়নের। আর পায়েল সামলাচ্ছেন বাকিটা। এর মধ্যেই অভিনয় নিয়ে গ্রুম করছেন নিজেদের। অনলাইনে স্প্যানিশ শিখছেন দ্বৈপায়ন। কিন্তু লকডাউন পরবর্তী অর্থনেতিক পরিস্থিতি নিয়েও চিন্তিত ‘কোড়া পাখি’র আহান ও ‘দুর্গা দুর্গেশ্বরী’র দুর্গেশ্বরী। তার মধ্যেও স্বপ্ন দেখছেন। সব কিছু ঠিক হলে, ছেলেকে নিয়ে লাদাখের মেরাখ গ্রাম দেখার সাধ রয়েছে। ওই গ্রামের নামেই তো ছেলের নাম রেখেছেন।
আশার আলোয়
‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’ গিটারে সুর তুলে মুক্তির আনন্দ খোঁজার চেষ্টা করছেন ছোট পর্দার ওম-তোড়া অর্থাৎ রাজা গোস্বামী ও মধুবনী গোস্বামী। লকডাউনেও তাঁদের ঘুম ভাঙে, বারান্দায় খবরের কাগজ পড়ার শব্দেই। ‘‘সকালে খবরের কাগজ না পেলে মন খচখচ করে,’’ বলছিলেন রাজা। এর পর চলে যান নিজের তৈরি জিমে। টেনে নেন মধুবনীকেও। কেমন চলছে তাঁদের লকডাউন দাম্পত্য? ‘‘সাড়ে তিন বছর বিয়ে হলেও বঁটিতে আনাজ কাটা, রান্না করতে পারতাম না। এখন সরু করে আলুর খোসা ছাড়াই, গোল ফুলকো রুটি করছি,’’ জবাব মধুবনীর। ছোট পর্দায় তাঁরা আলাদা কাজ করলেও জুটি বেঁধেছেন ‘বনেদি বাড়িতে বিলিতি বউ’ যাত্রাপালায়। রোজগারের বেশির ভাগ টাকাই ওখান থেকে আসে, জানালেন রাজা। আবার কবে ফিরবেন যাত্রায়, সেই চিন্তা থাকলেও পজ়িটিভিটিতে বিশ্বাসী রাজা-মধুবনী।
সম্পর্কটা খাদবিহীন সোনার মতোই
নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল ‘দ্য ভুলভাল ক্লাব’ নিয়ে বেজায় ব্যস্ত জিতু কমল ও নবনীতা দাস পাল। মাত্র ১১ মাস বিয়ের পরেই তাঁদেরকে একা সংসার সামলানোর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে লকডাউন। তবে দু’জনের তালমিলে সংসারের চাকা দিব্যি চলছে। জিতু ভাল রান্না করেন। তাঁর কাছ থেকেই চিকেন পোলাও, সরষে চিংড়ি, ভাজা মশলা দিয়ে আমের চাটনি তৈরি করতে শিখেছেন নবনীতা। তাঁরা দু’জনেই ফিটনেস সচেতন। বাড়ির কাজ সামলানোর পাশাপাশি শারীরচর্চার রুটিনেও তাই ছেদ নেই। এই একসঙ্গে কাটানো সময়, তাঁদের সম্পর্কটা আরও পোক্ত করছে বলেই মনে করেন জিতু-নবনীতা।
এক আকাশের নীচে...
সুযোগ পেয়ে বাড়ির ছাদে রোজ ঘুড়ি ওড়াচ্ছেন ‘আলো ছায়া’র নিলয় অর্থাৎ সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার লাটাই ধরছেন ‘ইরাবতীর চুপকথা’র পিয়ালি অর্থাৎ নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। সাড়ে চার বছর ধরে সংসারের লাটাইও কি নয়নারই হাতে? ‘‘ও খুব সংসারী। আমাকে আগলে রেখেছে,’’ স্ত্রীর প্রশংসায় সৌগত। ঘুড়ি ওড়ানোর শখ পুষিয়ে নিচ্ছেন। গানের চর্চা ফের শুরু করেছেন সৌগত। ওড়িশি প্র্যাকটিস করছেন নয়না। বাড়ির কাজের সঙ্গে বাগান করছেন। সৌগত এর মধ্যে লেবু দিয়ে চিকেনের পাতলা ঝোল রেঁধে বউকে খাইয়েছেন। তবে কর্তা-গিন্নি বাহুল্যকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন না। তাঁদের সংসারে রয়েছে সাতটি পোষ্য। মুখ্যমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ডে সাহায্য করেছেন তাঁরা।
অম্ল-মধুর...
মাত্র চার মাস আগে বিয়ে করেছিলেন প্রিয়ম চক্রবর্তী ও শুভজিৎ কর। ভাবছিলেন কবে ছুটি পাবেন। কিন্তু এমন অবসর তাঁরা চাননি। তবে নতুন কিছু করার মধ্য দিয়ে ভাল থাকার রসদ খুঁজে নিচ্ছেন তাঁরা। প্রিয়ম জানালেন, এর মধ্যে একটি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছেন তাঁরা। ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’, ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ ও ‘নেতাজি’তে অভিনয় করছিলেন প্রিয়ম। ‘‘১১ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক সময়ই কাজ করিনি। কিন্তু এ রকম অনিশ্চয়তা কখনও গ্রাস করেনি,’’ সোজাসাপটা প্রিয়ম। স্ত্রীর মানসিক চাপ কাটাতে তাঁকে নতুন রান্না করে খাওয়াচ্ছেন ‘ধ্রুবতারা’র অগ্নি অর্থাৎ শুভজিৎ। এ ভাবেই চলছে তাঁদের দাম্পত্য।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy