ভীষ্ম পারদর্শি ছিলেন ক্রিকেটেও।
একের পর এক নক্ষত্রপতন। লতা মঙ্গেশকরের পরে প্রয়াত ভীষ্ম গুহঠাকুরতা। বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি আক্রান্ত হন কোভিডে। সংক্রমণ কমলেও কোভিড-পরবর্তী নানা সমস্যায় ক্রমশ কাবু হয়ে পড়তে থাকেন প্রবীণ অভিনেতা। একে একে অঙ্গ বিকল হতে থাকে তাঁর। চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে। সেখানেই শুক্রবার বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহের প্রিয় অভিনেতা ভীষ্ম— আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়।
বিশিষ্ট অভিনেতার প্রয়াণে শোকাহত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে জারি করা শোকবার্তায় ভীষ্ম গুহঠাকুরতার পরিবার ও অনুরাগীদের গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। প্রবীণ অভিনেতার প্রয়াণে অভিনয় জগতের ক্ষতি হল— শোকবার্তায় লিখেছেন মমতা।
দক্ষিণীর প্রতিষ্ঠাতা শুভ গুহঠাকুরতার পুত্র ভীষ্ম নিজেও খুব ভাল রবীন্দ্রসংগীত গাইতে পারতেন। পাশাপাশি, বাজাতেন পিয়ানোও। পারদর্শিতা ছিল ক্রিকেটেও। সত্যজিৎ ছিলেন তাঁর মামা। পরে মামাতো ভাই সন্দীপের একাধিক ছবিতেও অভিনয় করেন। হাসপাতালে তাঁকে শেষ দেখা দেখতে যান সত্যজিৎ-পুত্র। দক্ষিণীর প্রযোজনায় 'নষ্টনীড়' নাটকে অভিনয়ের সুবাদে আচমকাই ক্রিকেটের ড্রেসিংরুম থেকে চলে আসেন মঞ্চে চলে আসেন। নাটকে তাঁর অভিনয় দেখে তপন সিংহ তাঁকে প্রথম সুযোগ দেন ‘রাজা’ ছবিতে। এর পর পরিচালকের ‘হারমোনিয়াম’, ‘আতঙ্ক’, ‘অন্তর্ধান’, ‘বৈদুর্য রহস্য’, ‘আদালত ও একটি মেয়ে’, ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ ছবিতে পরপর কাজ করেন তিনি। ‘আতঙ্ক’ ছবিতে সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ডান হাত হিসেবে দর্শক এবং সমালোচক মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সত্যজিতের ‘গণশত্রু’, ‘শাখা-প্রশাখা’-তেও তাঁর অভিনয় চোখে পড়ার মতো।
ভীষ্ম বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিলেন দূরদর্শনের জনপ্রিয় সঞ্চালিকা শাশ্বতী গুহঠাকুরতার সঙ্গে। পরে যদিও তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। বরাবরের দিলখোলা মানুষটিকেই কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তাঁর গানের সঙ্গে পিয়ানো বাজানোর। অবসরে নিজের খেয়ালে ছবি আঁকায় ডুব দিতেন প্রবীণ শিল্পী। ভালবাসতেন স্বাধীন জীবনযাপন। প্রয়াত অভিনেতার প্রিয় গন্তব্য ছিল দক্ষিণেশ্বর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy