(বাঁ দিক থেকে) সৃজিত মুখোপাধ্যায়, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, অনিন্দিতা সর্বাধিকারী, কিঞ্জল নন্দ। গ্রাফিক্স: সনৎ সিংহ।
সামাজিক বিপর্যয়ে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখেন না বিনোদন দুনিয়ার সংবেদনশীল অভিনেতা, পরিচালকেরা। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনই হোক বা নির্ভয়াকাণ্ড— প্রতিবাদে পথে নেমেছেন বাংলা অভিনয় দুনিয়ার বিদগ্ধজন। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনাতেও তাঁরা সরব। তাঁদের প্রতিবাদ সমাজমাধ্যমে আছড়ে পড়েছে। তালিকায় প্রযোজক-অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, পরিচালক অনিন্দিতা সর্বাধিকারী, অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র, চিকিৎসক-অভিনেতা কিঞ্জল নন্দ প্রমুখ।
‘বিচার চাই’ কথাটি জ্বলজ্বল করছে প্রত্যেকের সমাজমাধ্যমে। সৃজিত লিখেছেন, “আমার শহর কুণ্ঠিত বড়, ক্ষমা করো তুমি মেয়ে; পুরুষ বলেই গাইছি এ গান, শুধু মার্জনা চেয়ে...”। স্বস্তিকার আর্তি, “ভাষা নেই নিন্দের। এই দোষীদের অন্তত সাজা হোক। এ বার আর মেয়েটার দোষ, সে ভুল ভাবে, ভুল সময়ে, ভুল জায়গায় ছিল বলে তার দিকে আঙুল তুলব না।” তার পরেই তাঁর প্রশ্ন, “একটা হাসপাতালেও মেয়েরা নিরাপদ নয়? যাব কোথায়?” পরিচালক অনিন্দিতা সদ্য হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সময় চিকিৎসকদের সঠিক তৎপরতায় তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাঁর বার্তা, “চিকিৎসকেরা যদি আপনাদের অসময়ের ভরসা হন, আপনারাও চিকিৎসকদের অসময়ের ভরসা।” তিনি এক চিকিৎসকের পোস্ট ভাগ করে নিয়ে লিখেছেন, “একটা শরীরকে ভোগ করে মেরে ফেলার এই যে পৈশাচিক আনন্দ, এটা শেষ হতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই! কঠিন শাস্তি!”
প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রযোজক-অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা, অভিনেত্রী রূপাঞ্জনাও। ঋতুপর্ণা ধিক্কার জানিয়েছেন তাঁর পোস্টে। লিখেছেন, “আর কত আঘাত পাবে পরিবারগুলো? কলেজ, হাসপাতাল কোথাও কি নিরাপত্তা নেই ? এই ভাবে মৃত্যু? কেন? কী এর ব্যাখ্যা? হতাশ আমরা ...ক্ষুব্ধ... এত অন্যায় কেন ?” তাঁর হাহাকার, “নিষ্পাপ মেয়েটি আর ফিরবে না! কী দোষ ছিল মেয়েটির? এক জন চিকিৎসকে হারালাম... এত হিংস্রতা কেন?” রূপাঞ্জনার বার্তা, “আমরা আগেই হার মেনে নিই বলেই আমাদের লড়াই ছোট করে দেখা হয়! এখনই হার মানার সময় এসে গিয়েছে কি? বিচার চাই! মানে, এ বার বিচার চাই। অপরাধীদের কঠিন শাস্তি চাই, যা নজির হয়ে থাকবে।” শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে এই অঘটন নিয়ে কথা বলেছিলেন চিকিৎসক-অভিনেতা কিঞ্জল। তিনিও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। জানান, ভয় পাচ্ছেন স্ত্রীকে নিয়ে। আরও ভয় পাচ্ছেন, সদ্যোজাত মেয়েকে নিয়ে। বলেন, “আমার মেয়েও তো বড় হবে। ওর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে।” তা হলে কি মেয়েরা এই শহরে নিরাপদ নন? জবাবে কিঞ্জল বলেছেন, “মেয়েরা তো নিরাপদ নন-ই। এই ঘটনার পরে মনে হচ্ছে, কেউই আর শহরে নিরাপদে নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy