টলিউডের নয়া কিরীটী।
ছ’ফুট লম্বা। মজবুত চেহারার বলিষ্ঠ পুরুষ। ব্যাকব্রাশ করা চুলে সাহেবি কেতা। নীহাররঞ্জন গুপ্তর কলমে প্রাণ পেয়েছিল সেই পুরুষ। জন্ম নিয়েছিল কিরীটী রায়। তাঁকেই এ বার ফ্রেমবন্দি করছেন পরিচালক অনির্বাণ পারিয়া। ছবির নাম ‘এবং কিরীটী’। মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায়।
টলিউডে তো এখন ভরা গোয়েন্দার বাজার। কিরীটীকেও এই নিয়ে তিন বার দেখবেন দর্শক। হঠাত্ এমন একটা গল্প নিয়ে ছবি করার কথা ভাবলেন কেন? আইডিয়াটা ক্লিশে হয়ে গেল না? পরিচালকের জবাব, ‘‘বহু বছর আগে ‘রতিবিলাপ’ গল্পটা নিয়ে আমার ভাবনাচিন্তা করা হয়ে গিয়েছিল। রাইটস কেনা ছিল। ২০১৪-তে স্ক্রিপ্ট করেছিলাম। দেখুন সকলেই তো নিজের মতো ছবি তৈরি করেন। আমিও করেছি। বিচারের ভার তো দর্শকদের হাতে। কোন কিরীটী তাঁদের পছন্দ তা তাঁরাই বেছে নেবেন।’’
আরও পড়ুন, ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা সবাই একে অন্যের পিঠ চুলকোচ্ছি
প্রতিযোগিতা যে আছে, তা কি অস্বীকার করতে পারেন? টলিউডের তৃতীয় কিরীটী অর্থাত্ প্রিয়াংশু বললেন, ‘‘অস্বীকার তো করছি না। দেখুন আগে যাঁরা কিরীটী করেছেন সেগুলো আমার দেখা হয়নি। কিন্তু প্রতিযোগিতা তো আছেই। ওটা হবেই। সৌরভের ক্যাপ্টেনসির সঙ্গে কি বিরাটের তুলনা হয় না? একটা নতুন ছেলে চেনা মাঠে খেলতে এলে তো প্রতিযোগিতার মুখে পড়বেই। আর কলকাতায় তো ফেলুদা ব্যোমকেশ হয়ে যাচ্ছে, ব্যোমকেশ ফেলুদা হচ্ছে। দর্শক তো সেটাও দেখছেন। ফলে তাঁরা তো তুলনা করবেনই।’’
শুধু রহস্য নয়। এ ছবিতে রয়েছে প্রেমের গল্প। যার ঠাসবুননে জড়িয়ে থিয়েটারের অনুষঙ্গ। কিন্তু প্রিয়াংশুকে কেন কিরীটীর চরিত্রে কাস্ট করলেন অনির্বাণ? তাঁর কথায়, ‘‘নীহাররঞ্জন আসলে নিজেকেই কিরীটী ভাবতেন। ওঁর পরিবারের সঙ্গে আমার দীর্ঘ পরিচয়। ওঁর গল্প পড়ে কিরীটীর শারীরিক যে বর্ণনা পাই তাতে মনে হয়েছিল প্রিয়াংশুকেই সবথেকে ভাল মানাবে। নীহারবাবুর মেয়ে করবী সেনও আমার সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। একবার উত্তমকুমারও কিরীটী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নীহারবাবু রাজি হননি। ওঁর পছন্দ ছিলেন অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। বইতে পড়া কিরীটীর সঙ্গে প্রিয়াংশুর চেহারার খুব মিল।’’
ছবির একটি দৃশ্যে প্রিয়াংশু চট্টোপাধ্যায়।
ছবিতে রয়েছে ‘শকুন্তলা’ নামের একটি নাটক। দুষ্মন্ত-শকুন্তলার প্রেম-বিরহের প্রাচীন কাহিনি দিয়ে গাঁথা। এ নাটকে যাঁরা অভিনয় করেন, মঞ্চের বাইরেও তাঁরা প্রেমিক-প্রেমিকাই। হঠাত্ই একটা খুন, আর একটা হিরের আংটি হারিয়ে যাওয়া— কিরীটীকে তদন্তে নামতে বাধ্য করে।
কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন? প্রিয়াংশুর কথায়, ‘‘প্রবাসী বাঙালি হওয়ার কারণে কিরীটী নিয়ে আমার কোনও রেফারেন্স ছিল না। আগের কিরীটী নিয়ে হওয়া ছবি দেখতেও পরিচালক নিষেধ করেছিলেন। ফলে স্ক্রিপ্ট রিডিংটাই আমার কাছে প্রিপারেশন ছিল। আমাদের পরিচালক নিজেও এক জন দুর্দান্ত অভিনেতা। স্ক্রিপ্ট পড়ার সময়ই আলাদা আলাদা করে অভিনয় করে দেখিয়েছিল।’’
আরও পড়ুন, ‘যাঁরা সমালোচনা করছেন তাঁরাই নিয়মিত প্রত্যেকটা এপিসোড দেখছেন’
এ ছবিতে সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন কিরীটীর সহকারি সুব্রতর ভূমিকায়। এ ছাড়া বরুণ চন্দ, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক কর, অঙ্কিতা চক্রবর্তীর অভিনয়ে সমৃদ্ধ ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে আগামিকাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy