গৌরব এবং শ্রুতি
ত্রিনয়নী বা নয়ন ভবিষ্যৎ দেখতে পায়। ঘটনাচক্রে তার বিয়ে হয় দৃপ্তর সঙ্গে। দৃপ্ত তাকে মানতে পারে না। নয়ন ফিরে যায় নিজের জায়গায়। কিন্তু দৃপ্তর অমঙ্গল সে টের পায়। তাকে বাঁচানোর জন্য গৃহকর্মী হয়ে ফেরে দৃপ্তর বাড়ি। এদিকে দৃপ্তর দ্বিতীয় বিয়ের আয়োজন চলছে। দৃপ্তকে হত্যার ষড়যন্ত্র একের পর এক ভেস্তে দিচ্ছে নয়ন।নয়নের জন্য দৃপ্তর হৃদয়ে উথাল পাথাল। কিন্তু প্রকাশ করার অবসর দিচ্ছে না নয়ন। দৃপ্ত নয়নকে বলতে বাধ্য হচ্ছে, ‘তুমি আমাকে এত ভালবাস? এত ভাল কেউ কাউকে বাসতে পারে?’ আরেকটা বিয়ে করতে অস্বস্তি হচ্ছে দৃপ্তর। কিন্তু কেন এই কষ্ট? উত্তর নেই নিজের কাছেই।এই গল্প নিয়েই সবাইকে টপকে টিআরপি রেটিং তালিকায় একেবারে প্রথমেঅপেক্ষাকৃত নতুন ধারাবাহিক ‘ত্রিনয়নী’। কীভাবে সম্ভব হল?
ত্রিনয়নীর চরিত্রে শ্রুতি দাস মনে করেন, “গল্পটাই আসল কারণ। গল্পে নতুন মোড় আসছে। প্রথম থেকেই থার্ড পজিশনে ছিল। তারপর সেকেন্ড পজিশনে। আশাবাদী ছিলাম, হয়তো প্রথম হতে পারি। তবেএত দ্রুতএক নম্বরে চলে আসব, সেটা ভাবিনি।অভিনেতাদের ওপর তো টিআরপি ডিপেন্ড করে না, ডিপেন্ড করে গল্পের ওপর। সাহানাদি (দত্ত) সুন্দর করে গল্পটা সাজাচ্ছেন। লেখকরা ভাল লিখছেন। গল্প ভাল হলেই দর্শক বেশি মন দিয়ে দেখেন।”
পরিচালক স্বর্ণেন্দু সমাদ্দার ক্রেডিট দিলেন পুরো টিমকে, “সবাই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি।অভিনেতা, টেকনিশিয়ান সবাই। যাঁর মাথা থেকে গল্পটা বেরিয়েছে,আমাদের ক্রিয়েটিভ হেড সাহানাদি...এত সুন্দর ইমোশন, এত সুন্দর ড্রামা উনি তৈরি করেন যে, আমরা সিনগুলো শুট করে উত্তেজিত হয়ে যাই।”
নায়ক গৌরব রায়চৌধুরীর মতে, “গল্পের নায়িকা কিছু ঘটে যাওয়ার আগেই ঘটনাটা দেখতে পায়। নায়ক আবার এসবে বিশ্বাস করে না... গল্পের অনেকগুলো রাস্তা রয়েছে...ভাইয়ের গল্প রয়েছে, বাবা-ছেলের গল্প রয়েছে, হারানো মায়ের গল্প রয়েছে... ভার্সাটাইল গল্প। আর তার সঙ্গে আছে ইচ অ্যান্ড এভরিওয়ানের এফোর্ট।সেজন্য দর্শকের পছন্দ হয়ে এই জায়গাটায় পৌঁছেছে ‘ত্রিনয়নী’।”
কৃষ্ণকলির সেটে নীল এবং তিয়াসা
এতদিন ধারাবাহিকভাবে প্রথম হয়ে এসেছে ‘কৃষ্ণকলি’। সেই আসন ছিনিয়ে নিল ‘ত্রিনয়নী’। কী মনে হচ্ছে? ‘কৃষ্ণকলি’-র নায়ক নীল ভট্টাচার্য বলছেন, “কিছুই মনে হচ্ছে না। এটা তো একটা সাইকল। মানে রেটিং তালিকায় কেউ ওপরে যাবে কেউ নীচে নামবে।এতে তো কোনও অসুবিধা নেই। আমার তো মনে হয় যে,‘ত্রিনয়নী’ ওপরে গিয়েছে,এটা আমাদের আরও কঠিন পরিশ্রম করতে মোটিভেট করবে। তবে হ্যাঁ, ‘ত্রিনয়নী’-র বন্ধুরা ভাল অভিনয় করছে, সবাই ভাল বলছে। সেইজন্যই এগোচ্ছে। একটা বিষয় পরিষ্কার, ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা সবাই কঠিন পরিশ্রম করি। তার ফল যখন ভাল হয়, ভীষণই ভাল লাগে। টিম ‘ত্রিনয়নী’কে অভিনন্দন।”
‘কৃষ্ণকলি’-র নায়িকা তিয়াসা রায় এ প্রসঙ্গে বললেন, “সব সময় যে ক্লাসে ফার্স্ট হতে হবে তার কোনও মানে নেই। সেকেন্ড মানেও তারা কিন্তু পড়াশোনায় ভাল। তারা কম জানে এরকম নয়। আর শ্রুতি ভীষণ গুণবতী।”
‘ত্রিনয়নী’-র নায়িকা ইন্ডাস্ট্রিতে একেবারে নতুন। ‘কৃষ্ণকলি’র নায়ক নীল মিষ্টি হেসে জানালেন, “ভেরি নাইস। মজা হল, দুই ধারাবাহিকের নায়িকাই কালো। মানে দুটো গল্পই কালো মেয়ের এবং দু’জনেই নতুন। আর তাদের দুই বরই ইন্ডাস্ট্রিতে পুরনো, মানে দু’জনেই আগে কাজ করেছি।বেশ মিল আছে। হা...হা...হা...”
কালো মেয়েদের গল্পই পছন্দ করছেন দর্শক। ওদিকে ‘কৃষ্ণকলি’-র শ্যামা, এদিকে ‘ত্রিনয়নী’-র নয়ন। এদের যন্ত্রণা, ভাললাগা, লড়াই মাতিয়ে রাখছে টেলিভিশনের পর্দা।এ বিষয়ে কী ভাবেন ‘কৃষ্ণকলি’-র নায়িকা তিয়াসা? তিনি শেয়ার করলেন, “রিয়েল লাইফে কালো মেয়েদের যে সমস্যা, প্রায় সেরকম গল্পই দর্শক দেখতে পাচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত গায়ের রং নিয়ে সমস্যা রয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে মেয়েদের গায়ের রং। কালো মেয়েরা নিজের বাড়িতে, শ্বশুরবাড়িতে গায়ের রঙের জন্য নানারকম সমস্যার শিকার হন। সেজন্যই দর্শক নিজেদের রিলেট করতে পারছে।”
আরও পড়ুন- সুপার সিঙ্গার জুনিয়র: ১০ ঘণ্টার সুপার ফিনালের আগে আবেগ শেয়ার করলেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়
‘ত্রিনয়নী’-র নায়িকা শ্রুতিকে কিছু বলবেন? তিয়াসা যোগ করলেন, “ওকে শুভেচ্ছা জানাব যে, এইভাবেই যেন ও কাজ করতে থাকে। ও খুব মন দিয়ে থিয়েটার করত। আমার সঙ্গে ওর খুব ভাল বন্ধুত্ব আছে। ও যেন আরও এগিয়ে যেতে পারে।”
কেমন লাগছে? শ্রুতির কন্ঠে খুশির ছোঁয়া, “খুবই ভাল লাগছে। কিন্তু সবার দায়িত্ব বেড়ে গেল। একটা টেনশনও কাজ করছে। এটা ধরে রাখাটাই আসল উদ্দেশ্য। বেশি মাতামাতি, উচ্ছ্বাস নেই আমাদের কারওরই। কারণ আরও ভাল করার চেষ্টা করছে সবাই।”
‘ত্রিনয়নী’র নায়ক গৌরব আনন্দ ভাগ করে নিলেন, “ভাল তো লাগছে অবশ্যই।কিন্তু দিনের শেষে দর্শকের প্রতি দায়িত্ব বেড়ে যায়। মনে হয়,এর পর কী? নতুন কী দেব? আজকে যেটা দেখানো হল কালকে তার থেকে নতুন কিছু না দিলে কিন্তু দর্শক চ্যানেলটা ঘুরিয়ে দেবে। সেই চ্যালেঞ্জটা প্রচণ্ডভাবে কাজ করছে। কথায় আছে না, সিংহাসন পাওয়া যায়। কিন্তু সেটা ধরে রাখতে গেলে দক্ষ রাজা হতে হয়। সেটাই এখন আমাদের লক্ষ্য (হাসি)।”
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হওয়ার যে দৌড় তাতে বিশ্বাস করেন? শ্রুতি বললেন, “না, একদমই নয়। ভাল কাজে বিশ্বাসী। আমরা কেউই প্রথম হব ভেবে কাজ করিনি। তিন নম্বরে ছিলাম। সেটাই ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলাম।”
আরও পড়ুন-বিচ লুকে উষ্ণতা বাড়াচ্ছেন বিরুষ্কা, মুগ্ধ নেটিজেনরা...
অন্য ধারাবাহিকের অভিনেতারা শুভেচ্ছা জানালেন? শ্রুতি বললেন, “হ্যাঁ। ‘দেবী চৌধুরানী’-র অভিনেতারা, ‘কে আপন কে পর’-এর পল্লবীদি (শর্মা) ভীষণভাবে গ্রিট করেছে।”
গৌরবযোগ করলেন, “আগে ‘কৃষ্ণকলি’ ছিল, এখন আমরা। বিষয়টা জি বাংলা চ্যানেলের মধ্যেই আছে। একটা হেলদি কম্পিটিশন। যেটা খুবই ভাল।”
শ্যামা এবং নয়ন, দুই কালো মেয়ে এখন টেলিভিশন দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy