ফাইল চিত্র।
অবশেষে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ও। বুধবার প্রথম তিনি মুখ খোলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে-র আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে। সজাগ করেন শিল্পীমহলকে। জানান, প্রতিবাদ এখনও ফেসবুকে আটকে থাকলে শিল্পের নামে গুন্ডামি চলতেই থাকবে! তার পরেই তিনি সরব রূপঙ্কর বাগচীর বিরুদ্ধে। গায়ককে তাঁর টানটান প্রশ্ন, ‘‘আপনি তো খুব ভাল গান। ওটাই আপনার পেশা। তা হলে কেন অভিনয়ের খাতায় নাম লেখালেন?’’ অভিনেত্রীর অভিযোগ, রূপঙ্কর না এলে কোনও ভাল অভিনেতা সুযোগ পেতেন। এবং নিজেকে প্রমাণ করতে পারতেন। রূপঙ্করও তো একাধিক পেশায় নাম লিখিয়ে অন্যের পেটে লাথি মারছেন!
রূপঙ্করকে নিয়ে তরজা শুরু সোমবার রাতে। ওই দিন নজরুল মঞ্চে কেকে-র প্রথম অনুষ্ঠান। কেকে-র জনপ্রিয়তা দেখে সে দিন কি নতুন করে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছিলেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী শিল্পী? বলিউড গায়কের লাইভ অনুষ্ঠান নেটমাধ্যমে ভাইরাল হতেই রাতারাতি রূপঙ্করও লাইভ! বাংলার গায়কদের কেকে-র থেকে উচ্চমানের বলে দাবি করে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের নিয়েও একই ভাবে মাতামাতি করুক বাংলা।’’ ভিন্ন ভাষার শিল্পীরা বাংলায় এসে যেন বাংলার শিল্পীদের অন্নে ভাগ বসাচ্ছেন, এমনই ভাবনা হয়তো কাজ করেছিল তাঁর মনে। সেই শুরু। সঙ্গে সঙ্গে গায়কের নিন্দায় পঞ্চমুখ সবাই। কেকে-র প্রতি অসূয়া আছে রূপঙ্করের। এমনও দাবি তোলেন অনুরাগীরা। মঙ্গলবার কেকে-র আকস্মিক মৃত্যু সেই চর্চায় যেন ঘি ঢালে। কটু মন্তব্যের কারণে জনতার আদালতে গায়ক নিমেষে ‘খলনায়ক’!
এই বিতর্কেই নতুন সংযোজন স্বস্তিকা। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, অভিনেতারা মঞ্চে গান গেয়ে দর্শকদের বিনোদনের চেষ্টা করলে দোষ! অন্য পেশার মানুষ পর্দায় মুখ দেখালে কোনও সমস্যা নেই? তিনি মেনে নিয়েছেন, সব অভিনেতা-অভিনেত্রীই গাইতে বা নাচতে পারেন না। কিন্তু তাঁরা তো মঞ্চে ম্যাজিক দেখাতে পারেন না। তাই বিনোদন হিসেবে এগুলোই বেছে নেন। কিন্তু এক জন চিকিৎসক, অধ্যাপক, চাকুরিজীবী বা অন্য পেশার মানুষ নিজস্ব কাজ থাকা সত্ত্বেও কত সহজে অভিনয়ে আসেন। একজন অভিনেতা কিন্তু চাইলেও অভিনয়ের বাইরে আর কিছুই করতে পারেন না। বিষয়টি কেউ বিবেচনা করেন না।
এর পরেই তিনি আঙুল তোলেন রূপঙ্করের দিকে। তাঁর বক্তব্য, যিনি গানে পারদর্শী কেন তিনি নিজের পেশাতেই সন্তুষ্ট থাকবেন না! যুক্তিও দিয়েছেন, ‘‘রূপঙ্করের গান শোনার জন্য টিকিট বিক্রি হতে পারে। কিন্তু ওঁর অভিনয় দেখার জন্য কি কেউ চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করবেন?’’ তোপ দেগেছেন পরিচালক, প্রযোজকদের দিকেও। কেন তাঁরা অভিনেতাদের সুযোগ না দিয়ে একজন গায়ককে সুযোগ দিচ্ছেন? রূপঙ্করের গান শোনা প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি, ‘‘এই ঘটনার পর থেকে কী করব জানি না। আমাদের তো সবার স্বল্পমেয়াদি স্মৃতিশক্তি! দু’দিন চেঁচাই। তার পর সবাই সব ভুলে যাই।’’ অভিনেত্রীর দাবি, এত দিন ওঁর খুব খারাপ অভিনয় নিয়ে কেউ তো ‘খিল্লি’ করেননি! এ বার থেকে স্বস্তিকা সেই কাজটিই করবেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy