ঘিয়েরঙা শাড়ি, লম্বা হার, ‘পুরাতন’ ছবিমুক্তির কারণে কলকাতায় শর্মিলা ঠাকুর। ঝটিতি সফর। তাই কলেজ স্ট্রিটে কবিতার বইয়ের খোঁজ নেওয়া হয়নি তাঁর। শনিবার ফের দিল্লি ফেরা। বললেন, “কলকাতায় এসেছি যখন একটু মিষ্টি নিয়ে যাব।” আনন্দবাজার ডট কমকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে উঠে এল পুরনো দিনের কথা। বড় পর্দায় আবার ‘নায়ক’, ‘আরাধনা’ দেখে তিনি বড্ড খুশি। বললেন, “যতই ওটিটিতে ছবি দেখার প্রবণতা বাড়ুক, বড় পর্দার ছবি বড় পর্দাতেই দেখা ভাল। যেমন, ‘পুরাতন’।”
আশি বছরের শর্মিলাকে জীবন কী শেখাল? এই প্রশ্নের উত্তরে শর্মিলা বললেন, “আমি ভাগ্যবান। মানিকদার (সত্যজিৎ রায়) ছবি করার পর থেকেই সমসাময়িক বাংলা ছবির পরিচালকেরা আমায় ছবিতে নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করেন। আমায় খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি। সেখান থেকেই অনেকটা দরজা খুলে গিয়েছিল। তার পর মুম্বইয়ে এসে কাজ করেছি। কিন্তু ব্যক্তিজীবনের ওঠাপড়া, কখনও থেমে যাওয়া, কখনও বা হোঁচট খাওয়া— আমায় জীবনকে বুঝতে শিখিয়েছে। পরিবার-পরিজন, কাজ— সব কিছুকে এক সূত্রে গেঁথে আমি আজও একই ভাবে আছি। আমি আনন্দিত।”
শর্মিলার বহু অনুরাগীর মধ্যে অনেকেই ‘পুরাতন’-এর প্রেক্ষাপটে বলতে শুরু করেছেন, ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিৎ-শর্মিলার একটি বাংলা ছবি হওয়া উচিত। শর্মিলা নিজে কী ভাবছেন? নরম করে হেসে ফেললেন তিনি। গালে টোল ভাঙল। বললেন, “তত দিন কি আমি থাকব? হয়তো ছবির ফ্রেমে বাঁধা পড়ব! সেই ছবি দেখে হয়তো অনেকে বলবেন, ‘উনি থাকলে এ রকমটা হত’!” কথা ফুরোনোর আগেই শর্মিলাকে থামিয়ে দিলেন পাশে বসা ছবির প্রযোজক-অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বলে উঠলেন, “এটা কখনও হতে পারে না। আমরা আবার নিশ্চয়ই ছবি করব। তোমার মুখে এ কথা শুনব না।”
আরও পড়ুন:
জীবনের অভিজ্ঞতায় ফিরলেন আবার শর্মিলা। বললেন, “একবার যেমন হয়েছিল, চিকিৎসকের পরামর্শ ছোট্ট সইফকে এক চামচ ফলের রস খাইয়েছিলাম। ওর শরীর খারাপ হয়ে যায়। মা অবশ্য আমাকে ওই ফলের রসে জল মেশাতে বলেছিল। চিকিৎসককে গুরুত্ব দিতে গিয়ে মায়ের কথা শুনিনি। পরে ঠেকে শিখেছি, মায়ের অভিজ্ঞতা কতটা জরুরি।” জীবনের নানা ঘটনা থেকে তিনি বারে বারে শিক্ষা নিয়েছেন। তিনি মনে করেন, শেখার দরজা যেন কখনও বন্ধ না হয়। তবেই লম্বা দৌড়ের ঘোড়া হওয়া যায়।
এ দিকে কলকাতা কৌতূহলী, ঋতুপর্ণা আর সইফ আলি খান কোনও দিন এক ফ্রেমে বন্দি হবেন?
বাইরে একঝাঁক সাংবাদিক প্রতীক্ষায় তাঁর। চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে মিষ্টি হেসে সত্যজিতের ‘অপর্ণা’ বলে উঠলেন, “হলে খুবই ভাল হয়। তবে এটা আমি বা ঋতু পারব না। ঋতুর আপ্তসহায়ক শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় পারলেও পারতে পারেন।”