শহরে জুনিয়র এনটিআর, এস এস রাজামৌলি এবং রাম চরণ।
সকাল থেকেই ছোটে লাল ঘাট সরগরম। কেউ বলছেন, শাহরুখ খান আসবেন। কেউ বলছেন, মোদী। গঙ্গা থেকে পয়সা তুলে এনে ছোট্ট বিকাশ বলল, ‘‘এ বার বোধ হয় দেব আসবে। আগের বার যেমন এসেছিল।’’
তবে তাঁরা এলেন না। শহরে এল ‘আরআরআর’ -এর টিম ইউনিট। এসেছেন ছবির পরিচালক এস এস রাজামৌলি এবং দুই অভিনেতা রাম চরণ এবং জুনিয়র এনটিআর। সবার অলক্ষ্যে ১০-১২ জন দেহরক্ষীকে নিয়ে আচমকা আবির্ভূত হলেন ফেয়ারলি প্লেসের ছোটে লাল ঘাটে। পিছনে হাওড়া ব্রিজ, মাথার উপর গনগনে সূর্য। ছাই রঙের ‘আরআরআর’ লেখা শার্ট আর কাঁচা পাকা দাড়িতে রাজামৌলি যেন সত্যি ‘বাহুবলী’র নায়ক। টকটকে লাল রঙের টি শার্টে এক পাশে এনটিআর, অন্য পাশে চোখে কালো রোদচশমা আর সাদা-কালো পোশাকে রাম চরণ।
অসংখ্য ভক্তকূল গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে আরআরআর-এর পোস্টার নিয়ে উল্লাসে তখন মাতোয়ারা। বাংলায় দাঁড়িয়ে পরিচালক প্রথমেই নাম করলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর। তাঁর ছবিতে এনটিআর এবং রাম চরণ যে দুই দেশপ্রেমীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন, আজ থেকে বহু বছর আগে বাস্তবে তাঁদের কুর্নিশ জানিয়েছিলেন নেতাজি। সারা দেশ জুড়ে এখন দক্ষিণী ছবির রমরমা। বিনোদন বলতে কি শুধু দক্ষিণী ছবিকে বোঝা যাবে? এই প্রশ্নের ঝটপট উত্তর দিলেন পরিচালক। বললেন, ‘‘ভাষা কেবল মাত্র একটা মাধ্যম। আমি তামিল ভাষা বলতে পারি তাই তামিলে ছবি করি। সিনেমাকে বলিউড, টলিউড বা বাংলা ইন্ডাস্ট্রি হিসেবে কখনও দেখি না। আমার কাছে সিনেমা বলতে ভারতের সিনেমা।’’
পাশেই দাঁড়িয়ে জুনিয়র এনটিআর। তাঁকে কলকাতা নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই উচ্ছ্বসিত তিনি বললেন, ‘‘কলকাতা বলতেই খাওয়াদাওয়া আর কেনাকাটা বুঝি। এ বার আমার বউকে নিয়ে বাংলার শাড়ি কেনার জন্য কলকাতায় আসতেই হবে।’’ উপচে পড়ছে ভিড়। সঙ্গে জয়ধ্বনি। তার মাঝেই প্রসঙ্গ বদল। রাজামৌলি কেমন পরিচালক? তাতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উত্তর দিলেন রাম চরণ, ‘‘এই পরিচালকের সঙ্গে কাজ করলে নিজেকে ১০০% দিতে হয়। ৯৯% দিলে উনি সেই শট বাতিল করে দেন। এই ছবিতে আমি আর এনটিআর ৬০ ফুট উপর থেকে যে ভাবে দড়িতে দু'জনে পেন্ডুলামের মতো ঝুলেছি, তা দেখার মতো।’’
ছয় শহরে চার দিনে চার্টার্ড বিমানে পরিচালক-সহ রুদ্ধ্বশ্বাসে উড়ে যাচ্ছেন দুই অভিনেতা। শুরু করেছিলেন বরোদা দিয়ে। তার পর দিল্লির পিভিআরে আমির খান এসে মাতিয়ে দিয়েছিলেন আরআরআর ছবির সাংবাদিক সম্মেলন। ঠিক তার পরের দিনই জয়পুরের হাওয়া মহল, অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে ঘুরে এসে মঙ্গলবার কলকাতায় হাওয়া ব্রিজে দেখা দিলেন তিন মূর্তি। হাতে একটুও সময় নেই আর। সন্ধ্যে বেলায় পৌঁছে যেতে হবে কাশীর সন্ধ্যা আরতির সমারোহে। এ ভাবেই ৩০০ কোটির চেয়েও বেশি দামি আরআরআর ছবির প্রচারের পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন স্বয়ং পরিচালক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy