ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর আবহে টলিপাড়ায় একাধিক নির্যাতনের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। ইন্ডাস্ট্রিতে নারী সুরক্ষায় ফেডারেশন (ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ান অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া) সম্প্রতি ‘সুরক্ষা বন্ধু’ ঘোষণা করে। এই কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিচালকদের সংগঠন ‘ডিএইআই’ (ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া)।
বৃহস্পতিবার ডিএইআই-এর তরফে একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘এই ধরনের কমিটির আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আশু প্রযোজন আছে। কিন্তু সেই কমিটি তৈরি করার ক্ষেত্রেও ন্যূনতম কিছু নিয়মকানুন ও নৈতিক মানদণ্ড থাকা উচিত বলে আমাদের মনে হয়।’’ পরিচালকেরা জানিয়েছেন, ফেডারেশনের তৈরি ১৫ জনের কমিটিতে কাদের কী ভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন পরিচালকেরা।
এরই সঙ্গে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের নামে অন্য অভিযোগও এনেছেন পরিচালকেরা। তাঁদের দাবি, সম্প্রতি একাধিক সাক্ষাৎকারে ফেডারেশন সভাপতি দাবি করেছেন, ইন্ডাস্ট্রিতে নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ পরিচালক এবং ৪০ শতাংশ প্রযোজকেরা দায়ী। পরিচালকদের দাবি, ফেডারেশন সভাপতি এই পরিসংখ্যান কী ভাবে পেয়েছেন, তা খোলসা করতে হবে। শুধু পরিচালক এবং প্রযোজকেরাই যৌন হেনস্থার জন্য দায়ী, স্বরূপের এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘সমাজমাধ্যম ও কানাঘুষোয় পাওয়া অভিযোগ থেকে উনি কোন দুর্লভ অঙ্কের মাধ্যমে এই শতাংশের হিসেব করলেন বা কমিটিতে কোন সংখ্যাবিদের সাহায্য উনি নিলেন, তা জানানোরও প্রযোজন বোধ করেননি তিনি।’’
পরিচালকদের সংগঠন কি ফেডারেশনের তৈরি ‘সুরক্ষা বন্ধু’র বিরোধী? ডিএইআই-এর তরফে পরিচালক সুদেষ্ণা রায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমরা বিরোধী নই। আমরাও চাই ইন্ডাস্ট্রিতে নারী সুরক্ষা বজায় রাখতে এ রকম একটা কমিটি তৈরি হোক। কিন্তু তার জন্য প্রত্যেকের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।’’ যৌন হেনস্থার ক্ষেত্রে সমাজমাধ্যম বা কোনও গুজব থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন সুদেষ্ণা। বললেন, ‘‘আমাদের কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ এলে আমরা অবশ্যই পদক্ষেপ করব। কিন্তু সেটা কানাঘুষোর ভিত্তিতে নয়, প্রমাণ সাপেক্ষে।’’
পরিচালকদের দাবি, ফেডারেশন ইন্ডাস্ট্রিতে একচ্ছত্র নিয়ামক সংস্থা। তাই নারী সুরক্ষা বজায় রাখতে তারা যেমন স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কোনও কমিটি তৈরি করতে পারে না, তেমনই প্রযোজক এবং পরিচালকেরাও কোনও কমিটি তৈরি করতে পারে না। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ‘উইমেন্স ফোরাম অফ স্ক্রিন ওয়ার্কার্স প্লাস’ নামক একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। ফেডারেশনের কাছে এই কমিটি যাতে রাজ্য মহিলা কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে অভিজ্ঞ আইনজীবী, মনোবিদ সমাজকর্মীদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে, সেই প্রস্তাবও রেখেছেন পরিচালকেরা। প্রয়োজনে ফেডারেশনকে সাহায্য করতেও তাদের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে ডিএইআই।
এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি শুনেছি আমাদের কাছে পরিচালকদের তরফে একটি ইমেল এসেছে। সেটা এখনও আমি হাতে পাইনি। আগে সেটা দেখে তার পর বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy