ঠিক কী ঘটেছিল সে দিন বা তার আগের রাতে, ক’জন ছিলেন গাড়িতে— ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। রবিবার সকালে ঠাকুরপুকুর এলাকার ব্যস্ত বাজারে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় জখম হন ছ’জন। পরে হাসপাতালে মৃত্যুও হয় এক ব্যক্তির। সে দিন ওই গাড়ি থেকে মত্ত অবস্থায় আটক করা হয় ছোট পর্দার পরিচালক সিদ্ধান্ত দাস ওরফে ভিক্টো এবং একটি বেসরকারি চ্যানেলের সহযোগী প্রযোজক শ্রিয়া বসুকে। কিন্তু আগের রাতের জমায়েতে তাঁদের সঙ্গী ছিলেন আরও অন্তত তিন জন অভিনেতা। তাঁরা সকলেই নিজের নিজের মতো করে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। প্রত্যক্ষ ভাবে অপরাধে যোগ না থাকায় রেহাই পেয়েছেন শ্রিয়াও। এখন বিচারাধীন শুধুমাত্র গাড়ির চালক সিদ্ধান্ত।
কিন্তু সে রাতে সিদ্ধান্তর সঙ্গী ছিলেন যাঁরা, এমন একটি ঘটনায় তাঁরা কি সত্যিই দায় এড়াতে পারেন! প্রশ্ন তুলছে টলিপাড়া। এক ধাপ এগিয়ে অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি তুললেন, এমন অসচেতন নাগরিকের যেন উপযুক্ত শাস্তি হয়। ঘটনায় জড়িত সকলের অভিনেতা পরিচয়ের উপরও যেন খাঁড়া নেমে আসে, কামনা করছেন রাহুল।
জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত শ্রিয়া বা সিদ্ধান্তের সঙ্গেই খানাপিনায় ব্যস্ত ছিলেন অভিনেতা আরিয়ান ভৌমিক, ঋতুপর্ণা সেন ওরফে ঋ এবং স্যান্ডি সাহা। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় তাঁরা ওই গাড়িতে ছিলেন কি না তার প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু এঁদের সকলেরই একটা দায় রয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন রাহুল। সোমবার তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, “তোরা এত ব়ড় বড় কথা বলিস, সামান্য নাগরিক ধারণা নেই...।’’ রাহুল আঙুল তোলেন সিদ্ধান্তের সহযাত্রীদের বিষয়ে। তাঁরা কেন রাজি হলেন মত্ত চালকের গাড়িতে বসতে, জানতে চান অভিনেতা।
রাহুল লিখেছেন, “যার বাড়িতে মিটিং শেষ করে মদ খাওয়া হয় তার দায় নেই এই মাতালদের বাইরে ছাড়ার? গাড়ি রাখতে পারো আর পার্টির রাতে ড্রাইভার রাখতে পারো না?” উল্লেখ্য, সংবাদমাধ্যমকে স্যান্ডি এবং আরিয়ান জানিয়েছেন, তাঁরা আলাদা গাড়িতে আরিয়ানের বাড়ি যান শেষরাতে। সেখান থেকেই ভোরবেলা বেরিয়ে যান ঋ, শ্রিয়া এবং সিদ্ধান্ত। সম্ভবত সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করেই রাহুল কটাক্ষ করছেন আরিয়ানকেও। পাশপাশি অভিনেত্রী ঋ-ও দাবি করেছেন দুর্ঘটনার আগেই তিনি গাড়ি থেকে নেমে ভাড়া গাড়িতে চলে যান। বিষয়টিতে তিনি মানসিক ভাবে ত্রস্ত বলেও দাবি করেন। যদিও এখনও স্পষ্ট নয় ঠিক কখন, কে কোথায় নেমেছিলেন।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির আর তার দায় সে রাতের সঙ্গী সকলের বলে মনে করেন রাহুল। তিনি উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছেন। রাহুল সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “এদের সব রকম কার্ড, কাজের অধিকার কেড়ে নেওয়া হোক... আর আইনের সব রাস্তা যেন খোলা থাকে শাস্তির।”
সোমবার আদালতে তোলা হলে সিদ্ধান্তের তিন দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আগামী ১০ এপ্রিল আবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে।