আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে অকপট পায়েল সরকার।
জন্মদিন কাটল ডুয়ার্সের জঙ্গলে! একেন বাবু আর তিনি। প্রেমের মাসে জন্ম। চূড়ান্ত রোম্যান্টিক? ‘টেডি ডে’-তে একটাও পুতুল উপহার পেলেন? উত্তরবঙ্গ থেকে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে ফোনে অকপট পায়েল সরকার
প্রশ্ন: ২০২২-র জন্মদিন কেমন কাটল পায়েল সরকারের?
পায়েল: ডুয়ার্সের জঙ্গলে কেটেছে (হাসি)। ওখানে ‘একেন বাবু’র শ্যুট চলছে। সারাদিন শ্যুটেই ব্যস্ত। আগের দিন রাত ১২টায় গোটা দল কেক কেটে উদযাপন করেছেন। শ্যুটিং এলাকায় এটাই যথেষ্ট।
প্রশ্ন: ভালমন্দ খাওয়া দাওয়া? কলকাতায় থাকলে সে সব হত...
পায়েল: কলকাতায় থাকলে অনেক কিছুই হত। মায়ের হাতের রান্না। বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোড়। কলকাতায় নেই। তাই ওগুলোও এবছরের জন্য মুলতবি। বদলে নিজেকে প্যাম্পার করেছি।
প্রশ্ন: কী ভাবে?
পায়েল: কেন শ্যুটে ব্যস্ত থেকে! আমি সবচেয়ে ভাল থাকি যখন শ্যুটিং করি। সেটাই সারাদিন ধরে করেছি। ফলে, খুব খুশি।
প্রশ্ন: টেডি ডে-র দিন জন্মদিন। একটাও টেডি পেলেন? নাকি জ্যান্ত ভালুকের মুখোমুখি?
পায়েল: (হেসে ফেলে) জঙ্গল শুনেই জ্যান্ত ভালুক! হ্যাঁ, আসতেই পারতো। মনে হয় শীতে কাবু। তাই আসেনি। আর শ্যুট ছেড়ে কে টেডি বিয়ার কিনতে যাবে? বেশ কয়েকটি চকোলেট পেয়েছি। আমি চকোলেট খেতে খুব ভালবাসি। তবে সাধারণত প্রতি জন্মদিনেই আমি প্রচুর টেডি পাই।
প্রশ্ন: প্রেমের মাসে জন্ম, পায়েল চূড়ান্ত রোম্যান্টিক?
পায়েল: এটা পুরোপুরি আমার মেজাজের উপরে নির্ভর করে। মানে, বিপরীতে থাকা মানুষটিকে পছন্দ হলে তবেই আমি তাঁর সঙ্গে চূড়ান্ত রোম্যান্টিক হতে রাজি। না হলে নয়।
প্রশ্ন: ‘প্রমিস ডে’ নিয়ে বিশেষ কোনও স্মৃতি?
পায়েল: একমাত্র জন্মদিন ছাড়া আর কোনও বিশেষ দিনের সত্যিই প্রয়োজন পড়ে না আমার। এই যে এক সপ্তাহ করে রোজ একটি দিন। কিস ডে, হাগ ডে, রোজ ডে, প্রপোজ ডে! খুব দরকার আছে? প্রত্যেকটা অনুভূতি, প্রত্যেকটা ঘটনা রোজই তো ঘটতে পারে। আমি এই ধারণায় বিশ্বাসী। তাই শপথ দিবস ঘিরেও আমার বিশেষ কোনও স্মৃতি নেই। শপথ নিতে চাইলে যে কোনও দিন সেটা নিতে পারি।
প্রশ্ন: নিশ্চয়ই প্রচুর শপথ নিয়েছেন, আবার কখনও ভেঙেছেন?
পায়েল: আমি যখন শপথ ভেঙেছি বুঝে শুনেই ভেঙেছি। সেটা আর ধরে থাকার মতো ছিল না বলেই জীবন থেকে মুছে দিয়েছি। তাছাড়া, যখন কোনও সম্পর্ক হয় তখন কেউ ভাবে না যে ক’দিন পরেই সেটা থেকে বেরিয়ে আসব! ফলে, পাশে থাকার, এক সঙ্গে হাঁটার অঙ্গীকার তখন থেকেই হয়ে যায়। পরে ঘটনাচক্রে সম্পর্ক কাজ না করলে তখন বেরিয়ে এসেছি। এ ভাবেই শপথ রাখা, ভাঙা দুটোই হয়েছে। আমার খুব সাদামাঠা ভাবনা, কষ্ট করে সম্পর্ক বয়ে নিয়ে যাওয়ার বদলে বেরিয়ে এস। নিজে ভাল থাক। অন্যকেও ভাল থাকতে দাও। শপথ রাখতে গিয়ে নিজের সত্তাকে নষ্ট করে ফেলা একেবারেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
প্রশ্ন: একটা দিনের শপথ সত্যিই জীবনভর মেনে চলা যায়?
পায়েল: ওই জন্যেই বললাম, আমার কাছে কোনও কিছুরই কোনও নির্দিষ্ট দিন নেই। একটি করে বিশেষ দিন পালন যেন ওই অনুভূতির গুরুত্বটাকেই কমিয়ে দেওয়া। এটা সম্পূর্ণ আমার মত।
প্রশ্ন: যখন সম্পর্ক ভেঙেছে খুব কষ্ট পেয়েছেন? কী করে উঠে দাঁড়িয়েছেন?
পায়েল: সম্পর্ক ভাঙলে দিনের পর দিন বসে চোখের জল ফেলব তেমন মানুষই আমি নই! তার মানে আমার অনুভূতি নেই, এটাও ভাববেন না। যে সম্পর্ক আমায় কষ্ট দিচ্ছে তার থেকে সরে এসে কেন নতুন করে খারাপ থাকতে যাব! ওখানে কোনও অনুভূতি নেই বলেই তো সেটা আর নেই। তার জন্য অকারণে কষ্ট পেয়ে লাভ? তার চেয়ে নিজের মতো করে থাকা অনেক ভাল। তাছাড়া, ১৫ বছরের অনুভূতি কি এই বয়সে আর আছে? তাতেও তো বদল ঘটে গিয়েছে! (হাসি) পরিণতমনস্ক হয়েছি। শিখেছি, সম্পর্কের থেকে জীবন অনেক বেশি দামি। জীবন থাকলে অনেক মানুষের আনাগোনা থাকবে। যাঁরা সত্যিকারের কাছের, তাঁরা আমায় ঘিরে থাকবেন। যাঁরা থাকার নয়, চলে যাবেন। থেকে যাওয়া মানুষরাই আমার প্রিয়জন। ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক থেকে শিক্ষা নেব। সেই ভুলগুলো যাতে আর না করি।
প্রশ্ন: আপনার প্রেম নিয়ে টলিউডে বহু গুঞ্জন, পায়েল সত্যিই প্রেমে আছেন?
পায়েল: গুঞ্জনটা গুঞ্জনই থাকুক। ওটাতেই মজা! আমি কিছু বললেই তার থেকে আরও অনেক নতুন গুঞ্জন তৈরি হয়ে যাবে। দরকার কি?
প্রশ্ন: ২০২২-এর পরিণত পায়েল কি এবার বিয়ের শপথ নেবেন?
পায়েল: এটা কি শপথ নিয়ে হয়? যখন হওয়ার আপনা থেকেই হবে। সবটাই সময়ের হাতে ছেড়ে দেওয়া ভাল। তা ছাড়া, বিয়ে করতেই হবে, তার পিছনে ছুটতে হবে--- এমন তো কোনও বাধ্যবাধকতা নেই! আমি বিয়ের বদলে যে কাজগুলো করলে আমার উন্নতি হবে তার শপথ নিতে রাজি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy