Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Silajit Majumder

WB Election 2021: আগে বাবা কংগ্রেস তো ছেলে বাম হত, এখন স্বামী স্ত্রী অন্য দল হলে ঘর ভাঙে: শিলাজিৎ

যদি রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েই যায়? কোন দলে যোগ দেবেন?  আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট শিলাজিৎ মজুমদার।

 শিলাজিৎ মজুমদার।

শিলাজিৎ মজুমদার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২১ ১৯:১৮
Share: Save:

একাধিক দল তাঁকেও ডাকছে। সযত্নে এড়িয়ে যাচ্ছেন সবাইকে। কেন? প্রতিটি দলের বিরুদ্ধেই তাঁর অভিযোগ! ২১-এর নির্বাচনে যদি রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েই যায়? কোন দলে যোগ দেবেন? আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে অকপট শিলাজিৎ মজুমদার।

প্রশ্ন: হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি-র ক্যাপশন ‘পলিটিক্স’। রাজনীতি নিয়ে ভাবছেন?

শিলাজিৎ:
কী ভাবব?

প্রশ্ন: কোন দলে যোগ দেবেন? নিশ্চয়ই ডাক পেয়েছেন?

শিলাজিৎ:
সবটাই আলোচনাস্তরে। রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হয়ই। তবে রাজনীতি তো সহজ নয়। হঠাৎ একদিন আমি ধূমকেতুর মতো উঠে এসে রাজনীতি করতে শুরু করলাম! কিছুতেই এটা পারব না। সব কিছুরই প্রস্তুতি দরকার। আমায় লোকে চেনে বলে রাজনীতিতে নেমে গেলাম কিচ্ছু না জেনে, এ কেমন কথা! যাঁরা ডেকেছেন, প্রত্যেককেই এই কথা জানিয়েছি।

প্রশ্ন: অনেক তারকা প্রস্তুতি ছাড়াই আসছেন রাজনীতিতে। এতে ভবিষ্যতে উপকার হবে?

শিলাজিৎ:
আগের নির্বাচন বলছে সবাই নেতা হন না। আবার সবাই কাজ করেন না। বিষয় দুটো ভাগাভাগি হয়ে যায়। কিছু জন নেতা হবেন। কিছু জন কর্মী স্তরে থাকবেন। এ ক্ষেত্রেও সম্ভবত সেটাই হবে।

প্রশ্ন: যদি আগামী নির্বাচনে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েই যায়?

শিলাজিৎ:
কথা দিচ্ছি, সাংসদ বা বিধায়ক হওয়ার জন্য রাজনীতিতে আসব না।

প্রশ্ন: আপনার লক্ষ্য কী হবে?

শিলাজিৎ:
গানের দুনিয়ার উন্নতি করা। রাজ্যের শিল্পীদের হাতে যাতে নিয়মিত কাজ, অনুষ্ঠান থাকে সে দিকে দেখা। সঙ্গীতের নতুন নতুন দিক যাতে খুলে যায়, তার জন্য অর্থের নিয়মিত লেনদেন যাতে হয় তার ব্যবস্থা করা। পাড়া থেকে মঞ্চ, সব জায়গাতেই শিল্পীদের অনায়াস গতিবিধি তৈরি করে দেওয়া। রাজ্যে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে দেওয়াও অন্যতম লক্ষ্য থাকবে।

প্রশ্ন: রাজ্যবাসী হিসেবে কী চাইবেন আগামী নির্বাচনে?

শিলাজিৎ:
পুরো নির্বাচন যেন অবাধ আর শান্তিপূর্ণ হয় রাজ্যবাসী হিসেবে এটাই আমার প্রথম আর প্রধান চাওয়া। নির্বাচনকে ঘিরে যাতে এক বিন্দু রক্তও না ঝরে সে দিকে যেন নজর থাকে সব দলের, এটাই আন্তরিক কামনা।

প্রশ্ন: তারকাদের দলবদল নিয়ে ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে...

শিলাজিৎ:
শুধু তারকা কেন, দলবদল তো সাধারণ মানুষও করছেন। যিনি যে দলের থেকে সুবিধে পাবেন বলে মনে করছেন তিনি সেই দলে চলে যাচ্ছেন বা থাকছেন। প্রতি নির্বাচনের আগে এই ছবি দেখা যায়। গণমাধ্যমের সিংহভাগ জুড়ে থাকে নির্বাচনী বিশ্লেষণ। এটা খুব সাধারণ ঘটনা। এই ছবিই বলে দেয় সকলের রাজনীতিমনস্কতা। পাশাপাশি এটাও স্বীকার করতে হবে, আগের প্রজন্মের নির্বাচন আর এই প্রজন্মের নির্বাচনে অনেক বদল ঘটেছে।

প্রশ্ন: যেমন?

শিলাজিৎ:
ধরুন, আমার দাদু কংগ্রেসের সমর্থক। আমার বাবা বা কাকা হয়তো বাম দলের। রাজনীতি কিন্তু এঁদের পারিবারিক সম্পর্কে ছায়া ফেলতে পারেনি। অর্থাৎ, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়েও কোনও রেষারেষি ছিল না। এখন স্বামী কংগ্রেস আর স্ত্রী অন্য দলের সমর্থক হলে ঘর ভেঙে যাচ্ছে! এক দল সারাক্ষণ ভাবছে অন্য দলকে কী ভাবে দাবিয়ে রাখবে! আমার দেখা সময় বলছে, এই পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে বাম আমল। বড় বড় নেতারা নিজেদের দলের কর্মীদের শাসিয়েছেন, কেন বিরোধী দলের কর্মীদের সঙ্গে এত ভাব? আশ্চর্য! এই পরিবেশ বা মনোভাব কখনওই কাম্য নয়।

প্রশ্ন: বাড়ির সবার রাজনৈতিক সমর্থন সামনে এল। আপনার?

শিলাজিৎ
: (হেসে ফেলে) পুরোটাই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উদাহরণ হিসেবে বলতে চেয়েছি। আবারও বলছি, খুব সুস্থ মানসিকতার কিছু মানুষের সঙ্গে এখন কথাবার্তা হচ্ছে রাজনীতি নিয়ে। আমি বিষয়টিকে বোঝার চেষ্টা করছি। আমার মত অন্য শিল্পীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। এটা প্রতি নির্বাচনের আগেই ঘটে। তবে এক্ষুণি প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে আমি যাব না।

প্রশ্ন: নচিকেতা চক্রবর্তী নাকি পদ্মশিবিরে যাচ্ছেন?

শিলাজিৎ:
বলতে পারব না। এই কথা প্রথম আনন্দবাজার ডিজিটালের থেকেই শুনলাম। সত্যতা যাচাই না করে কী উত্তর দেব? তবে এটা বলতে পারি, প্রত্যেকের মানুষের স্বাধীনতা রয়েছে নিজের মত, পথে চলার।

প্রশ্ন: ডাক এড়াতে না পারলে কোন দলে দেখা যাবে আপনাকে?

শিলাজিৎ:
এড়াতে পারব না কেন! গত ৩৫-৪০ বছর ধরে বিভিন্ন ভাবে ডাক এসেছে। আমি এড়িয়েছি। কেন জানেন? আমার এই এলোমেলো জীবন, শিল্পী সত্ত্বা শেষ হয়ে যাবে বলে। আর তো আমি আমার মতো করে জীবন কাটাতে পারব না। স্বাধীন ভাবে বাঁচব বলে প্রথম শ্রেণির সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন সংগ্রহের চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। আমি গান বানাব না এই কাজ করব? বাকি সমর্থনের কথা। আমার গ্রামে দো-ফসলী জমি নেই। একাধিক পাম্পিং স্টেশনের ফলে জলস্তর নেমে যাচ্ছে হু হু করে। গ্রামের বাড়ির কুয়ো শুকিয়ে খটখটে। অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এই রাজ্যের কৃষকেরা কী ভীষণ গরীব! চাষের সঙ্গে পেট ভরাতে তাঁদের শ্রমিকের কাজও করতে হয়। ঠাকুমার নামে স্কুল আছে। সেখানে সঠিক ভাবে পড়াশোনা হয় না। আমার বাবা-ঠাকুরদা অনেক কষ্টে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বানিয়েছিলেন। সেখানে এখন আর নিয়মিত ডাক্তারবাবু বসেন না। শাসক এসেছে শাসক গিয়েছে। গ্রামের চেহারা বদলায়নি। কাকে সমর্থন করব! মানুষের মধ্যে বদল না এলে কোনও রাজনৈতিক দলই বদলাবে না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy