কুমার শানু এবং জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কবিতা কৃষ্ণমূর্তি। নিজস্ব চিত্র।
দশ ঘণ্টার ‘সুপার অডিশন’। ২৮ জন প্রতিযোগীর মধ্যে জায়গা পেলেন ১৪ জন।গত রবিবার,১২ জানুয়ারিসম্প্রচারিত হল বাছাই পর্ব। টেলিভিশন দর্শক পেলেন আর এক নতুন সঙ্গীতবিষয়ক রিয়ালিটি শো, ‘সুপার সিঙ্গার’।শোয়ের বিচারক কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, কুমার শানু, জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সঞ্চালক যিশু সেনগুপ্ত। রোজই নানান রিয়ালিটি শো দেখে থাকেন দর্শক। এই শো কোথায় আলাদা?
জিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মনে করেন, “এখানে শুধু গান নয়,‘গান-বাজনা’ হয়। মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্টশেখানো হচ্ছে, ইনস্ট্রুমেন্ট বাজাতে শেখানো হচ্ছে, লিরিকস্ লেখা শেখানো হচ্ছে, অপেরা কী করে একটা গানের মধ্যে তৈরি করে এবং ইউজ করে সেটা শেখানো হচ্ছে। গ্রুমাররা আছেন, তাঁরা শেখাচ্ছেন অ্যারেঞ্জমেন্টের ব্যাপারটা, টেকনিক্যাল ব্যাপারটা আমরা দেখছি। সব মিলিয়ে একটা কমপ্লিট প্যাকেজ। এখানেই শো-টা আলাদা।”
বাসন্তী হাইওয়ের ধারে টুয়েন্টি ফার্স্ট সেঞ্চুরি ফক্স স্টুডিওতে গিয়ে দেখা গেল,এতটুকু ফুরসৎ নেই কারও। বিচারক, সঞ্চালক থেকে প্রতিযোগী, ক্যামেরাপার্সন, লাইটম্যান, আর্ট সেটিং ম্যান, প্রোডাকশন বয়, পিসিআর কন্ট্রোল রুমের কর্মীরা, পরিচালক থেকে পরিচালকের সহযোগী—প্রত্যেকেই নিজের নিজের অংশ ঝালিয়ে নিতে ব্যস্ত।তারই মধ্যে টি বয় অনবরত সরবরাহ করে চলেছেন নানা রকম চা। ক্যামেরার পিছনের লোকজন চায়ে চুমুক দিতে দিতে কাজ করে চলেছেন। কিন্তু এত পরিশ্রমে গড়ে ওঠা এই শোয়ের উদ্দেশ্য কী?
শুধুই কি গুরুগম্ভীর শেখা ও শেখানোর পাঠ চলছে এখানে?
শোয়ের প্রযোজক এবং পরিচালক শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বললেন, “ইচ্ছেটা এই যে, আমাদের ছেলেমেয়েরা এমন একটা মঞ্চ পাক, এমন একটা উচ্চতা পাক যেখান থেকে তারা আগামী দিনে সারা ভারতবর্ষে বা সারা পৃথিবীতে কাজ করতে পারবে।”
গান ও বাদ্য বিষয়ে পারদর্শী এই চোদ্দো জনকে পারদর্শিতার একটা সীমায় পৌঁছে দিতে চায়এই শো। সে প্রসঙ্গেকুমার শানুবলছেন, “এটা ঠিক শো নয়, ক্লাস বলা যেতে পারে। আমরা বড় শিল্পীদের কাছ থেকে যেগুলো শিখেছি সেগুলো নবীন শিল্পীদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই, যাতে সেগুলো ইমপ্লিমেন্ট করে সফল হতে পারে।”
কবিতা কৃষ্ণমূর্তি যোগ করলেন, “আমরা কেবল বিচারকের মতো বসে থাকি না। আমরা শিক্ষক এবং বন্ধুও যাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা অনেক অনেক ভালবাসা,অ্যাফেকশন এবং মিউজিক শেয়ার করে।”
শুধুই কি গুরুগম্ভীর শেখা ও শেখানোর পাঠ চলছে এখানে? শুটের ফাঁকে কবিতা কৃষ্ণমূর্তিকে বোকা বানানোর সুযোগ হাতছাড়া করছেন নাশানু ও জিৎ। কবিতা হাটে হাড়ি ভাঙলেন, “আই অ্যাম দ্য ভিকটিম বিটুইন টু লিটিল রাসকেলস্।”
লিটিল রাসকেল্? বোকা বানানো ও বোকা হয়ে যাওয়ার অন্তর-কাহিনি বিশদে জানা না গেলেও হো হো করে হেসে উঠলেন উপস্থিত শ্রোতা।
যিশু সেনগুপ্তর সেন্স অব হিউমার বিষয়ে জানেন তাঁর পরিচিতরা
এদিকে সঞ্চালকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিচারকেরা। এমনকি, কবিতা সঞ্চালকের সঙ্গীতবোধেরও প্রশংসা করলেন। যিশু সেনগুপ্তর সেন্স অব হিউমার বিষয়ে জানেন তাঁর পরিচিতরা। এখানেও তিনি স্বমহিমায়।
যিশুর কথায়: “আই অ্যাম ভেরি ফান লাভিং, মজা করতে ভাললাগে। সবথেকে বড় কথা, আজ আমরা হাসতে ভুলে গেছি। একটা সময় যখন মন খারাপ হয়েছে গান শুনেছি। খুব আনন্দ হলে গান এমনিতেই থাকে। সেই সময়গুলো অন্য জায়গায় চলে গেছে। সেটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। আই অ্যাম অলওয়েজ ভেরি লাকি ফর হোস্টিং দ্য রিয়ালিটি শো। কারণ এখানেচরিত্রর মতো নয়, নিজের মতো হয়ে থাকা যায়।”
এই শো থেকে কী পাচ্ছেন? যিশু বললেন, “প্রথম দিনের পরেই পুরো ব্যাপারটা একটা ফ্যামিলির মতো হয়ে গেছে। কেউ বাদ পড়লে কষ্ট হয়, চোখে জল আসে। কেউ ভাল গাইলেও আনন্দে চোখে জল আসে। এই ইমোশনগুলোই পাওনা।”
আরও পড়ুন-জুন-সৃজিতের পর এ বার বিয়ের পিঁড়িতে দেব! পোস্ট করলেন বিয়ের কার্ড
এক সময় তাঁদের যুগল কণ্ঠ শুনে মেতেছেন দর্শক-শ্রোতা। অনুরোধ আসতেই একটুও সময় নষ্ট না করে শানু ও কবিতা গেয়ে উঠলেন,‘খামোশি, দ্য মিউজিক্যাল’ ফিল্মের সেই বিখ্যাত গান, ‘আজ ম্যায় উপর, আসমা নীচে...’। শ্রোতারা ভাসলেন নস্টালজিয়া আর টিনেজ আবেগের স্রোতে।
‘শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায় প্রোডাকশনস’-এর এই শোদেখা যাচ্ছে প্রতি সপ্তাহের শনি ও রবিবার, রাত সাড়ে আটটায়, স্টার জলসায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy